ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভারতের জনগণ ও প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ধন্যবাদ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৪ জুন ২০১৫

ভারতের জনগণ ও প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ধন্যবাদ

সংসদ রিপোর্টার ॥ দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত দু’দেশের সীমান্ত জটিলতার অবসান ঘটানোয় ভারতের জনগণ এবং সেদেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সর্বসম্মতক্রমে ধন্যবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ। ভারতের পার্লামেন্টে স্থলসীমান্ত চুক্তি পাস হওয়ায় মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদে দীর্ঘ আলোচনার পর আনীত ধন্যবাদ সর্বসম্মতক্রমে পাস হয়। আলোচনায় সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা অভিন্ন কণ্ঠে দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল পাস হয়েছে। জবাবে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের অকুণ্ঠ সমর্থনের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, আমেরিকায় বসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে কথা দিয়েছিলেন, তিনি তা রেখেছেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই এ চুক্তি হয়ে যেত। এ চুক্তির মাধ্যমে ছিটমহলবাসীর দীর্ঘদিনের অনিশ্চিত জীবনের অবসান হলো। ভারত অতীতেও বাংলাদেশের পাশে ছিল, আগামীতেও থাকবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। বিকেল চারটায় স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হওয়া অধিবেশনে দিনের অন্যান্য কার্যসূচী মূলতবি রেখে ভারতের জনগণ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে এই সাধারণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। প্রায় তিন ঘণ্টার আলোচনার পর সর্বসম্মতিতে সংসদে ধন্যবাদ প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। এ সময় সরকার ও বিরোধী দলের সদস্য টেবিল চাপড়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদসহ সরকার ও বিরোধী দলের ১৯ সংসদ সদস্য ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনায় অংশ নেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, ওয়ার্কার্স পার্টির বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, আওয়ামী লীগের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ড. হাছান মাহমুদ, মোতাহার হোসেন, নুরুল ইসলাম সুজন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, জাসদের মইনউদ্দিন খান বাদল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী। আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভারতের বিরোধী দলের নেতা সোনিয়া গান্ধী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যসভা ও লোকসভার সব সদস্য ছাড়াও ভারতের জনগণকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের ভূমিকার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি দুঃসময়েই ভারত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ এবং শরণার্থীদের জায়গা দিয়ে সহায়তা দিয়েছে। এসব সহযোগিতার কারণেই মাত্র নয় মাসে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। একাত্তরে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে ভারতের সহযোগিতার কথাও স্মরণ করে তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়। তিনি আমাকে কথা দিয়েছিলেন, তিনি বিলটি পাস করে দেবেন। তিনি সেই কথা রেখেছেন। এ জন্য তাঁকে ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিলটি পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাকে ফোন করেন। তিনি আমাকে সম্মান জানান। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীসহ অন্য নেতাদের ধন্যবাদ জানানোর বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে আমি প্রটোকলের দিকে তাকাইনি। আমি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী, অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে ফোন করি। তাঁদের মাধ্যমে আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাই। সুষমা স্বরাজকে ফোন করে বলি, আমার পক্ষ থেকে বিজেপির সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। এখন সংসদের মাধ্যমে আমি ধন্যবাদ জানালাম। নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মানুষের জন্য বিরাট উপহার নিয়ে আসছেন, সেটি হলো সীমান্ত চুক্তি। ভারত এই বিলটি পাস করায় ছিটমহলবাসী অন্তত একটি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। সেই অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে কাজ চালাচ্ছে তাঁর সরকার। তিনি বলেন, সকলের অভিন্ন শত্রু দারিদ্র্যকে দূর করতে সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এ জন্য পারস্পরিক বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে আমরা আমাদের সমুদ্রসীমা প্রতিষ্ঠা করেছি। সম্পর্কের এতটুকু চিড় ধরেনি। এভাবে একটার পর একটা সমস্যার সমাধান করেছি। ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ব্যাপক সহযোগিতামূলক কাজ শুরু করেছি। ঠিক তেমনি মিয়ানমার ও চায়নার সঙ্গে আমরা সমঝোতার মাধ্যমে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। শেখ হাসিনা বলেন, যে কোন দেশের সঙ্গে সমস্যা থাকলে সেটা আলোচনার মাধ্যমে বা বন্ধুত্বের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। স্বাধীনতার পর পর বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে মুজিব-ইন্দিরা মৈত্রী চুক্তি করে। যে চুক্তির ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে অনেক সহযোগিতা পাওয়া যায়। ’৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা স্থলসীমানা চুক্তি হয়। সীমানা চুক্তি করার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ওই বছরের ২৮ নবেম্বর জাতীয় সংসদে আমাদের সংবিধানের তৃতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে এই চুক্তির বাস্তবায়ন করে যান। তিনি শুধু চুক্তি করেননি, আইনটাও করে যান। সেই আইনটা করে গিয়েছিলেন বলেই আমাদের ভিত্তি ছিল। তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা যখন সরকার গঠন করি তখনই উদ্যাগ নেই বাংলাদেশের সীমানা নির্ধারণের। সীমানা নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার শিকার না হলে অনেক আগেই হয়ে যেত। পরবর্তীতে ৩১ বছরের সরকার কোন পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা ক্ষমতায় এসেই স্থলসীমানা ও সমুদ্রসীমানা চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করি। শেখ হাসিনা বলেন, ৬৮ বছর ধরে ছিটমহলে যারা থাকত তারা মানবেতর জীবনযাপন করছিল। ১৯৭১ সালে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করি। আমরা স্বাধীনতা পেলেও অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই ছিটমহলবাসী স্বাধীনতা পায়নি। ’৭৪ সালে স্থলসীমানা চুক্তি করার পর সেটার বাস্তবায়ন আমাদের পক্ষ থেকে হলেও ভারতের পক্ষ থেকে হয়নি সে জন্য ৪০ বছর ঐ মানুষগুলো একটা অনিশ্চিত জীবনযাপন করে। আজকে ভারত পার্লামেন্টে আইন পাস করার পর তারা নাগরিকত্ব পাচ্ছে। রওশন এরশাদ ॥ বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করে বলেন, তিনি নিজের আত্মপরিচয় দিতে দ্বিধা করেননি। এতে তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বোঝা যায়। ভারতের সঙ্গে অন্য যে সব সমস্যা রয়েছে, সেগুলোও একের পর এক সমাধান হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনার বাবা (বঙ্গবন্ধু) নেই, তাঁর অসমাপ্ত কাজগুলো আপনাকে সম্পন্ন করতে হবে। আপত্তি তা করেও যাচ্ছেন। আপনাকে একের পর এক কাজ করতে হবে। ভাল কাজ করতে গেলে বাধা আসবেই। আর মহিলাদের ক্ষেত্রে এই বাধা একটু বেশিই। সেই বাধা ভেঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। সোনার বাংলা আপনাকে গড়ে তুলতে হবে। সমুদ্রসীমা বিজয়, পাবর্ত্য শান্তি চুক্তি, ঐতিহাসিক গঙ্গার পানি চুক্তিসহ বিভিন্ন সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নির্বাচিত বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তিন বাঙালী সদস্যকেও জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়ারও প্রস্তাব দেন তিনি। এরশাদ ॥ লোকসভায় স্থলসীমান্ত চুক্তি পাস হওয়াকে ‘বিরল ঘটনা’ আখ্যায়িত করে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ বলেন, ‘অন্য দেশের স্বার্থ রক্ষায়’ নিজ দেশের সংবিধান সংশোধনের ঘটনা সত্যিই বিরল। ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভা সেই বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। নিজের শাসন আমলের কথা উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, এই চুক্তি বাস্তবায়নে আমি নিজেও রাষ্ট্রপতি থাকার সময় চেষ্টা করেছি। আমিও পারিনি। ৪১ বছর ধরে এ চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। এবার তা হয়েছে। এ জন্য তিনি শেখ হাসিনাকে লেখা তাঁর অভিনন্দনপত্রের কিছু অংশ সংসদে উল্লেখ করে বলেন, ‘মুজিব ইন্দিরা চুক্তিকে এতদিন যারা গোলামী চুক্তি বলেছেন, এ চুক্তি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে তাদের মুখে ছাই পড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে তিস্তার পানি চুক্তিরও বাস্তবায়ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। আমির হোসেন আমু ॥ শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ আল্লাহ রাব্বুল আল আমীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে সম্পন্ন করছেন। শেখ হাসিনা আছেন বলেই এই চুক্তি সম্পাদন হয়েছে। সীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের মাধ্যমে দু’দেশের সম্পর্কের বিরাট অগ্রগতি হয়েছে। অগ্রগতিকে কাজে লাগিয়ে অন্য সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি ১৬ বছর ক্ষমতায় ছিল কিন্তু দেশকে কিছুই দিতে পারেনি। তিনি বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার গৌরব অর্জনসহ প্রতিটি আন্তর্জাতিক সম্মান ও অর্জন এসেছে শেখ হাসিনার আন্তরিক চেষ্টা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলেই। তোফায়েল আহমেদ ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু নেই। তাঁর দুটি গুণ তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা গ্রহণ করেছেন। আর সেটি হলো শেখ হাসিনা লক্ষ্য নির্ধারণ করেন, আর সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কাজ করেন। যে কারণে চার দশক পর এই বিজয় অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। এ চুক্তির বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব ও কূটনৈতিক দূরদর্শিতা আজ প্রমাণিত হয়েছে। তাই যতই ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত হোক না কেন, তা সফল হবে না। আমাদের সঙ্গে জনগণ আছে। আমরা সফল হবই। সুরঞ্জিত ॥ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ভারতবর্ষের মতো এত বড় দেশ প্রতিবেশী হিসেবে পাওয়ায় আমরা গর্বিত। মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান দিয়েছিলেন, সেই সংবিধানে পররাষ্ট্র নীতি ছিল কোন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হবে না। কিন্তু ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংবিধান সংশোধন করা হয়। এরপর প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন ও আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়া হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। মতিয়া চৌধুরী ॥ কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। কিন্তু বিএনপি যে দেশের দল, সেই দেশের যে সরকার প্রচেষ্টায় এ চুক্তিটি সম্পাদন হয়েছে, সেই সরকারকে (আওয়ামী লীগ) অভিনন্দন জানায়নি। এখন সেই বিএনপিই বলছে তারা ভারতবিরোধী নয়, কোনদিন ছিলও না! তারা ভারতবিরোধী ছিল কি, ছিল নাÑ এটা কে জানতে চেয়েছে? তাদের কথা শুনে একটা প্রবাদ মনে পড়ে, ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না।’ মোঃ নাসিম ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ভারতের লোকসভাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক সাফল্যের কারণে ভারতের পার্লামেন্টে দীর্ঘ ৬২ বছর পর সীমান্ত চুক্তি বিল পাস হয়েছে। এ ঘটনায় দেশবাসী খুশি হলেও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া খুশি হতে পারেননি। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানালেও নিজের দেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাননি। তিনি রাজনৈতিক সংকীর্ণতার উর্ধে উঠতে পারেননি। এর মাধ্যমে তিনি হীনম্মন্যতার পরিচয় দিয়েছেন। মেনন ॥ স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়ে জাতীয় সংসদে যে আলোচনা হচ্ছে, তা ভারতের লোকসভায় পাঠানোর অনুরোধ জানান বিমানমন্ত্রী ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরে দু’দেশের মধ্যে চলাচলের ক্ষেত্রে বাধাগুলো দূর করা প্রয়োজন। বিশেষ করে ভিসা সহজীকরণ অত্যন্ত জরুরী। তবে নরেন্দ্র মোদির সফরে তিস্তা চুক্তি সম্পাদন না হলেও সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। কেবল তিস্তা চুক্তি নয়, আরও যেসব অভিন্ন নদী নিয়ে সমস্যা রয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে সুরাহা হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাদল ॥ জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল বলেন, ভারত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হতে চায়, এ জন্য দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বড় সহযোগী বাংলাদেশ। ভারত সরকারকে মনে রাখা উচিত দক্ষিণ এশিয়ায় বীরের জাতি বাঙালী। আমরা অকৃতজ্ঞ নই। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হতে ভারত যদি দক্ষিণ এশিয়ার সহযোগিতা চায় তবে বড় সহযোগী হবে বাংলাদেশ।
×