ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রামাদির পতন এক বিপর্যয় ॥ হোয়াইট হাউস কর্মকর্তারা

প্রশ্নবিদ্ধ ওবামার কৌশল

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২১ মে ২০১৫

প্রশ্নবিদ্ধ ওবামার কৌশল

ইসলামিক স্টেটের হাতে ইরাকের আনবার প্রদেশের রাজধানী রামাদির পতন ওবামা প্রশাসনের ইরাক কৌশল নিয়ে নতুন নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীকে পুনরুজ্জীবিত করার মার্কিন প্রচেষ্টা এবং চলতি বছর শেষ হওয়ার আগে মসুল শহর পুনর্দখল করার দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরাকের দৃষ্টি দেয়ার সার্থকতা নিয়ে। রামাদির সর্বশেষ পরিস্থিতি মঙ্গলবার মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে অবহিত করা হয়। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়। তবে ইরাক কৌশল নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যালোচনা চলছে না বলে কর্মকর্তারা জানান। খবর ওয়াশিংটন পোস্টের। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জোশ আর্নেস্ট বলেন, রামাদির পতন নিঃসন্দেহে এক ‘বিপর্যয়’ কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি অক্ষুণœ রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি গত মাসে তিকরিতে জঙ্গীদের পরাজয় এবং শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ অভিযানে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের এক বড় নেতা নিহত হওয়ার মতো সাফল্যগুলোর কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু চলতি সপ্তাহে ইরাকের সবচেয়ে বড় প্রদেশ এবং সংখ্যালঘু সুন্নি অধ্যুষিত আনবারের রাজধানী রামাদি থেকে ইরাকি সৈন্যদের দ্রুত হটে যাওয়া মার্কিন প্রশাসনকে স্পষ্টতই হতবাক করেছে। কারণ প্রশাসন যুক্তি দেখিয়ে এসেছে যে, প্রশাসন ইসলামিক স্টেটকে দুর্বল ও পরাজিত করার বিষয়ে ওবামার লক্ষ্য অর্জনে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেন যে, তাদের ইরাকি বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করা এবং বিমান থেকে সেই বাহিনীকে সহায়তা করার কৌশল অক্ষুণœ রয়েছে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, আমরা ঐ কৌশল বাস্তবায়নের আরও ভাল উপায়ের দিকে দৃষ্টি দিতে পারি না। হোয়াইট হাউসের ঐ বিবৃতিতে বলা হয়, ওবামা ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদির প্রতি দৃঢ় মার্কিন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি আনবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় রেখে স্থানীয় উপজাতীয়দের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ জোরদার করা, ইরাকি সেনাবাহিনীতে আরও লোক ভর্তি করা, স্থানীয় পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণদান এবং রামাদি পুনর্দখলের এক সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় ইরাকের মন্ত্রিসভার প্রশংসা করেন। রামাদি থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং ঘটনাবলীর মার্কিন মূল্যায়ন হতে আভাস পাওয়া যায় যে, গত সপ্তাহের শেষ দিকে ইসলামিক স্টেট জঙ্গীরা একযোগে কয়েকটি ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা চালানোর পর নিরাপত্তা বাহিনী রামাদি থেকে হটে যায়। নিরাপত্তা বাহিনী এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জঙ্গীদের প্রতিহত করে রেখেছিল। জঙ্গী দলগুলোর ওপর হামলা চালাতে মার্কিন ও কোয়ালিশন বিমান বহরের সামর্থ্য কেবল গত সপ্তাহান্তের বালুঝড়ের কারণেই নয়, শহুরে এলাকায় বিমান হামলার সঠিক স্থানগুলো চিহ্নিত করে দেবে স্থলভাগে এমন ব্যক্তিদের অভাবেও ব্যাহত হয়। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পীকার জন এ বোয়েনার রামাদির পতনের জন্য ওবামার প্রতি দোষারোপ করেন। বোয়েনার বলেন, এ হুমকিকে যতখানি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া উচিত ছিল, ওবামা সেটি ততখানি গুরুত্বের সঙ্গে নেননি। যখন রামাদির মতো বড় এক ইরাকি শহর ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক এ্যান্ড লেভান্টের (আইসিল) হাতে অধিকৃত হয়, তখন প্রশাসন বলছে, ঠিক আছে, ‘এটি এক সাময়িক বিপর্যয় মাত্র’- এটি বাগদাদ থেকে ৭০ মাইল দূরে অবস্থিত। আইসিল ইসলামিক স্টেটের এক বিকল্প নাম।
×