ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রমজানে পণ্যমূল্য

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২০ জুন ২০১৫

রমজানে পণ্যমূল্য

রোজার মাসে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া যেন অনেকটাই নিয়মে পরিণত হয়েছে। রমজানে রোজাদাররা সেহরি ও ইফতারিতে ভালমন্দ খেয়ে থাকেন। এই সময় বিশেষ কয়েকটি খাদ্যপণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা একটি চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সুযোগটি কাজে লাগায় এক শ্রেণীর মুনাফালোভী ব্যবসায়ী। তারা খাদ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান তাদের কাছে হয়ে দাঁড়ায় অতিরিক্ত মুনাফার মাস। পণ্যমূল্য বাড়লে সে ব্যয় মেটাতে গিয়ে বাজারে টান পড়ে সাধারণ মানুষের। সরকার বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত। তাই এ অবস্থা মোকাবেলার প্রস্তুতিও গ্রহণ করে থাকে। তবে প্রতিযোগিতামূলক বাজারের দরের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণে সরকারে পক্ষে সর্বক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখা সম্ভব নয়। প্রয়োজন বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তোলা। সেজন্য সরকারের ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) নামক বাণিজ্যিক সংস্থা রয়েছে। টিসিবি ভোগ্যপণ্য মজুদের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে। রমজান মাসকে সামনে রেখে আগাম বিশেষ প্রস্তুতিও নেয়া হয়। এ বছর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভাল। গত মাসে কমেছে মূল্যস্ফীতি। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের দামও নিম্নমুখী। গত কয়েক বছরে শাক-সবজি, মাছ ও মাংসের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনও বেড়েছে কয়েকগুণ। প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটেও ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ানোর কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। গরিব মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে টিসিবি বাজারের চেয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে। এত সবের পরও ছোলা, ভোজ্যতেল, ডাল এবং কোন কোন ক্ষেত্রে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাচ্ছে। আর এজন্য ভোগ্যপণ্যের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরাই দায়ী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশে এখন চাহিদার প্রায় দেড়গুণ পণ্য মজুদ রয়েছে। পণ্যের দাম যাতে বাড়তে না পারে সেজন্য সরকারের বাজার মনিটরিং টিমও সক্রিয় রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, এরপরও পণ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টা হলে কঠোর অবস্থান নেবে সরকার। শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই বলেছে, দেশে ভোগ্যপণ্যের কোন সঙ্কট নেই, তাই দামও বাড়বে না। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ পর্যাপ্ত হলে পণ্যমূল্য বাড়ে না। কোন কোন পণ্যের তাই কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করা হয় শুধু দাম বাড়ানোর পরিস্থিতি তৈরি করতেই। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে দ্রব্যপণ্য মজুত করে রেখে বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির প্রবণতা অবশ্যই রোধ করতে হবে। মানুষের প্রত্যাশা রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যা কিছু প্রয়োজন সরকার তার সব ব্যবস্থাই করবে। বাজার এখনও মোটামুটি স্বাভাবিক। তবে অসাধু সিন্ডিকেট গড়ে তুলে একচেটিয়াভাবে যাতে ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য বাড়াতে না পারে সে ব্যাপারে সরকারকে সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রাখতে হবে।
×