স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভারতে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অনুপ্রবেশের দায়ে পুলিশ হেফাজতে থাকা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছে মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ের আদালত। বুধবার বিকেলে শিলং পুলিশ সালাহউদ্দিন আহমেদকে ডিস্ট্রিক্ট সেশন জজ আদালতে হাজির করলে শুনানির পর তাকে ১৪ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
জানা যায়, আদালতে হাজির করা হলেও শিলং পুলিশ সালাহউদ্দিন আহমেদের রিমান্ড আবেদন করেনি। সালাহউদ্দিন আহমেদের পক্ষেও কোন আইনজীবী ছিলেন না। পরিস্থিতি বিবেচনায় শিলং আদালত সালাহউদ্দিন আহমেদকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে লকআপে ঢোকানোর আগে তার শারীরিক পরীক্ষার নির্দেশ দেন আদালত।
বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশ করায় ভারতের বিদেশ আইন অনুসারে সালাহউদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতার দেখায় মেঘালয় পুলিশ। এরপর তাকে চিকিৎসার জন্য শিলংয়ের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার নেগ্রিমস হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়ার পর শিলং থানার পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়ে যায় সালাহউদ্দিনকে। বুধবার বিকেল ৩টায় তাকে মেঘালয়ের শিলং ডিস্ট্রিক্ট সেশন জজ আদালতে তোলা হয়। এ সময় শিলং আদালত চত্বরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে তাকে ভারতে অনুপ্রবেশের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে শিলং পুলিশ।
বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত সালাহউদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ স্বামীর জামিন চেয়ে মেঘালয় রাজ্যের শিলং আদালতে যে আবেদন করেছিলেন তার শুনানি হবে কাল শুক্রবার। গত শুক্রবার শিলংয়ের প্রথম শ্রেণীর বিচারিক আদালতে সালাহউদ্দিনের জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে সালাহউদ্দিনকে আদালতে হাজির করা হয়নি। জামিন আবেদনে বলা হয়েছে সালাহউদ্দিন আহমেদ গুরুতর অসুস্থ। সুস্থ হওয়ার জন্য তার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। সালাহউদ্দিনের পাসপোর্ট ও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও আবেদনের সঙ্গে আদালতে জমা দেয়া হয়েছে।
বিএনপি জোটের দেশব্যাপী টানা অবরোধ কর্মসূচী চলাকালে ১০ মার্চ ঢাকার উত্তরার একটি বাসায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় নিখোঁজ হন সালাহউদ্দিন আহমেদ। এরপর ৬৩ দিন পর ১২ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ের মিমহ্যানস্ হাসপাতাল থেকে স্ত্রী হাসিনা আহমেদকে ফোন দিয়ে জানান তিনি বেঁচে আছেন। পরে শিলং পুলিশ সংবাদমাধ্যমকে জানায়, ১১ মে সকাল বেলা শিলংয়ের গলফ লিংক এলাকা থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে ভ্রমণের কাগজপত্র না থাকায় স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বিধ্বস্ত চেহারা ও অসংলগ্ন কথাবার্তার কারণে তাকে মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ (মিমহ্যানস) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ২ দফায় হাসপাতাল পরিবর্তন করে প্রথমে শিলং সিভিল হাসপাতাল ও পরে শিলং নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ ও মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এ ভর্তি করা হয়। স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে ১৭ মে শিলংয়ের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন হাসিনা আহমেদ। ১৮ মে তিনি স্বামীর সঙ্গে সাক্ষাত করে তাকে মুক্ত করতে আইনী প্রক্রিয়া শুরু করেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: