ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুঠোফোনে পরিচয়, প্রেম...শাহজালালে দেন দরবার, পরে লাপাত্তা

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ৪ জুন ২০১৫

মুঠোফোনে পরিচয়, প্রেম...শাহজালালে দেন দরবার, পরে লাপাত্তা

আজাদ সুলায়মান ॥ মুঠোফোনের রং নম্বরেই কথা বলা শুরু। তারপর পরে পরিচয়, প্রেম। এমনই এক প্রেমকাহিনী প্রত্যক্ষ করল শাহজালাল বিমানবন্দরের আর্মড পুলিশ। এ নিয়ে চলে প্রেমিক-প্রেমিকা ও পুলিশের দেন-দরবার। শেষ পর্যন্ত প্রেমিকা নাসরিন সাবালিকা হওয়ায় তার ইচ্ছেকেই প্রাধান্য দিতে হলো। বাবা-মায়ের আকুতি মিনতি উপেক্ষা করেই নাসরীন উধাও হলো এক অজানা ঠিকানায়। ঘটনা বুধবার সকালের। এপিবিএন এএসপি আলমগীর হোসেন শিমুল জানান, তাদের করার কিছুই ছিল না। মিয়া বিবি রাজি তো ক্যায়া করে গা কাজী। এখানেও তাই হলো। নাসরীন যদি সাবালিকা না হতো তাহলেও হয়তো তাকে অভিভাবকের কাছে দেয়া যেত। সিলেটের সম্ভ্রান্ত পরিবারের তরুণী হালিমা নাসরিন ও সিরাজগঞ্জের দরিদ্র পরিবারের যুবক সাদ্দাম। বছরতিনেক আগে মোবাইল ফোনের রং কল সূত্রে পরিচয়। তারপর ফোনালাপ। ফোনে কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। সিলেটে থাকাকালে পরিচয় হলেও বছরতিনেক আগে নার্সিংয়ের ওপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে আমেরিকায় চলে যান নাসরিন। তবু থেমে থাকেনি তাদের প্রেমের সম্পর্ক। মোবাইলে হতো নিয়মিত যোগাযোগ। একপর্যায়ে নাসরিনের পরিবারের সদস্যরা প্রেমের বিষয়টি জেনে যান। কিন্তু তরুণী তার প্রেমের ব্যাপারে অটল। ওই যুবককেই বিয়ের সিদ্ধান্ত তার। এ অবস্থায় দীর্ঘ তিন বছর পর আমেরিকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে বুধবার সকাল নয়টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন নাসরিন। আসে প্রেমিক সাদ্দামও। নাসরিনের পরিবারের সদস্যরাও শাহজালালে এসে টের পান যে, নাসরিন সিলেট যাচ্ছে না, যাচ্ছে ওই যুবকের সঙ্গে। আর তাই তাকে সিলেটে নিতে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের সহায়তা চান পরিবারের সদস্যরা। এ অবস্থায় বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের সদস্যরা ওই তরুণীকে ডেকে নিয়ে আসেন কার্যালয়ে। কিছুক্ষণ পর নিয়ে আসা হয় ওই যুবককেও। চলে দেন-দরবার। নাসরিনের ভাই হেলাল তাকে অনুরোধ করতে থাকেন তাদের সঙ্গে সিলেটে যেতে। কিন্তু অনড় বোন বলেন, আমি সাবালিকা। আমার সিদ্ধান্ত, আমি যাকে ভালবাসি, তাকেই বিয়ে করব। এ সময় সাদ্দাম হোসেন বলেন, তিন বছর ধরে আমরা একে অপরকে ভালবাসি। আমরা দু’জন আজ (বুধবার) বিয়ে করব। আমার গ্রামের বাড়িতে বিয়ের আয়োজন চলছে। তার প্রেমিকা হালিমা নাসরিন বলেন, আমি আমেরিকার গ্রীনকার্ডধারী। ভালবাসার টানে দেশে এসেছি। সাদ্দামের সঙ্গে যেতে দেয়ার জন্য আমি আর্মড পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই। এ অবস্থায় আমাদের করার কিছু নেই। তাই আমরা তাদের নিরাপদে বিমানবন্দর ত্যাগে সহায়তা করেছি। রাতে এই প্রেমিক জুটিকে ফোন করে জানা যায়নি তারা কোথায় গেছেন।
×