ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সফটওয়ারে যান্ত্রিক ত্রুটি বার বার বিঘœ লেনদেনে

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ২৫ মে ২০১৫

সফটওয়ারে যান্ত্রিক ত্রুটি বার বার বিঘœ লেনদেনে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন শুরু হয় বেলা ২টা ২০ মিনিটে। এর আগে নতুন সফটওয়ার চালুর পরে বড় লেনদেন ও আইপিও শেয়ার লেনদেন শুরুর দিন বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা গেলেও প্রথমবারের মতো কলঙ্ক তৈরি করল প্রধান পুঁজিবাজার। দীর্ঘ সময় এই সফটওয়ার বিকল থাকার কারণে প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। দুপুর পর্র্যন্ত দেশের অনেক জায়গা থেকে সিএসইর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে সমস্যা হচ্ছে। রবিবারের লেনদেন বন্ধ থাকার বিষয়ে ডিএসইর তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কারিগরি ত্রুটির কারণে স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন বন্ধ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ ব্রোকারেজ হাউস তাদের ফাইল আপলোড করতে পারছিলেন না। সিস্টেমের ত্রুটির কারণে এমনটি হচ্ছে। অবশেষে নির্ধারিত সময়ের শেষ মুহূর্তে লেনদেন শুরু করতে সমর্থ হয়েছে ডিএসই। নির্ধারিত সময়ের ৩ ঘণ্টা ৫০ মিনিট পরে শেষে বেলা ২টা ২০ মিনিটে লেনদন শুরু হয়েছে এবং শেষ হবে বেলা ৪টায়। এর ফলে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ২ ঘণ্টারও কম লেনদেন হয় ডিএসইতে। নির্ধারিত সময়ে লেনদেন শুরু করতে না পারার কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নানা ধরনের ভোগান্তির মুখে পড়েন। সম্প্রতি লেনদেন বেড়ে যাওয়ার পর থেকে ডিএসইর নতুন সফটওয়ারে কিছু সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। বিশেষ করে লেনদেনের শেষ ১৫ থেকে ২০ মিনিটে সফটওয়ারটি ধীর হয়ে পড়ে। লেনদেন নিষ্পত্তিতে বিপত্তি দেখা দেয়। নিটিং করতে গিয়ে অনেক ব্রোকারেজ হাউস বিপাকে পড়ে। এ সমস্যার বিষয়টি ডিএসই ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করেছে কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউস। ডিএসইর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সফটওয়ারটির আপডেটের কাজ চলছে। এতে কিছু সমস্যা হতে পারে। আপডেটের কাজ সম্পন্ন হলে সমস্যা থাকবে না। এর আগে ২০১২ সালের জুন মাসে ‘এমএসএ প্লাস’ নামে নতুন ট্রেডিং সফটওয়ার চালু করেছিল ডিএসই। নতুন সফটওয়ারটি চালুর পর থেকে নানা ধরনের বিপত্তির মুখে পড়তে হয় বিনিয়োগকারী ও ট্রেডারদের। লেনদেন নিষ্পত্তিতে ধীরগতি, যথাসময়ে অর্ডার এক্সিকিউট না হওয়াসহ আরও বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয় সফটওয়ারটিতে। পরবর্তীতে ডিসেম্বর মাসে আরও একটি নতুন সফটওয়ার চালু করা হয়। এটি চালুর পরও প্রথম দিন লেনদেন করা কোম্পানিগুলোর লেনদেনে সফটওয়াজনিত ত্রুটির কারণে নির্ধারিত সময়ে লেনদেন শুরু করতে পারেনি ডিএসই। নির্ধারিত সময়ের আধ ঘণ্টা পরে শুরু হয় লেনদেন। ঠিক এক কার্যদিবস পরে ৯ ডিসেম্বর এনভয় টেক্সটাইলসের লেনদেন শুরুর দিনও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। সকাল সাড়ে ১০টার পরিবর্তে ওইদিন লেনদেন শুরু হয় সকাল ১১টায়। পরবর্তীতে নতুন কোম্পানির লেনদেন শুরুর কারণে সফটওয়ারের ত্রুটি সমস্যার সমাধান হলেও পুরোপুরি তা থেকে মুক্ত হওয়া হতে পারেনি ডিএসই। যান্ত্রিক ত্রুটির ব্যাখ্যা দিল ডিএসই ॥ রবিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শুরু করতে ৩ ঘণ্টা ৫০ মিনিট বিলম্ব হয়েছে। এদিন লেনদেন শেষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই বিলম্ব হওয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছে ডিএসই। এছাড়া আজ সোমবার যথাসময়ে অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় লেনদেন চালু করা হবে বলে ডিএসইর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ডিএসইর পক্ষ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রবিবারে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শুরু করতে ৩ ঘণ্টা ৫০ মিনিট দেরি হয়েছে। স্বাভাবিক লেনদেনের সময় ৪ ঘণ্টার তুলনায় মাত্র ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের এই ত্রুটি বিচ্যুতির জন্য বাজারের সঙ্গে জড়িত সকল ট্রেক হোল্ডারদের সমস্যা তৈরি হয়েছে। যার কারণে ডিএসই দুঃখ প্রকাশ করছে। লেনদেন বিলম্ব হওয়ার পেছনে যে টেকনিক্যাল ইস্যু রয়েছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে : সমন্বিত লেনদেন সিস্টেমে কিছু সিকিউরিটিজ হাউস তাদের লেনদেনের তথ্য দিতে দেরি করায় ডিএসইর লেনদেন চালু করতে বিলম্ব হয়েছে। এতে অন্যান্য সিকিউরিটিজ হাউসগুলোকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। যদি সাড়ে ১০টায় লেনদেন চালু করা হতো তাহলে মাত্র ১৫ জন ব্রোকার লেনদেন করতে পারত। এদিকে প্রতিটি সিকিউরিটিজ হাউসকেই লেনদেন শুরুর আগে দুটি ফাইলে তাদের ক্লায়েন্টদের নাম, ঠিকানা, টাকা ও পোর্টফলিওতে কার কি শেয়ার রয়েছে সে তথ্য জমা দিতে হয়। কিন্তু বেশিরভাগ হাউজ তা দিতে পারে নাই।
×