ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এ বর্বরতার শেষ কোথায়

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১৬ জুন ২০১৫

এ বর্বরতার শেষ কোথায়

গত এক মাসে রাজধানীতে পর পর কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা গণমাধ্যমে আলোচিত হয়েছে। বিশেষ করে গণধর্ষণের ঘটনা। চলন্ত মাইক্রোবাসে গারো তরুণী, নারী পুলিশ সদস্যকে এএসআইয়ের নেতৃত্বে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে ব্যাপক হৈচৈয়ের মধ্যে আবারও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটল রামপুরায়। এবার গণধর্ষণের শিকার হলেন ২০ বছর বয়সী এক গৃহবধূ। খালার বাসায় বেড়াতে এসে এ পাশবিকতার শিকার হন তিনি। সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাটি নারী পুলিশের ধর্ষণের বিষয়টি। ধর্ষিতার সাবেক স্বামী পুলিশেরই এএসআই। তার নেতৃত্বে এই গণধর্ষণটি ঘটে। ঘটনা আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আবারও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে, পুলিশ বিভাগে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে এ ধরনের ধিকৃতদের চিহ্নিত করা হোক। প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, গত বুধবার বাচ্চাকে দেখার কথা বলে বাসায় ডেকে নিয়ে আটকে রেখে পুলিশের ওই নারী কনস্টেবলকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে পুলিশ কর্মকর্তা সাবেক স্বামী ও তার তিন বন্ধু। খিলগাঁও থানার তিলপাপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বুধ ও বৃহস্পতিবার এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে বাসার মালিকের সহায়তায় উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সার্ভিসে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। ধর্ষণের মতো সামাজিক অপরাধের বিস্তাররোধ করতে হলে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করা জরুরী। সমাজকে মানুষের বসবাসযোগ্য রাখতে হলে এই অপরাধ প্রবণতাকে রোধ করার বিকল্প নেই। কোন কোন ধষর্ণের ঘটনায় মামলা হয়েছে কিন্তু মামলাগুলোর তদন্তে বিশেষ কোন অগ্রগতি নেই। দুর্বৃত্তরা যাতে কোনভাবেই আইনের ফাক-ফোকর গলিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। মনে রাখা দরকার, অপরাধের শাস্তি না হওয়া অপরাধ বিস্তারের অন্যতম প্রধান কারণ। ধর্ষণজনিত অপরাধ বৃদ্ধির পেছনে একই কারণ বিদ্যমান। একই সঙ্গে সচেতন নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে অপরাধের বিরুদ্ধে। গড়ে তুলতে হবে শক্ত প্রতিরোধ। বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতির দিকটি অনন্য উদাহরণ। সেই দেশে নারীর প্রতি এমন আচরণ কাম্য হতে পারে না। আজ ঘর থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাজপথ, যানবাহন এমনকি অফিস-আদালতেও নারী যে নিরাপদ নয়, যেন সেই সত্যটিই সামনে চলে আসছে। এই ক্ষেত্রে আইনের সঠিক প্রয়োগ না হওয়ায় এমন ঘটনা বাড়ছে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ ঘটলে নারী নির্যাতনের ঘটনা এতটা আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছাত না। ঘটনাটার রেশ থামানোর জন্য যেটা আগে করতে হবে সেটা হলো আইনের যথাযথ প্রয়োগ। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমাজ থেকে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ প্রবণতা দূর করা সম্ভব।
×