ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আন্তর্জাতিক প্রীতি ফুটবল, গোলবন্যার ম্যাচে বেলজিয়ামের কাছে ফ্রান্সের হার, ক্রোয়েশিয়ার বড় জয়, ইংল্যান্ডের ড্র

নেইমার ছাড়াই ব্রাজিলের জয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৯ জুন ২০১৫

নেইমার ছাড়াই ব্রাজিলের জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অপ্রতিরোধ্য জয়যাত্রা অব্যাহত রেখেছে রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ২০১৪ সালে নিজ দেশে বিশ্বকাপ জিততে ব্যর্থ হওয়া দেশটি বিশ্বকাপ পরবর্তী সব ম্যাচেই জয় পেয়েছে। রবিবার রাতে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মেক্সিকোকে ২-০ গোলে হারায় ব্রাজিল। নিজ দেশের সাওপাওলোতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে সেলেসাওদের হয়ে গোল করেন লিভারপুল মিডফিল্ডার ফিলিপ কাউটিনহো ও ফরোয়ার্ড দিয়াগো টারডেল্লি। বিশ্বকাপের পর এই প্রথম নিজ দেশে খেলল ব্রাজিল। এই নিয়ে টানা নয় ম্যাচে জয় পেল কার্লোস দুঙ্গার দল। অধিনায়ক নেইমারকে ছাড়া খেললেও জয় পেতে সমস্যা হয়নি সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে বার্সিলোনার হয়ে খেলার কারণে এই ম্যাচে ছিলেন না নেইমার। এদিকে পরশু রাতের অন্যান্য প্রীতি ম্যাচে জয় পেয়েছে বেলজিয়াম ও ক্রোয়েশিয়া। ড্র করেছে ইংল্যান্ড। ঘরের মাঠে ব্রাজিলের কাছে হারের পর আবারও হেরেছে ফ্রান্স। গোলবন্যার ম্যাচে ফরাসীদের ৪-৩ গোলে হারায় বেলজিয়াম। ক্রোয়েশিয়া ৪-০ গোলে পরাজিত করে জিব্রাল্টারকে। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে ইংল্যান্ড। নিজ দেশের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার ব্যথা এখনও কাদায় ব্রাজিলকে। সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলের লজ্জার পর তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে হল্যান্ডের কাছে তিন গোল হজম করতে হয়েছিল। সব মিলিয়ে শেষ দুই ম্যাচে দশ গোল জমা পড়ে ব্রাজিলের জালে! বিষয়টি অবিশ্বাস্যই লাগে। সেই ব্রাজিলকে কি দুর্দান্তভাবেই না টেনে তুলেছেন দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়া কোচ দুঙ্গা। সাবেক বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়কের জাদুমন্ত্রে পাল্টে গেছে সেলেসাওরা। অধিনায়ক ও সেরা তারকা নেইমারকে ছাড়াই মেক্সিকো হারিয়ে ব্রাজিল জানিয়ে দিয়েছে আসন্ন কোপা আমেরিকা জিততে তারা প্রস্তুত। ম্যাচের শুরু থেকেই অতিথি মেক্সিকোর ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে ব্রাজিল। দুটো গোলও আসে প্রথমার্ধে। ২৮ মিনিটে দলকে প্রথম এগিয়ে নেন ফিলিপ কাউটিনহো। লিভারপুলের ২২ বছর বয়সী তরুণ মিডফিল্ডারের ব্রাজিলের বিখ্যাত হলুদ জার্সি গায়ে এটি প্রথম গোল। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করেন দিয়াগো টারদেল্লি। গত অক্টোবরে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে নজর কেড়েছিলেন এই ফরোয়ার্ড। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ আরেকবার রেখেছেন। বিরতির পর আর কোন গোল না হলে দুই গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল। লুইস ফিলিপ সোলারির অধীনে বিশ্বকাপে সাত ম্যাচে ১৪ গোল হজম করা ব্রাাজিল দুঙ্গার দ্বিতীয় মেয়াদে নয় ম্যাচে গোল খেয়েছে মাত্র দুটি। এ সময় তারা প্রতিপক্ষের জালে গোল করেছে ২০টি। এ থেকেই প্রমাণ হচ্ছে দুঙ্গার বিরুদ্ধে যে রক্ষণাত্মক কৌশলে খেলানোর অপবাদ তা ঠিক নয়। ব্রাজিলের কোপা আমেরিকার দল থেকে ইনজুরির কারণে বাদ পড়েছেন অস্কার, ডেভিড লুইজ, লুইস গুস্তাভোরা। এর পরও একাদশ নির্বাচন নিয়ে মধুর সমস্যায় পড়েছেন ব্রাজিল কোচ। মেক্সিকোকে হারানোর পর দুঙ্গা বলেন, আমাদের জন্য ম্যাচটা খুবই ফলপ্রসূ হলো। নিয়মিত খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতিতে যারা সুযোগ পেয়েছে, সেই সুযোগটা তারা খুব ভালভাবে কাজে লাগিয়েছে। এতে আমার কাজটা কঠিন হয়ে গেল। ব্যক্তিগত নৈপুণ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের সমষ্টিতেই একটা দল ভাল হয়ে ওঠে। দলের সবাই একাদশে জায়গা পেতে মরিয়া। দুঙ্গা এই বিষয়টিকে দেখছেন ইতিবাচক হিসেবে। বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ব্যাপারটা ব্রাজিলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দলটা দারুণ উজ্জীবিত। অনুশীলনে ওরা অনেক পরিশ্রম করে। সমর্থকদের মন জয় করতে আমাদের জিততেই হবে। সমর্থকদের জন্য খেলোয়াড়রা নিজেদের উজাড় করে দিতে চায়। আমরা সঠিক পথেই আছি। এখন আমাদের লক্ষ্য কোপা আমেরিকা জয়। আগামী ১১ জুন শুরু হচ্ছে কোপা আমেরিকা। ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচ ১৪ জুন পেরুর বিরুদ্ধে। এর আগে হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে শেষ প্রীতি ম্যাচ খেলবে পেলের দেশ। মারোয়ান ফেলাইনির জোড়া গোলে স্বাগতিক ফ্রান্সকে হারায় বেলজিয়াম। ফ্রান্সের জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ১৭ মিনিটে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেলজিয়ামকে এগিয়ে নেন ফেলাইনি। ৪২ মিনিটে হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই মিডফিল্ডার। বিরতির পর ৫০ মিনিটে দূরপাল্লার শটে বেলজিয়ামকে ৩-০ গোলে এগিয়ে নেন রাদিয়া নাইনগোলান। ৫৩ মিনিটে ফ্রান্সের হয়ে গোল করে লড়াইয়ের আভাস দেন ম্যাথিউ ভালবুয়েনা। কিন্তু পরের মিনিটেই বেলজিয়ামের হয়ে গোল করে ব্যবধান ৪-১ করেন চেলসি তারকা ইডেন হ্যাজার্ড। এরপর ৮৯ মিনিটে মিডফিল্ডার নাবিল ফেকির ও অতিরিক্ত সময়ে স্ট্রাইকার দিমিত্রি পায়েট গোল করলে পরাজয়ের ব্যবধান কমায় স্বাগতিক ফ্রান্স।
×