ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপির হঠাৎ ভারতপ্রীতি!

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ২৩ মে ২০১৫

বিএনপির হঠাৎ ভারতপ্রীতি!

ভারতের বিজেপি সরকারের প্রধান শ্রী নরেন্দ্রনাথ মোদির বাংলাদেশ সফরকে বিএনপি স্বাগত জানাবে বলে খবর হয়েছে। আগামী মাসের প্রথমদিকে শ্রী মোদির বাংলাদেশ সফর করার কথা। বিএনপির এ সিদ্ধান্তকে বোধোদয় বলব না মতিভ্রম বলব, নাকি চক্রান্ত বলব? যে বিএনপি এতদিন ভারতবিরোধী কার্ড খেলে বাংলাদেশের একশ্রেণীর ‘খারাপ মানুষ’কে দলে টেনেছে, তাদের ভোট নিয়ে সরকার গঠন করেছে, সেই বিএনপির মুখে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানো ভূতের মুখে রাম নামই বলতে হবে। এতে দলটির ভারতবিরোধী হম্বিতম্বি ভাব আর থাকল না। একটি রাজনৈতিক দল যত দীর্ঘায়ু হবে ততই অভিজ্ঞতার আলোকে সকল প্রকার পশ্চাদপদতা ঝেড়ে ফেলতে ফেলতে আধুনিক ভবিষ্যতের দিকে যাবে এটাই স্বাভাবিক অথচ দলটির জন্ম থেকে গত সাড়ে তিন দশক ধরে এক জায়গায়ই দাঁড়িয়ে আছে, আদর্শিকভাবে স্ববিরোধিতার আবর্তে আটকা পড়ে আছে। গণতন্ত্র আধুনিক সমৃদ্ধ রাষ্ট্র ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান নীতি, যাতে কুশিক্ষা কূপম-ূকতার কোন স্থান নেই অথচ দলটি প্রথমদিন থেকেই (জিয়ার আমল থেকে) পবিত্র ধর্মের নামে রাজনীতি করে চলেছে। দলটির গঠনতন্ত্রের ‘লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য’ (Objectives and aim) সম্পর্ক হয়েছে ‘এমন একটি সুস্থ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে যাতে করে সাধারণ মানুষের মনে গণতন্ত্রের শেকড় গ্রথিত হয় (To create such a healthy environment where democracy will each the mind of the common people) দলটির গণতন্ত্রের কথা ঠিক ভারত বিরোধিতার মতোই স্ববিরোধী। এই যেমন দলের প্রধানের পদবি হলো চেয়ারপার্সন (Chairperson), এটি বিদেশী ভাষা এবং এই পদবির ব্যবহার কোনভাবেই common people বা সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা নয়, বরং ‘চেয়ারপার্সন’ বলে দলীয় প্রধানকে সাধারণ মানুষ থেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখা হয়েছে। আবার ডাকা হয় ‘ম্যাডাম’ বলে, যা তাঁকে ‘মনিব’ এবং জনগণকে ‘চাকরের’ পর্যায়ে ঠেলে দেয়া হয়েছে। চেয়ারপার্সনের ক্ষমতাও অসীম। Chairperson পার্টির প্রধান নির্বাহী এবং তিনি দলের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ, মনিটর এবং সমন্বয় সাধন করবেন। এ লক্ষ্যে দলের জাতীয় কাউন্সিল, স্থায়ী কমিটিসহ সকল কমিটির ওপর একচ্ছত্র ক্ষমতা ভোগ করেন এবং ঐ সব কমিটি ইচ্ছে করলে ভেঙ্গে দিতে পারেন বা যে কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন। (The chairperson as the chief executive of the party and for this will have full authority over national council, standing committee, executive committee ... if necessary can take punitive measures against the members of the above committee... if necessary can cancel national council, national standing committee... ). পার্টি গঠনতন্ত্রের এই কথাগুলো এ জন্যে উল্লেখ করলাম যে, একদিকে গণতন্ত্রের কথা বলব অথচ দলীয় প্রধানকে দ মুে র কর্তা বানানো হবে, দুটো এক সঙ্গে চলতে পারে না। ভারতবিরোধিতার কথা বলবে আবার ‘তলে তলে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করবে, এটি মোনাফেকী ছাড়া কিছুই নয়। মানুষকে ধারণা দেয়া হবে বিএনপি একটি ভারতবিরোধী দল অথচ বাস্তবতা হলো সম্পূর্ণ বিপরীত। জন্মলগ্ন