ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্কোয়াডে ঠাঁই পেয়ে অভিভূত সেলেনিয়া

বিশ্বকাপ- প্রস্তুত স্বাগতিক কানাডা

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৪ মে ২০১৫

বিশ্বকাপ- প্রস্তুত স্বাগতিক কানাডা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টানা আড়াই মাস দেশের বাইরে থাকতে হয়েছে। অবশেষে বৃহস্পতিবার ঘরে ফিরেছে কানাডার মহিলা ফুটবল দল। কিছুদিন পরেই দেশের মাটিতে মহিলা বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করবে কানাডা। প্রস্তুত হওয়ার জন্যই এতদিন দেশের বাইরে ছিলেন ফুটবলাররা। এর মধ্যে সাইপ্রাস ও ফ্রান্সে কাটিয়েছে তারা। সাইপ্রাস কাপের ফাইনালে উঠলেও ইংল্যান্ডের কাছে হেরে রানার্সআপ হতে হয়েছে। এরপর ফ্রান্স সফরে স্বাগতিকদের সঙ্গে প্রীতিম্যাচ খেলেও হারতে হয়েছে। শেষটা ভাল না হলেও মহিলা ফুটবলারদের বীরোচিত সম্মান ও স্বাগতম জানিয়েছে কানাডাবাসী। শেষ একটা প্রস্তুতি বাকি আছে; আগামী শুক্রবার ওন্টারিওতে আন্তর্জাতিক প্রীতিম্যাচ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। সাইপ্রাস কাপে হারের প্রতিশোধ নিয়ে বিশ্বকাপের জন্য অনুপ্রেরণা লাভের সুযোগ। এবার সপ্তম মহিলা ফুটবল বিশ্বকাপ কানাডার ১২ ভেন্যুতে ৬ জুন হতে ৫ জুলাই পর্যন্ত চলবে। উদ্বোধনী ম্যাচে এডমন্টনে চীনের মুখোমুখি হবে কানাডা। বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ঠাঁই করে নিয়েছেন ২৮ বছর বয়সী সেলেনিয়া ইয়াচ্চেল্লি। দীর্ঘদিন দলে না থাকলেও বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ডাক পেয়ে দারুণ আশ্চর্য হয়েছেন এ মিডফিল্ডার। গত বছরও সাইপ্রাস কাপে হতাশাজনক পারফর্মেন্স দেখিয়ে পঞ্চম হয়েছিল কানাডা। আর এবার রানার্সআপ। গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচে স্কটল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইতালিকে হারিয়ে দিলেও ফাইনালে আর সে সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি তারা। হেরে গেছে ইংল্যান্ডের কাছে ১-০ গোলে। কিন্তু দারুণ সাফল্য এটি কানাডার মেয়েদের জন্য। বিশেষ করে বিশ্বকাপের আগে দেশের বাইরে এমন সাফল্য সত্যিই দারুণ অনুপ্রেরণার। কারণ এবার দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ আয়োজিত হবে। কানাডায় প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর বসছে। ২০০৩ বিশ্বকাপে সেরা সাফল্য হিসেবে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিল কানাডার মেয়েরা। আর গত দুই আসরে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে। তবে সর্বশেষ ২০১১ বিশ্বকাপের পরবর্তী বছরেই লন্ডন অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জিতে নিজেদের যেন ফিরে পেতে শুরু করে কানাডার মহিলা ফুটবলাররা। তাছাড়া কনকাকাফ অঞ্চলে নিজেরা সবসময়ই বেশ দুরন্ত। ১৯৯৮ ও ২০১০ সালে চ্যাম্পিয়ন ও চারবার রানার্সআপ হয়েছে। যদিও গত বছর কনকাকাফ আসরে অংশগ্রহণ করেনি কানাডা। কিন্তু নিজেদের পরিচিত এলাকায় যেকোন দলের জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ তারা সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে ভালভাবেই। সেটা বিশ্বকাপ শুরুর আগেই প্রমাণ দেয়ার সুযোগ রয়েছে। বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র ৭ দিন আগে আবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ। দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ আসরে কী করার ক্ষমতা রয়েছে সেটাও প্রমাণের সুযোগ এদিন। বিশ্বকাপের জন্য কানডার ১২টি ভেন্যু হচ্ছেÑ ভ্যানকুভার, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, এডমন্টন, আলবার্টা, উইনিপেজ, ম্যানিটোবা, অটোয়া, ওন্টারিও, মন্ট্রিল, কুইবেক, মঙ্কটন এবং নিউ ব্রান্সউইক। দলের প্রধান কোচ জন হার্ডম্যান ইতোমধ্যেই বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই কানাডা মহিলা ফুটবলের ভক্তরা যেসব নাম দেখতে চেয়েছিলেন সে তালিকায় বড় চমক সেলেনিয়ার অন্তর্ভুক্তি। তিনি নিজেও এখন পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারছেন না বিশ্বকাপ খেলবেন। এ বিষয়ে সেলেনিয়া বলেন, ‘আমি সত্যিই হতভম্ব হয়ে গেছি। বেশ কয়েকবার গায়ে চিমটি কেটেছি যে স্বপ্ন দেখছি না তো? আমি এটা দেখে পরিবারের সবাইকে মোবাইলে বার্তা পাঠিয়েছি এবং গ্রুপ মেসেজ পাঠিয়েছি যতজন আমার কন্টাক্টে ছিলেন।’ উদীয়মান তারকা হিসেবে ২০০৪ সালের অনুর্ধ-১৯ এবং ২০০৬ সালে অনুর্ধ-২০ মহিলা বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু কানাডার মূল দলে অভিষেক হয়েছে ৭ বছর পরে ২০১৩ সালের ২৭ নবেম্বর। এরপরও নিয়মিত হতে পারেননি। এর কারণ বারবার ভয়াবহ ইনজুরি। অনেক বেশি সেলেনিয়াকে খেলানোর কারণেই এমনটা হয়েছিল বলে মনে করেছেন ফিজিওথেরাপিস্টরা। বিশেষ করে হাঁটু ও পায়ের পাতায় দু’বার যে ইনজুরি হয়েছিল সেখান থেকে আবার ফুটবল মাঠে ফেরাটাই ছিল অসম্ভব। এ বিষয়ে সেলেনিয়া বলেন, ‘আমার জন্য এটা কঠিন নয়। আমি সত্যিই ফুটবল খেলা অনেক পছন্দ করি, যা ঘটেছে সেসব আমার আয়ত্তে নেই। সুতরাং সেসব আমি ভুলে গেছি এবং অনেক সতর্ক থাকব, যাতে আর না ঘটে।’ পিতামাতা ইতালিয়ান হলেও এডমন্টনেই বড় হয়েছেন এবং ফুটবলার হিসেবে গড়ে উঠেছেন ২৮ বছর বয়সী সেলেনিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি যেখানে বড় হয়েছি এবং ফুটবলার হয়ে উঠেছি সেখানে হাজার হাজার দর্শকের সামনে বিশ্বকাপ খেলব এটা অনেক বড় প্রাপ্তি। শুধু নিজের সেরাটা দিতে চাই। যখন এডমন্টনে নামব সেটা হবে আমার জন্য সবচেয়ে আবেগী একটা দিন।’ এবার বিশ্বকাপে কানাডা গ্রুপপর্বে এডমন্টনে চীন ও নিউজিল্যান্ড এবং কুইবেকে হল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলবে।
×