ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৬ লাখ ৩২ হাজার ৫শ’ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৩১ মে ২০১৫

৬ লাখ ৩২ হাজার ৫শ’ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংসদে বাজেট উত্থাপনের পূর্বে প্রথমবারে মতো বিকল্প বাজেট প্রস্তাব করল বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। প্রস্তাবিত এ বাজেটের আকার ৬ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা অর্থমন্ত্রী কতৃক সম্ভাব্য প্রস্তাবের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। ৭৭ শতাংশ অর্থের উৎস ধরা হয়েছে এনবিআর, নন-এনবিআর ও নন ট্যাক্স রেভিন্যু খাত থেকে। এতে ঘাটতি বাজেটের পরিমাাণ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ২৩ শতাংশ। বিশাল আকারের এ বাজেট বাস্তবায়নে বৈদেশিক কোন ঋণের সহায়তার প্রয়োজনও পড়বে না বলে মনে করে অর্থনীতি সমিতি। শনিবার বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বাজেট প্রস্তাবনা ২০১৫-১৬’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত বিকল্প এ বাজেট উত্থাপন করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ। বাজেট বক্তৃতায় জামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রস্তাবিত বিকল্প এ বাজেটের আকার হবে ৬ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর ৭৭ শতাংশ অর্থের উৎস ধরা হয়েছে এনবিআর (৫৭. ৫৪ শতাংশ), নন-এনবিআর (১১.০৮ শতাংশ) ও নন-ট্যাক্স রেভিন্যু (৩১ শতাংশ)। এ তিনটি খাত থেকে মোট ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আসবে। বাকি ২৩ শতাংশ অর্থের যোগান দেয়া হবে ঘাটতি বাজেট থেকে, অর্থের হিসাবে যার পরিমাণ ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত আমাদের এ বাজেটে আয়কর ও মূসকসহ পরোক্ষ কর হবে ৪ কোটি ৮৭ লাখ ৫০০ কোটি টাকা। তিনি আরও বলেন, কোন প্রকার বৈদেশিক ঋণ ছাড়াই এ বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব। এ বাজেটে প্রত্যক্ষ করের তুলনায় পরোক্ষ করের অনুপাত বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তীর সময় নাগাদ ২০২১ সালের মধ্যে আমরা সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছি। বিদেশী ঋণ ছাড়া সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ৬ লাখ কোটি টাকার বাজেটও আমাদের দ্বারা বাস্তবায়ন সম্ভব, যার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে আমাদের প্রস্তাবিত এ বাজেটে। অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত বলেন, আমরা এই প্রথমবারের মতো বিকল্প বাজেট প্রস্তাব করেছি। এ বাজেট রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বাজেট প্রস্তাবনাও বটে। অর্থনীতি সমিতি বৈষম্যহীন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে। দেশজ শিল্প গঠন করে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আমাদের প্রস্তাবিত বাজেটে একাধিক সুপারিশ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা কয়েক বছর চিন্তাভাবনা করে এ বাজেট প্রস্তাব করেছি। আশা করি, বাজেটটি আলোচিত ও সমালোচিত হবে। তবে এ বাজেট স্বাধীনতা রক্ষার কৌশল। সত্যিকারের বাংলাদেশ বিনির্মাণের কৌশল। ফলে ৩ লাখ নয়, আমরা ৬ লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছি। প্রস্তাবিত বিকল্প এ বাজেটে বলা হয়, কালো টাকা অথবা মার্জিত ভাষায় অপ্রদর্শিত আয়ের বিষয়টি স্পর্শকাতর। দেশে পুঞ্জীভূত কালো টাকার পরিমাণ হবে প্রায় ৫ লাখ কোটি থেকে ৭ লাখ কোটি টাকা। বিশাল ওই কালো টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধারের তাগিদ দেন সমিতির সদস্যরা। সমিতির প্রস্তাবিত ২৭ পৃষ্ঠার এ বাজেটকে ‘দেশের মাটি থেকে উত্থিত উন্নয়ন দর্শন’ হিসাবে আখ্যা দেন তারা। কয়েকটি খাতে আয়-ব্যয় হ্রাস-বৃদ্ধি নিয়েও রয়েছে তাদের একাধিক সুপারিশ। প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় হ্রাসের সুপারিশ রয়েছে এ বাজেটে। ২৩ শতাংশ দেশীয় অর্থায়নে কোন বিদেশী ঋণ ছাড়াই ওই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
×