থেকে এভাবে বিএনপি ভেতরে যাই থাকুক ওপরে ওপরে ভারত বিরোধিতার একটা ভ-ামি করে আসছে। বস্তুত সুযোগ পাচ্ছে না বলে অর্থাৎ ভারতের শাসকদলগুলো ওদের বিশ্বাস করে না বলেই মান বাঁচাতে বিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। যেমন একটি উদাহরণ দিচ্ছি খালেদা জিয়া একবার ভারতে সরকারী সফর শেষে দেশে ফিরলে বিমানবন্দরে সাংবাদিকরা ‘গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি’ সম্পর্কে কোন আলোচনা হয়েছে কিনা প্রশ্ন করলে উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘ওহ আমি তো ভুলেই গেছিলাম।’ শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ৩৩ হাজার কিউসেক পানির নিশ্চয়তাসহ ৩০ বছরমেয়াদী গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি করেন এবং ৩০ বছর পার হলে অটোমেটিক মেয়াদ বৃদ্ধি পাবেÑ খালেদা জিয়া এই চুক্তিকে বললেন ‘নতজানু চুক্তি’ এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিকিয়ে দেয়া হয়েছে। একইভাবে শেখ হাসিনা যখন ১৯৮৭ সালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি’ করলেন, তখন খালেদা জিয়া বললেন, এই চুক্তির ফলে ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে। কথাগুলো এ জন্যে বললাম যে, এই দলটি মূলত পাকিস্তানের অর্থে-অস্ত্রে লালিত রাজনৈতিক সংগঠন। আর তাই মুখে যত গণতন্ত্রী বা জাতীয়তাবাদী বলে দাবি করুক ভেতরে ভেতরে কিন্তু চরম সাম্প্রদায়িক এবং জঙ্গী। যে কারণে পাকিস্তানের নির্দেশে একাত্তরের রাজাকার-আলবদর তথা জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে খালেদা জিয়ার এতটুকু খারাপ লাগে না। তার দল তো গঠিতই হয়েছে রাজাকার-আলবদরদের নিয়ে। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াই তো মুসলিম লীগ-ভাসানী ন্যাপকে কোমা থেকে তুলে এনে প্রাণ দিয়েছিলেন। শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী, আলিম-মান্নানকে মন্ত্রী বানিয়েছিলেন, গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে এনে আবার জামায়াতী রাজনীতি চাঙ্গা করার ব্যবস্থা করে গেছেন। খালেদা সেই পথেই চলছেন। জিয়া ২৫ মার্চও পাকিস্তানী সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসে নিয়োজিত ছিলেন, যে অস্ত্র আনা হয়েছিল বাঙালীদের মারার জন্য। আর খালেদা তো যুদ্ধের ৯ মাস আরাম-আয়েশে ক্যান্টনমেন্টে কাটিয়েছেন। তাই তো খালেদা তাঁর স্বামী থেকে একধাপ এগিয়ে হিজবুল মুজাহিদীন, হিযবুত তাহ্রীর, হেফাজত, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ইত্যাদি বানাবেন এতে অবাক হওয়ার কী আছে? দেশে এই জঙ্গীদের পৃষ্ঠপোষকতা দেবে, নাশকতা করার জন্য ভারতে পাঠাবেন, আবার প্রকাশ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে স্বাগত জানাবেন, এই হিপোক্রেসিই তো বিএনপির নীতি। এটাই বিএনপি, এটাই খালেদা জিয়া। এভাবে দলটির মোনাফেকির অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে। লেখার কলেবরও বেড়ে যাবে। তাই আমার ব্যক্তিগত একটি অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে চাই। বঙ্গবন্ধুকন্যা আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি বর্তমান বিশ্ব নেতৃত্বের প্রথম কাতারে উঠে এসেছেন, তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের সকল সূচকে বিস্ময়কর উত্থান ঘটেছে বলে পশ্চিমা দুনিয়াও অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে, সেই তিনিই আমাকে সাংবাদিকতা জগত থেকে তুলে নিয়ে ২০০১ সালের অক্টোবরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামান। নির্বাচনী