ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মোদির সঙ্গে সাক্ষাত সম্ভাবনা নিয়ে খালেদার বক্তব্য অসত্য ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৭ জুন ২০১৫

মোদির সঙ্গে সাক্ষাত সম্ভাবনা নিয়ে খালেদার বক্তব্য অসত্য ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাত করা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া নাৎসি ও গোয়েবলসীয় কায়দায় মিথ্যাচার করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম মাহমুদ আলী। ভারত থেকে প্রকাশিত সানডে গার্ডিয়ানে প্রদত্ত সাক্ষাতকারে তাকে নিয়ে খালেদা জিয়ার মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া বরবরই নাৎসি ও গোয়েবলসীয় মিথ্যাচারের একনিষ্ঠ অনুসারী। একটি মিথ্যাকে বার বার বললেই সত্য হয়ে যায়। ওই পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাতকালে খালেদা জিয়া বলেছেন, আমি নাকি মোদির সঙ্গে তার (খালেদা জিয়া) সাক্ষাতকারের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছি। যা সম্পূর্ণ অসত্য ও মিথ্যা। খালেদা জিয়ার এই মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাই। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে প্রদত্ত বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, গত ৫ জুন আমার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপিপন্থী এক সাংবাদিক আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে মোদির সাক্ষাত হবে কি না? জবাবে আমি বলেছিলাম এই প্রশ্নের উত্তরের কোন সুযোগ এখানে আছে বলে মনে হয় না। অথচ আমার বক্তব্যে সম্পূর্ণ বিকৃত করে দৈনিক ইত্তেফাকে রিপোর্ট ছাপা হয়। ওই রিপোর্টে লেখা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় আমি খালেদা জিয়ার সাক্ষাতের সম্ভাবনা নাকি নাকচ করে দিয়েছি। তিনি বলেন, এরপর ৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে ওই পত্রিকার কূটনৈতিক প্রতিবেদককে এ রিপোর্ট সম্পর্কে কথা বললে ওই রিপোর্টার বলেন, ‘এটা রিপোর্ট আমি করিনি, আমাদের বিএনপি বিটের এক কলিগ করেছেন।’ তিনি বলেন, এরপর ৮ জুন মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে মন্ত্রিসভা। এরপরেও ৯ জুন ওই প্রতিবেদকের আরও একটি রিপোর্ট বের হয়। সেখানে বলা হয় খালেদা জিয়ার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হচ্ছে না বলে গত শুক্রবার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এমন মন্তব্য নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সমালোচনার মুখে পড়েন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নজরে এলে এর প্রতিবাদ পাঠানো হয়। প্রতিবাদটিও আংশিকভাবে ছাপানো হয়। আমি দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই, ৯ জুন মন্ত্রিসভার বৈঠকে মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়ার স্বাক্ষাতের বিষয়ে কোন আলোচনাই হয়নি। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন একটি ব্যানার আইটেম করে। এরপর ১৫ জুন সকালে মোহনা টেলিভিশনে সংবাদ প্রতিদিন নামে একটি অনুষ্ঠানে দৈনিক যুগান্তরের রিপোর্টার মাসুদ করিম যিনি ডিক্যাবের সভাপতিও। অনুষ্ঠানে তিনি (মাসুদুল করিম) বলেছেন, আমি ৫ জুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে ছিলাম। সেই ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, খালেদা জিয়া মোদির বৈঠক নিয়ে আলোচনার সুযোগ এখানে আছে বলে মনে হয় না। এ প্রসঙ্গে ২০১৩ সালে বিজয় দিবসের আগে ১৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া একটি বাণীর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ওই বাণীতে খালেদা জিয়া বলেনÑ “১৯৭১ সালে দেশ শত্রুমুক্ত হলেও অপশক্তির নীলনক্সা বাস্তবায়নে শত্রুদের চক্রান্ত আজও বিদ্যমান’। আধিপত্যবাদী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌম শক্তিকে গ্রাস করে একটি পদানত জাতিকে উন্নত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত। এই অপশক্তি নীলনক্সা বাস্তবায়নে এদেশেরই একটি চিহ্নিত মহল কাজ করছে।” পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এমনই ছিল বেগম জিয়ার বাণী। প্রশ্ন তার কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, এই আধিপত্যবাদী শক্তির নাম কী? আর কথিত শত্রু কারা? হায় বেগম জিয়া, হায় বিএনপি! আর কত মিথ্যাচার করবেন? ছি, ছি, ছি খালেদা জিয়া। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার নায়কদের গ্রেফতারের দাবি শামিম ওসমানের ॥ এর আগে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার প্রসঙ্গ টেনে পয়েন্ট অব অর্ডারে নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেন, ওই ভয়াল গ্রেনেড হামলায় আমার কয়েকজন কর্মী প্রাণ হারায়। তাদের পরিবারের সদস্যরা আমাকে জিজ্ঞেস করে আমরা কি বিচার পাবো না? আমি তাদের কোন উত্তর দিতে পারি না। আপনার (স্পীকার) মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, কবে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনার পেছনের খলনায়িকা কারা? কবে তাদের খুঁজে বের করা যাবে এবং বিচার হবে।
×