ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নোয়াখালীতে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে কিশোর নিহত, ২৫ দোকান ভাংচুর

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২৬ মে ২০১৫

নোয়াখালীতে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে কিশোর নিহত, ২৫ দোকান ভাংচুর

নিজস্ব সংবাদদাতা, নোয়াখালী, ২৫ মে ॥ নোয়াখালী সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের কিল্লারহাট বাজারে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত রাহাত হোসেন পিয়াস (১৬) নামে এক কিশোর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এ ঘটনায় মুমূর্ষু অবস্থায় আরও দু’জন জেলার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। একজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যায়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা সন্দেহে সুধারাম থানা পুলিশ কবির হোসেন নামের এক যুবককে আটক করে। গত সোমবার সন্ধ্যায় কিল্লারহাট বাজারে এ সংঘর্ষে রাহাতসহ চারজন আহত হন। আহতদের প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের অবস্থার অবনতি দেখে রাতে রাহাতকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং অপর দু’জনকে জেলার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাহাত মারা যায়। এ ঘটনায় পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিহত রাহাত ওই ইউনিয়নের আইয়ুবপুর গ্রামের আবদুল মন্নানের ছেলে। সে জেলা শহরের হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। অপর আহতরা হচ্ছে- একই গ্রামের মোঃ লিটনের ছেলে জুয়েল (১৬), আবদুর রহমানের ছেলে মোঃ সাগর (১৭) ও মোঃ শরিফ। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার বিকেলে অশ্বদিয়া ইউনিয়নের লালানগর ও কিল্লাচর গ্রামের তরুণরা একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলে। এ সময় দুই যুবকের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তারই জের ধরে সোমবার সন্ধ্যায় কিল্লারচরের একদল যুবক লালানগর গ্রামের কিল্লারহাট বাজারে গিয়ে হামলা চালিয়ে ২৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলা-ভাংচুরের এক পর্যায়ে লালানগরের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া করে। এ সময় রাহাত হোসেন, সাগর, জুয়েল ও শরিফকে কুপিয়ে ও পিটুনি দিলে তারা আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করান। নিহত রাহাতের মামা মো. ফারুক বলেন, লালানগর ও কিল্লাচর গ্রামবাসীর মধ্যে পূর্ব থেকে বিরোধ চলে আসছে। সোমবার সন্ধ্যায় একটি ক্রিকেট প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলার দাওয়াতপত্র নিয়ে রাহাত ও তার কয়েকজন সহপাঠী ওই এলাকায় যান। এ সময় তারা দুই গ্রামবাসীর মধ্যকার সংঘর্ষের শিকার হন। নিহত রাহাতের মরদেহ ঢাকা থেকে গ্রামে আনার পর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান তিনি। ঘটনার বিষয়ে অশ্বদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মহিউদ্দিন বাবুর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, লালানগর ও কিল্লারচর গ্রামবাসীর মধ্যে খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে প্রায় সময় বিবাধ লেগেই থাকে। তারই জের ধরে সোমবার সন্ধ্যায় পাল্টাপাল্টি হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পার্শ্ববর্তী আইয়ুবপুর গ্রামের কয়েকজন কিশোর আহত হয়। এর মধ্যে রাহাত হোসেন নামের এক কিশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। যে কোন ধরনের সহিংসতা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
×