প্রচারে সবচে’ কার্যকর প্রক্রিয়া হচ্ছে উঠোন বৈঠক। এমনি এক বড় বাড়িতে অর্থাৎ অনেক ভোটের এক বাড়িতে উঠোন বৈঠকে আমি নারীদের দরজার আড়াল থেকে প্রশ্ন করার (যদি থাকে) জন্য আহ্বান জানাই। তখন নারীদের পক্ষ থেকে কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়, সে সময় খালেদা জিয়া তাঁর নির্বাচনী প্রচারে সারাদেশে চষে বেড়াচ্ছিলেন। আমি সে সবের উত্তর এভাবে দেই, যেমন- প্রশ্ন : আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে বাংলাদেশ ভারত হয়ে যাবে? উত্তর : ১৯৯৬-২০০১ এই ৫ বছর আওয়ামী লীগ আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, বাংলাদেশ কি ভারত হয়ে গেছে? হয়নি অর্থাৎ খালেদা জিয়া মিথ্যে বলছেন। প্রশ্ন : আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে মসজিদে তালা পড়বে, আজানের বদলে উলুধ্বনি হবে...? উত্তর : ঐ ৫ বছর কি মসজিদে তালা পড়েছিল? কোথাও, কোন মসজিদে কি আজানের বদলে উলুধ্বনি পড়েছে? পড়েনি। অতএব, এটিও খালেদা জিয়ার মিথ্যা প্রচার। বস্তুত জিয়া ছিল মিলিটারি সৈনিক, বন্দুকের নলের জোরে ক্যু করে ক্ষমতায় এসে তারপর গড়হবু রং হড় ঢ়ৎড়নষবস বলে টাকা ছিটিয়ে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ব্যবহার করে বিএনপি নামক এই খিচুড়ি বানিয়েছিলেন। জিয়া নিহত হওয়ার পর বিচারপতি সাত্তার চেয়ারম্যান এবং খালেদা জিয়া ভাইস-চেয়ারপার্সন হন। লক্ষ্য শেখ হাসিনার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড় করানো। শিক্ষার পরিধি মাধ্যমিক না পেরুলেও জেনারেলের স্ত্রী ম্যাডাম তো, তাতেই চলবে। কিন্তু বাদ সাধলেন বিচারপতি সাত্তার। তিনি কিছুতেই পদ ছাড়ছিলেন না। তারপর একদিন মেজর জেনারেল মাজেদুল হক ও কর্নেল জাফর ইমাম দুই মিলিটারি সাত্তার সাহেবের ধানমি র বাড়িতে গিয়ে অস্ত্র উঁচিয়ে তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করান। খালেদা হয়ে যান চেয়ারপার্সন অর্থাৎ খালেদাও জিয়ার মতো মিলিটারি ক্যুর মাধ্যমেই দলীয় ক্ষমতার শীর্ষে আরোহণ করেছিলেন। একশ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধে অবদানহীন সুশীল বা বুদ্ধির ফেরিওয়ালারা আহা বেশ বেশ বলে ওই সব অপকর্ম সমর্থন করেছেন, এখনও এমাজউদ্দিন, শাহিদুজ্জামান, বদি মজুমদার, আসিফ নজরুলরা করে চলেছেন। তাও সুশীল সমাজ বা ঈরারষ ঝড়পরঃরু নাম দিয়ে। এদের সম্পর্কে দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. আবুল বারাকাত একটি ‘কম দামের বড় কাগজে’ বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন। এরপর আর কিছু বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। বিএনপি যে দেশপ্রেমবিবর্জিত এবং হিপোক্র্যাট একটি দল তার প্রমাণ এরা ’৭৫-পরবর্তী ৪০ বছর ধরে ‘মুজিব-ইন্দিরা’ স্থলসীমান্ত চুক্তিকে (খইঅ)’ ‘গোলামির চুক্তি’ বলে আসছিল। আজ যখন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কংগ্রেস আমল থেকে শুরু করে বর্তমান ভারতের বিজেপি সরকারের সঙ্গে বিশেষ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রনাথ মোদির সঙ্গে আলোচনা করে স্থলসীমানা চুক্তিকে ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভা উভয় পার্লামেন্টে সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন করিয়ে আনলেন, যা সেই পাকিস্তান আমল থেকে আমাদের জন্য এক অমীমাংসিত সমস্যা হয়ে আসছিল। বিগত ৬ দশকেরও অধিককাল ধরে যা মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির ধারাবাহিকতায় সমাধানের চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত এবং আগামী মাসে মোদির বাংলাদেশ সফরকালে সমাপ্ত হবে, তখন বিএনপি স্বাগত জানাচ্ছে নরেন্দ্র মোদিকে। বাংলাদেশ সরকার বা প্রধানমন্ত্রীর নামও নিচ্ছে না। নেবে কেমন করে, কোন্ মুখে, গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি, পার্বত্য শান্তি চুক্তি, সমুদ্র বিজয় বা সমুদ্র সীমানা নির্ধারণ হয়ে গেল এবং এখন হচ্ছে স্থল সীমানার (খইঅ) সমাধান, সবই হচ্ছে শেখ হাসিনার সাহসী, দূরদর্শী নেতৃত্ব ও কূটনীতির সাফল্য হিসেবে। এখন তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিও সমাধানের পথে অথচ জিয়া বা খালেদা এমন একটি অর্জনও কি দেখাতে পারবেন, সবই তো লবডংকা। সুন্দর চেহারা দিয়ে সব জয় করা যায় না, মেধা লাগে। কাজেই শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাবেন কোন্ মুখে? মোদির দল কংগ্রেসের প্রতিদ্বন্দ্বী, ভারতবিরোধী নয়, এটা খালেদার মেধা দিয়ে জানার কথা নয় বলে মোদির নির্বাচনের ফল প্রকাশের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই তাঁকে অভিনন্দন জানালেন, পলিটিক্যাল খিচুড়ি বিএনপি আর রাজাকার-আলবদর, জামায়াত-শিবির নেতারা দিল্লী দৌড়ালেন, ভাবলেন এবার বন্ধু পাওয়া গেছে, আওয়ামী লীগকে শায়েস্তা করা যাবে, কিন্তু নির্বোধরা জানে না, সোনিয়া-মোদির কাছে ভারতের স্বার্থ সবার আগে। তাই তারা জানে প্রতিবেশী কার সঙ্গে কী আচরণ করতে হবে? মোদিও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মতো ইউনিভার্সিটি এডুকেটেড। তাঁরা কি ভুলে গেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী বাংলাদেশ সফরে এলে তার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় নিয়ে খালেদা তা বাতিল করে দিয়েছিলেন, মোদি কি ভুলে গেছেন, খালেদা ভারতের পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কিভাবে ক্ষমতায় থাকতে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন, ক্ষমতায় না থেকেও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বলছেন ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’, মোদি কি ভুলে গেছেন ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালানের কথা, ভুলে কি গেছেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিস্ফোরণ বা মুম্বাইর বিস্ফোরণের কথা, ঐ সব নাশকতাকারীকে জিয়া খালেদাই তৈরি করে পাঠিয়েছিল। দেশের অভ্যন্তরেও খালেদা ও তাঁর দল এবং জোট কিভাবে হেফাজতসহ ধর্ম ব্যবসায়ীদের লালন-পালন করছেন। কেন খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বিরোধিতা করেন, কেন এবং কারা রাজীব হায়দার, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অভিজিত রায় ও অনন্ত বিজয় দাশকে হত্যা করে চলেছে। বাঙালী সার্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠানে (এক কলামে ভুলক্রমে বলেছিলাম উদীচীর অনুষ্ঠানে, দুঃখিত) বোমা হামলা চালায়, কী জঘন্যভাবে হিন্দু সম্প্রদায়সহ সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করছে, এ সবই করছে পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই প্রেসক্রিপশনে, অর্থে-অস্ত্রে, এসব মোদিরও অজানা নয়। তারপরও বলতে হয়, মোদির বাংলাদেশ সফরকে স্বাগত জানানোর পেছনে, দলটির ইতিহাস বলে, খালেদার যে ‘ডিপ-রুটেড’ দুরভিসন্ধি থাকতে পারে তা উড়িয়ে দেয়ার নয়। তবে স্বস্তির বিষয় হলো দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি যথার্থ অর্থেই সচেতন। ঢাকা, ২২ মে ২০১৫ লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
×