ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

লালমনিরহাটে ধরলায় স্পার নির্মাণে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২০ জুন ২০১৫

লালমনিরহাটে ধরলায় স্পার নির্মাণে অনিয়ম

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ১৯ জুন ॥ জেলা সদরের মোগলহাট ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামে ধরলা নদীর ডান তীর সংরক্ষণের নামে নামকাওয়াস্তে ৫টি বাঁশের স্পার তৈরি করে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, ধরলা নদীটি আন্তর্জাতিক নদী। যৌথ নদী কমিশনের উদ্যোগে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ধরলা নদীর বামতীরে বাঁধ নির্মাণের কাজ বর্তমান সরকার শুরু করেছে। দুটি প্রজেক্ট বর্তমানে চালু আছে। ইতোমধ্যে জিও টেক্সটাইল দিয়ে কংক্রিটের ব্লক ফেলে প্রায় এক কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ফসলের জমি, বিজিবি ক্যাম্পসহ কয়েকশ’ বসতভিটা রক্ষা পেয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের ভূখ- নদী ভাঙ্গনের হাত হতে রক্ষা পেয়েছে। ধরলা নদীর ডান তীর ভেঙ্গে গিয়ে বাম তীর ভারতের ভূখ-ে বিশাল বিশাল চর পড়ছে। আন্তর্জাতিক এই নদীর ডান তীর রক্ষার নামে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প হতে প্রায় ৪-৫ শ’ ফুট দূরে তথাকথিত নদী ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রামের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে কয়েকটি বাঁশের স্পার নামকাওয়াস্তে নির্মাণ করে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। রংপুরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লালমনিরহাটের জনৈক ঠিকাদারকে সাব কন্ট্রাকে কাজটি দিয়েছে। লালমনিরহাটের সাব কন্ট্রাকটর স্থানীয় এক ক্ষমতাসীন দলের নেতাকে কাজটি সাব কন্ট্রাকে দিয়েছে। স্থানীয় নেতা আবার ওয়ার্ডের কয়েক জন নেতাকে সাব কন্ট্রাকে কাজটি দিয়েছে। কয়েকবার কাজটি হাতবদল হয়েছে মৌখিক চুক্তিতে। ফলে কাজের কাজ হয়নি। বাঁশের স্পার নির্মাণের কাজটি সিডিউলে রয়েছে, গজারিয়া, শালকাঠের বিম্ব দিয়ে ৩০-৪০ ফিট পাইলিং করে বসিয়ে স্পার নির্মাণ করতে হবে। স্পারের ফাঁকে বালু ভর্তি বস্তা দেয়ার কথা কিন্তু দেয়া হয়নি। শাল ও গজারিয়া কাঠের খুঁটির বদলে বাঁশ ও ইউক্লিপটাস গাছের খুঁটি দেয়া হয়েছে। পাইলিংয়ের ওয়েট মেশিন দিয়ে খুঁটি না বসিয়ে, হাত দিয়ে ২-৩ ফিট বসিয়েছে। বিল করেছে ৩০-৪০ ফিট মাটির নিচে পুঁতিয়ে রাখার। এতে সামান্য বৃষ্টির পানিতে ভাঙ্গন রক্ষার জন্য তৈরি স্পার নিজেই ভেঙ্গে গেছে। নদীর তীর রক্ষায় কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেনি। স্পার তৈরি করার কাজে নিয়োজিত শ্রমিক মঞ্জু মিয়া (৪৫) জানান, দিন হাজিরায় স্পারে বাঁশের খুঁটি পুতার কাজ করেছি। স্পারে ২-৩ ফিট করে মাটির নিচে খুঁটি পোতা হয়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মোখলেছার রহমান জানান, এই কাজের তত্ত্বাবধানে থাকা ওয়ার্ক এ্যাসিটে বদলি হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে কাকে এই কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জানা নেই। তবে কোন না কোন কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছে। মোগলহাটের বাঁশের স্পার নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিল স্থগিত করে রাখা হয়েছে। বরাদ্দকৃত অর্থে ঠিকাদার বিল দায়ের করতে পারে। সরেজমিনে বরাদ্দকৃত অর্থের বিপরীতে যতটুকু কাজ হয়েছে। ঠিকাদারকে ততটুকু কাজের বিল দেয়া হবে। কাজটিতে ৫-৬ লাখ টাকা বিল হতে পারে।
×