ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বান্দরবানে রোহিঙ্গা পরিবারের চার সদস্যকে জবাই

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৩০ মে ২০১৫

বান্দরবানে রোহিঙ্গা পরিবারের চার  সদস্যকে জবাই

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান, ২৯ মে ॥ বান্দরবান পার্বত্য জেলার কুহালং ইউনিয়নের ক্যামলং এলাকার একটি খামারবাড়িতে শিশুসহ একই পরিবারের চার জনকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। নিহতরা সবাই রোহিঙ্গা। এরা হলো সামিরা বেগম (৩০), তার পুত্র সৈয়দ নুর (৪) এবং মোঃ আমিন (৪৫), তার পুত্র জুনায়েদ (১২)। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলা সদরের কুহালং ইউনিয়নের ক্যামলং এলাকার একটি খামারবাড়িতে তারা ১২ বছর ধরে কাজের পাশাপাশি বসবাস করত। পারিবারিক কলহের জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গলা কেটে হত্যা করা হয়। আরও জানা গেছে, নিহত সামিরা বেগম ও মোঃ আমিন আপন ভাইবোন। বৃহস্পতিবার রাতে তারা সবাই বাসায় এক সঙ্গে বসে রাতের খাবার খাচ্ছিল। এ সময় তাদের ধারালো দা ও ছুরি দিয়ে বাসার মধ্যেই জবাই করে হত্যা করা হয়। প্লেট ভর্তি ভাত আর তার পাশেই লাশগুলো বাসার এদিক-সেদিক নিথর অবস্থায় পড়ে ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয়রা সকালে আমিনদের কাউকে দেখতে না পেয়ে বাসায় খবর নিতে গেলে তখন লাশ দেখতে পায়। পরে তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে একে একে চার জনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সানুপ্রু মারমা বলেন, নিহতরা সেগুন বাগানে কাজ করত, রাতে তাদের হত্যা করা হয়। স্থানীয়রা আরও জানায়, রোহিঙ্গা আমিন তিনটি বিয়ে করে, ভরণপোষণ নিয়ে আমিনের তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কলহ চলে আসছিল আমিনের সঙ্গে, এ নিয়ে তাদের মধ্যে কয়েকদিন আগে মারামারির ঘটনাও ঘটে। আর এর জের ধরে তৃতীয় স্ত্রী তাদের হত্যা করতে পারে। এদিকে আমিনের তিন স্ত্রীর নাম জানা যায়নি। ঘটনার সময় অন্য দুই স্ত্রী কোথায় ছিল এবং হত্যাকা-ে কতজন অংশগ্রহণ করেছে তা জানা না গেলেও এ ঘটনার পর আমিনের তৃতীয় স্ত্রীকে ধরতে ক্যামলং-এর আশপাশের এলাকায় পুলিশ ও সেনা সদস্যরা অভিযান অব্যাহত রেখেছে। নিহতরা সবাই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক। তারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের বান্দরবানে অনুপ্রবেশ করে দীর্ঘদিন ধরে ওই খামার বাড়িতে বসবাস করছিল। পুলিশ নিহতদের লাশ উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। বান্দরবান পার্বত্য জেলায় এই প্রথম এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটার কারণে বান্দরবানজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে বান্দরবান পার্বত্য জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করে জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা, আলীকদমসহ ৭টি উপজেলায় বসবাস করে আসছে। রোহিঙ্গারা জেলায় খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি চাঁদাবাজি, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধ মূলককর্মকা- সংগঠিত করে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করছে বলে জানান জনপ্রতিনিধিরা।
×