ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিধ্বস্ত উইন্ডিজ, সন্তুষ্ট ক্লার্ক

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১৬ জুন ২০১৫

বিধ্বস্ত উইন্ডিজ, সন্তুষ্ট ক্লার্ক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটে পেশাদারিত্বের চরম উদাহরণ অস্ট্রেলিয়া। যতই সাফল্য আসুক কখনই আনন্দে আত্মহারা হন না দেশটির খেলোয়াড়রা। প্রথম টেস্টে উইন্ডিজকে উড়িয়ে দেয়ার পরও তাই অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের কণ্ঠে ছিল সতর্কবার্তা। এবার স্বাগতিকদের ২-০তে হোয়াইটওয়াশ করে ফ্র্যাঙ্কওরেল ট্রফি পকেটে পুড়ে ‘ছোট্ট’ করেই নিজের সন্তোষের কথা জানালেন বিশ্বজয়ী সেনাপতি। জ্যামাইকায় সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ক্যারিবীয়দের ২৭৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হারায় ওয়ানডের চ্যাম্পিয়নরা। ১ রানের জন্য ডাবল সেঞ্চুরি না পেলেও ম্যাচসেরা স্টিভেন স্মিথ। দারুণ বোলিংয়ে সিরিজসেরা জস হ্যাজলউড। অন্যদিকে প্রথম টেস্টে ৯ উইকেটের বড় হারের পর এমন লজ্জায় যারপরনাই হতাশ উইন্ডিজ অধিনায়ক দিনেশ রামদিন। ‘বিদেশের মাটিতে টেস্ট জয় সবসময় আনন্দের। সিরিজজুড়ে ছেলেরা চমৎকার খেলেছে। এই সাফল্য আমাদের আসন্ন এ্যাশেজে ভাল করতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।’ বলেন ক্লার্ক। উল্লেখ্য, কার্ডিফে ৮ জুলাই প্রথম টেস্ট দিয়ে শুরু ঐতিহ্যের এ্যাশেজ সিরিজ। জ্যামাইকা টেস্টে বোলারদের বিশেষ কৃতিত্ব দিয়ে তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটা দারুণ বিষয় যে বোলাররা প্রতিপক্ষের ৪০ উইকেট তুলে নিয়ে কাজটা সহজ করে দিয়েছে। ব্যাট হাতে স্মিথ ছিল নিজের মতো ধারাবাহিক আর প্রাণবন্ত।’ স্মিথ ম্যাচসেরা হলেও দ্বিতীয় টেস্টে অসিদের সাফল্যের রূপকার বোলাররা। যেখানে ‘আউটস্ট্যান্ডিং’ পারফর্ম করছেন জস হ্যাজলউড ও মিচেল স্টার্ক। দুই ইনিংসেই প্রতিপক্ষকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছেন তারা। ৩৯২ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৪৪ রানে অলআউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অসি পেস তোপের মুখে সর্বোচ্চ ২৯ রান অধিনায়ক রামদিনের। বিরাস্বামী পরমল করেন অপরাজিত ২৩। তিন ব্যাটসম্যান ০ রানে সাজঘরে ফেরেন। স্টার্ক ৩, হ্যাজলউড, লেয়ন ও মিচেল জনসন নেন ২টি করে উইকেট। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার ৩৯৯ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ক্যারিবীয়রা ২২০ রান করে মূলত জেসন হোল্ডারের কল্যাণে। আট নম্বরে নেমে অপরাজিত ৮২ রান করেন এই অলরাউন্ডার। আর ২ উইকেটে ২১২ রানে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে অসিরা। বিশ্বের অষ্টম ও তৃতীয় অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে প্রথম ইনিংসে ১৯৯ রানে আউট হন ফর্মের তুঙ্গে থাকা স্মিথ। দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ৫৪ রান করে হন ম্যাচসেরা। ধারাবাহিক নৈপুণ্যে লঙ্কান লিজেন্ড কুমার সাঙ্গাকারাকে পেছনে ফেলে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে ব্যাটসম্যানদের তালিকায় এক নম্বরে উঠে এসেছেন অসি-সেনসেশন। প্রথম ইনিংসে প্রথম দিনই সেঞ্চুরির পথে ২০১৪-১৫ টানা দুই বছর মিলিয়ে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ২ হাজার বা তার বেশি রানের অনন্য নাজির স্থাপন করেন স্মিথ। ব্যক্তিগত ১৯৯ রানে দলের নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বাগতিক পেসার জেরোমে টেইলরের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি! ৩৬১ বলে ২১ চার ও ২ ছক্কায় এ রান করেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা প্রতিভাবান উইলোবাজ। ১ রানের জন্য ডাবল সেঞ্চুরি না পাওয়া অপর ৭ ক্রিকেটার পাকিস্তানের মুদাসসর নজর, ইউনুস খান, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু এলিয়ট, স্টিভ ওয়াহ, ভারতের মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, শ্রীলঙ্কার সনাথ জয়সুরিয়া ও ইংল্যান্ডের ইয়ান বেল। এর আগে ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডকে ১-১এ রুখে দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছিল ক্যারিবীয়রা। কিন্তু এবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে ডুবতে হলো হোয়াইটওয়াশের লজ্জায়। উইন্ডিজ অধিনায়ক রামদিনের প্রতিক্রিয়া, ‘এমন হার সত্যি হতাশার। আমরা মোটেই ভাল ব্যাটিং করিনি। যদিও দলে এক ঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার নেয়া হয়েছে। আশা করছি এ থেকে পাওয়া শিক্ষাটা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।’ স্কোর ॥ অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ৩৯৯/১০ (১২৬.৫ ওভার; স্মিথ ১৯৯, ক্লার্ক ৪৭, ভোগস ৩৭, ওয়াটসন ২৫, হ্যাজলউড ২৪, হ্যাডিন ২২; টেইলর ৬/৪৭, হোল্ডার ২/৬৪, রোচ ১/১১৩, পারমল ১/১২৪) ও দ্বিতীয় ইনিংস ২১২/২ ডিক্লে. (৬৫ ওভার; মার্শ ৬৯, ওয়ার্নার ৬২, স্মিথ ৫৪*, ক্লার্ক ১৪*; রোচ ১/২৬, পারমল ১/৮৩) ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস ২২০/১০ (৫৯.৫ ওভার; হোল্ডার ৮২*, ব্ল্যাকউড ৫১, হোপ ২৬, ব্রাভো ১৪, ডরিখ ১৩; হ্যাজলউড ৫/৩৮, লেয়ন ৩/৫৫, স্টার্ক ১/৫০) ও দ্বিতীয় ইনিংস ১১৪/১০ (৪২ ওভার; রামদিন ২৯, পারমল ২৩*, হোপ ১৬, ব্রাভো ১১; স্টার্ক ৩/৩৪, লেয়ন ২/১২, হ্যাজলউড ২/১৮, জনসন ২/২৩) ফল ॥ অস্ট্রেলিয়া ২৭৭ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ স্মিথ (অস্ট্রেলিয়া) সিরিজ ॥ দুই টেস্টের সিরিজ অস্ট্রেলিয়া ২-০তে জয়ী। সিরিজসেরা ॥ হ্যাজলউড (অস্ট্রেলিয়া)।
×