ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এফবিসিসিআইর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

বাজেটে ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দেয়া হবে

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২২ মে ২০১৫

বাজেটে ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দেয়া হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের স্বার্থে ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে বর্তমান সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা ব্যবসা করতে ক্ষমতায় আসিনি। আমরা ব্যবসায়ী নই। আমরা দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করি। আর তাই তো নিজেদের সুবিধার জন্য নয়, দেশের ব্যবসায়ীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা তৈরি করে দিচ্ছি। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে তাকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বহুল আলোচিত ও দীর্ঘ ৪১ বছরের প্রতীক্ষিত ঐতিহাসিক সীমান্ত চুক্তি অনুমোদিত হওয়ায় এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়। এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন এ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বার নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীদের জন্য আগামী বাজেটে প্রণোদনা দেয়া হবে। তবে কী দেয়া হবে সে বিষয়ে এখন কিছু বলব না। বাজেট উত্থাপনকালে অর্থমন্ত্রীই তা জানাবেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে। একইসঙ্গে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কও উন্নত করছে। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশে রফতানির পাশাপাশি দেশেও বাজার সৃষ্টি করতে হবে। দেশের জনগোষ্ঠীর চাহিদার চেয়ে বেশি খাদ্য উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যত বাড়বে, অর্থনৈতিক উন্নয়নও তত দ্রুত গতিতে হবে। ভারতের সংসদে বহুল প্রতীক্ষিত স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল পাস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বার্থে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছিলেন সরকার এখন সেসব পদক্ষেপই বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, ছিটমহলবাসীদের দুর্দশার কথা চিন্তা করে বঙ্গবন্ধু ক্ষমতায় থাকাকালে এ চুক্তির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেটা পঁচাত্তরের কালরাত পরবর্তী দুঃসময়ে বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আমরা তার সেসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছি। এ সময় স্থল সীমান্ত চুক্তি সম্পাদন করতে সংবিধান সংশোধনের অনুমোদন দেয়ায় ভারতের সংসদ সদস্যদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, চুক্তি বাস্তবায়নে আমরা যেমন উদ্যোগ নিয়েছি, তেমনি এখন সীমান্তবাসীর খাবার, শিক্ষা, যোগাযোগসহ সব ধরনের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ভারতের সঙ্গে স্থল সীমান্ত চুক্তির জন্য ৪০ বছর ধরে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হতো না। তিনি বেঁচে থাকলে অনেক আগেই এ চুক্তি বাস্তবায়ন হতো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি আমার আমলে বাস্তবায়ন হওয়ায় আমি খুশি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে আমি সন্তুষ্ট। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক মাত্রা ছাড়িয়ে নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে বলেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় দেশের জনগোষ্ঠীর চাহিদার চেয়ে বেশি খাদ্য উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যত বাড়বে, অর্থনৈতিক উন্নয়নও তত দ্রুত গতিতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ বলেন, বর্তমান সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার। সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে ঐতিহাসিক সীমান্ত চুক্তি অনুমোদন করেছে ভারত সরকার। এর আগে বর্তমান সরকার মিয়ানমার ও ভারতের কাছ থেকে সমুদ্র জয় করেছে। এখন আমরা সামুদ্রিক অর্থনীতি ভাবছি। আশা করছি, সমুদ্র সম্পদ আহরণ করা গেলে দেশ আরও এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তর হতে যাচ্ছি। মানুষের মাথাপিছু আয়, জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাচ্ছে। তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ এক নম্বর হওয়ার পথে। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতা ও এফবিসিসিআইয়ের প্রথম সহ-সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী, ব্যবসায়ী নেতা, আবদুল মাতলুব আহমদ, আবুল কাশেম আহমেদ ও দেওয়ান সুলতান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×