ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কোপা আমেরিকা ফুটবল ;###;উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচে বিশ্বকাপে পরাজয়ের জ্বালা জুড়িয়েছেন রড্রিগুয়েজরা ;###;টানা ১১ জয়ের পর হার ;###;পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ;###;ব্রাজিল -১ কলম্বিয়া

ব্রাজিলকে মাটিতে নামিয়ে কলম্বিয়ার প্রতিশোধ

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ১৯ জুন ২০১৫

ব্রাজিলকে মাটিতে নামিয়ে কলম্বিয়ার প্রতিশোধ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অপ্রতিরোধ্য ব্রাজিলের জয়রথ থেমেছে অবশেষে। ২০১৪ বিশ্বকাপের পর টানা ১১ ম্যাচ জিতে আকাশে উড়ছিল রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। সেই অজেয় ব্রাজিলকে কোপা আমেরিকা ফুটবলে ১-০ গোলে হারিয়ে মাটিতে নামিয়েছে কলম্বিয়া। চিলির সান্টিয়াগোতে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকালে ‘সি’ গ্রুপের উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে কলম্বিয়ার হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন জেইসন মুরিলো। এই জয়ে সর্বশেষ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ২-১ গোলের হারের মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে জোশে প্যাকারম্যানের দল। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভেনিজুয়েলার কাছে হার মানা কলম্বিয়ার এই জয়ে শেষ আটে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। অন্যদিকে বাজে হারের কারণে ব্রাজিলের আসরের গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ার শঙ্কা জেগেছে! কেননা ম্যাচে লালকার্ড দেখে নিষিদ্ধ হয়েছেন দলটির অধিনায়ক নেইমার। যে কারণে গ্রুপের শেষ ম্যাচত বটেই, গ্রুপ পর্ব উতরালে নকআউট পর্বেও নিষিদ্ধ থাকতে পারেন বার্সিলোনা ফরোয়ার্ড। নেইমারবিহীন ব্রাজিল তাই কি করে সেদিকে দৃষ্টি সবার। আগের এগারো ম্যাচে জয়ের রসদ ও কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে হৃষ্টপুষ্ট সাফল্যের খতিয়ান নিয়েই খেলতে নেমেছিল ব্রাজিল। কিন্তু ম্যাচে সেলেসাওদের সেই সাম্বা ছন্দ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পুরো ম্যাচে প্রাণভোমরা নেইমার ভাল খেলেননি। দল হিসেবেও ভাল খেলতে পারেনি ব্রাজিল। শুরুর দিকে কলম্বিয়া কিছুটা রক্ষণাত্মক হয়ে প্রতিপক্ষের আক্রমণ রোখায় মনযোগী ছিল। শুরু থেকেই তাদের লক্ষ্য ছিল, নেইমারকে বোতলবন্দী করা। আর সেটাতে তারা শতভাগ সফল হয়েছে। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে জেইসন মুরিলোর গোলে এগিয়ে যায় কলম্বিয়া। ব্রাজিল রক্ষণভাগের অমার্জনীয় ব্যর্থতায় গোলটি হয়। শেষ পর্যন্ত আর এই গোল পরিশোধ করতে পারেনি আটবারের কোপা চ্যাম্পিয়নরা। অথচ প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই সমতা ফেরানোর সুযাগ ছিল কার্লোস দুঙ্গার দলের। সুযোগটা পেয়েছিলেন দলনেতা নেইমার। দানি আলভেজের ক্রসে নেইমারের হেড অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে ফিরিয়ে দেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ডেভিড অসপিনা। বিরতির পর গোল পরিশোধে আরও মরিয়া প্রচেষ্টা শাণাতে থাকে ব্রাজিল। কিন্তু গোল করার মতো তেমন কার্যকরী সুযোগই সৃষ্টি করতে পারেননি সেলেসাও তারকারা। তবে ম্যাচের ৫৮ মিনিটে রবার্টো ফিরমিনো ফাঁকা পোস্টে যে সুযোগটি হাতছাড়া করেন, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। সুযোগসন্ধানী গোল ছাড়া কলম্বিয়াও কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু আর গোলের দেখা পায়নি। তবে কাজের কাজ হয়েছে ওই এক গোলেই। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পর মাথা গরম করে ফেলেন নেইমার। দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে বিরোধের এক পর্যায়ে নেইমার উত্তেজিত হয়ে কলম্বিয়ার গোলদাতা জেইসন মুরিলোকে মাথা দিয়ে আঘাত করেন। ফলে রেফারি তাকে লালকার্ড দেখান। একই কারণে লালকার্ড দেখেন কলম্বিয়ার বদলি স্ট্রাইকার কার্লোস বাক্কাও। অবশ্য ম্যাচের প্রথমার্ধেই বল হাত দিয়ে ধরায় হলুদ কার্ড দেখেছিলেন নেইমার। যে কারণে দুই ম্যাচে দুটি হলুদ কার্ড পাওয়ায় আগেই ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে গ্রুপের শেষ ম্যাচে না খেলা নিশ্চিত হয়েছিল ব্রাজিল অধিনায়কের। ম্যাচ শেষে অহেতুক বিবাদে জড়িয়ে সরাসরি লালকার্ড দেখে নিজের এবং ব্রাজিলের কোপা স্বপ্নই ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন তিনি। খেলার বাইরে সংঘর্ষে জড়ানোয় নেইমারের শাস্তিও হতে পারে বেশ বড়সড়। ম্যাচ শেষে গোটা ব্রাজিল দল চিলির রেফারি এনরিকে ওসেসের সমালোচনা করেন। রেফারির সমালোচনা করে দানি আলভেজ বলেন, রেফারির অবশ্যই মাথায় থাকা উচিত যে তারাই ম্যাচের সবকিছু নয়। তাদের অবশ্যই ম্যাচ নিয়ন্ত্রণের জন্যই সেখানে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকায় আগেও আমাদের সঙ্গে এমন হয়েছে, এখানে সবাই ব্রাজিলের বিরুদ্ধে। নেইমারকে উত্তেজিত করার পেছনে কলম্বিয়ান খেলোয়াড়দেরও সমালোচনা করেছেন আলভেজ। বিশ্বকাপের শেষ আটের লড়াইয়ে এই কলয়িম্বার বিরুদ্ধেই নেইমার পিঠে আঘাত পেয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েছিলের। এরপর দীর্ঘদিন তিনি মাঠের বাইরেও ছিলেন। এ প্রসঙ্গে আলভেজ বলেন, তারা নেইমারের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানে, পুরো ম্যাচেই তারা সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। তারা তাকে উত্তেজিত ও নার্ভাস করার চেষ্টা করেছে। তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। কলম্বিয়ার তারকা জেমস রড্রিগুয়েজ বলেন, আমাদের সুনির্দিষ্ট গেম প্ল্যান ছিল। সেটা কাজে লেগেছে। আগের ম্যাচে আমরা ভাল খেলেও ভেনিজুয়েলার কাছে হেরেছিলাম। এই ম্যাচেও আমরা ভাল খেলে ব্রাজিলকে হারিয়েছি। ফুটবলে এমনই হয়।
×