ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় পানির তীব্র সঙ্কট

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৭ মে ২০১৫

রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় পানির তীব্র সঙ্কট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুষ্ক মৌসুম কেটে গেলেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানি সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কম করে হলেও ৭টি ব্লকে পানির এই সঙ্কট চলছে। এই অবস্থায় ওয়াসার কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী পানি বাণিজ্য করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা বলছে, প্রতি গাড়ি পানিতে ৫ থেকে ৬শ’ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। টাকা বেশি দিয়েও অনেককে পানি পেতে দুইদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ওয়াসা বলছে, বসুন্ধরা এলাকায় পানির কোন সঙ্কট নেই। কারণ ওখানে ওয়াসার ডিপটিউবয়েল রয়েছে। বসুন্ধরা এলাকার এ, বি, সি থেকে শুরু করে জি ব্লক পর্যন্ত গত এক সপ্তাহ ধরে পানির সঙ্কট চলছে। মঙ্গলবার বসুন্ধরা এলাকা থেকে বেশ কয়েকজন টেলিফোনে জানিয়েছেন, পানি সঙ্কটের বিষয়টি নিয়ে তারা কয়েক দফা ওয়াসার স্থানীয় অফিসে অভিযোগ নিয়ে গেলেও তারা কোন কথাই শুনতে চাননি। বিষয়টি ওয়াসার প্রধান কার্যালয়েও জানানো হয়েছে। তাতেও কোন ফল হয়নি। পানির অভাবে এলাকায় চরম অবস্থা বিরাজ করছে। এই এলাকাজুড়ে পানি সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। এই সুযোগে ওয়াসার অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোয়া বারো হয়েছে। তারা সুযোগ বুঝে যার কাছ থেকে যত টাকা পারে আদায় করছে। বাড়তি টাকা দিয়েও পানি পেতে এক থেকে দুইদিন সময় লেগে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে নগরীর বসুন্ধরা এলাকার পানি সঙ্কট কিছুতেই দূর করছে না ঢাকা ওয়াসা। এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানি সঙ্কটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। ভোগান্তি দূর করতে সর্বশেষ তারা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। এ বিষয়ে ওয়াসার ডিএমডি কামরুল আলম চৌধুরী জনকণ্ঠকে বলেন, বসুন্ধরা এলাকায় পানির কোন সঙ্কট নেই। পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ঢাকার যে কোন এলাকার চেয়ে অনেক ভাল। কারণ বসুন্ধরায় আমরা নতুন পাম্প স্থাপন করেছি। এখন সেখানে যেটা হতে পারে তার জন্য ওয়াসার কিছু করার থাকে না। বসুন্ধরা এলাকায় প্রচুর নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে। এসব ভবন নির্মাণ করতে প্রচুর পানিরও প্রয়োজন হয়। গোটা পানিই তারা ওয়াসার পাইপের সঙ্গে চোরাই পাইপ লাগিয়ে টানা মেশিন দিয়ে টেনে নেয়। তখন সাধারণভাবে পানি সরবরাহ কমে যায়। হয় তো এমন কিছু ঘটতে পারে। আরেকটি হতে পারে যদি পাইপ লাইনের কোন উন্নয়ন কাজ করা হয়। তবে এ মহূর্তে বসুন্ধরা এলাকায় তেমন কোন উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না। সেখানে যদিও এডিবির একটি প্রকল্প আছে। এদিকে ওয়াসার সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে ওয়াসা প্রতিদিন ২৪২ কোটি পানি উৎপাদন করছে। ঢাকাবাসীর দৈনিক পানির চাহিদা ২২৫ কোটি লিটার। পরিবেশবান্ধব পানি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে গত তিন বছরে ঢাকা ওয়াসা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তিন বছর আগে উৎপাদিত মোট পানির ৮৭ শতাংশ আসত ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে। এখন তা কমিয়ে ৭৮ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে এখন চাহিদার ২২ শতাংশ পানির যোগান পাওয়া যাচ্ছে। এখন আর কেউ বলতে পারবে না যে পানির সঙ্কট আছে। তবে হ্যাঁ এলাকা ভেদে কিছু সমস্যা তো হতেই পারে। যদি কোন এলাকা উঁচু হয় সেই এলাকায় পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হবে না। আবার কোন এলাকায় পুরনো পাম্পে ‘ফিল্টার জ্যাম’ হয়ে আছে। পুরনো পাম্পগুলো নিয়মিত সংস্কারের কাজ করা হয়। এই সময়ের জন্য কিছু সমস্যা হতে পারে। ওই সব এলাকার অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ওয়াসার কর্মীদের প্রস্তুত রাখা আছে।
×