ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শাহজালালে বিপুল মুদ্রা নিয়ে ধরা পড়ল সোনা চোরাচালানি

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২১ মে ২০১৫

শাহজালালে বিপুল মুদ্রা নিয়ে ধরা পড়ল সোনা চোরাচালানি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সোনা কিনতে টাকা লাগে। সেই টাকা কিভাবে ঢাকা থেকে পাঠানো হয় বিদেশে, এবার সে কথাই জানালেন এক মুদ্রাপাচারকারী। তার নাম আব্দুল কাদির লালন। মঙ্গলবার গভীর রাতে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে বিপুল পরিমাণ মুদ্রাপাচার করার সময় তাকে হাতে-নাতে ধরা হয়। এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের একটি চৌকস দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আগে থেকেই ওঁৎপেতে থাকায় ধরা পড়েন কাদির। এএসপি তানজীনা আক্তার ইভা জানান- কাদির সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর যাবার জন্য বিমানবন্দরে আসেন। বহির্গামী ৩নং গেট দিয়ে তিনি যখন লাগেজ নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন, তখনই তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। এ সময় লাগেজ খুলে দেখা যায়, বিপুল পরিমাণ দেশী-বিদেশী মুদ্রাÑ বাংলাদেশী মুদ্রায় ২ কোটি ১০ লাখ ৪৬ হাজার ৬শ’ টাকা। এগুলো রাখা ছিল একটা ট্রলি ব্যাগে, যা সরাসরি চেক ইন কাউন্টারে বুকিং করে দেয়া হতো। ওই ব্যাগের তলায় একাধিক স্তরে স্কচ ট্যাপ দিয়ে আটকিয়ে লুকিয়ে রাখা ছিল। এছাড়া কাদিরের জুতো ও শরীরের একাধিক স্থানেও মুদ্রা লুকানো ছিল। উদ্ধারকৃত মুদ্রার মধ্যে রয়েছে রিয়েল, ডলার, ইউরো, দিনার, দিরহাম ও বাংলাদেশী টাকা। প্রশ্ন ওঠেছেÑ কিভাবে স্ক্যানার ফাঁকি দিয়ে কাদির মুদ্রার লাগেজ নিয়ে ভেতরে প্রবেশের সুযোগ পেল। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্ক্যানারে দেয়ার পর তাতে আপত্তিকর কিছুই নেই বলে ট্যাগ লাগানো হয়। তারপর এয়ারর্পোট আর্মড পুলিশের একজন নারী সদস্যের সন্দেহের উদ্রেক হয়। তিনি তাৎক্ষণিক তাকে আটকে দেন এবং চ্যালেঞ্জ করেন। এতে কাদির থতমত খেয়ে যান। তারপর তাকে নিয়ে যান এপিবিএন অফিসে। এখানে তার লাগেজ চেক করা হলে দেখা যায় তার নিচে একাধিক তিনটে স্তরে সাজানো লুকানো মুদ্রা। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাদির স্ক্যানারে দায়িত্বরত সিভিল এ্যাভিয়েশন ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই লাগেজ নিয়ে নির্বিঘেœ পার হয়ে যান। তাকে কেউ কিছু বলেনি। যদি এপিবিএন না ধরতো তাহলে চেকইন কাউন্টারে বুকিং দিয়ে তিনি অনায়াসে পার পেয়ে যেতেন। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়। থানা পুলিশ জানায়, কাদির এ সব মুদ্রা নিয়ে সিঙ্গাপুর যাচিছলেন, সোনা কিনে আনার জন্য। তিনি সোনা চোরাচালানী চক্রের সদস্য। তার বাড়ি নীলফামারির সৈয়দপুরে। ২৪০ কেজি আমদানি ওষুধ জব্দ ॥ এদিকে একই রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিযান চালিয়ে ২৪০ কেজি আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধ জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা। এগুলো এ্যামিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে পাকিস্তান থেকে আনা হয়। হরমোন, গর্ভপাত, এলার্জি, হাইপারটেনশন, ফাংগাল ইনফেকশন, ওপথালমিক জাতীয় রোগের জন্য এ সব ব্যবহৃত হয়। ভেজাল পানি ব্যবসায়ীর কারাদ- ॥ রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় ভেজাল পানির কারখানায় অভিযান চালিয়ে কারখানার মালিকসহ তিনজনকে জরিমানাসহ সাজা প্রদান করেছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে পানি বোতলে ভরে বাজারজাত করার অপরাধে বুধবার দুপুরে অভিযান শেষে ওই কারখানার মালিক এস এ মালেক, তার ছোট ভাই এম এ রহিম ও ম্যানেজারকে জরিমানাসহ সাজা প্রদান করা হয়। তবে ম্যানেজারের নাম জানা যায়নি। র‌্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মেজর মোঃ মাকসুদুল আলম জানান, মালিবাগ বিজ্ঞান কলেজের সামনের একটি কারখানায় এ অভিযান চালানো হয়। অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে পানি বোতলে ভরে বাজারজাত করার অপরাধে কারখানার মালিককে দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং সরকারী কাজে বাধা দেয়ার জন্য রহিম ও কারখানার ম্যানেজারকে সাত দিনের কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। কারাবন্দীর মৃত্যু ॥ রাজধানীতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের এক নারী আসামির। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢামেকের নতুন ভবনে ৫০২নং ওয়ার্ডে ওই আসামির মৃত্যু হয়। আসামির নাম তানিয়া (৫০)। সে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার আব্দুল মালেকের মেয়ে। চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা ॥ রাজধানীর কোতয়ালী থানার রাজার দেউড়ি এলাকায় মোবাইল চোর সন্দেহে বাদল মিয়া (৪৫) নামে এক রং মিস্ত্রিকে পিটিয়ে আহত করেছেন স্থানীয়রা। রাজার দেউড়ি এলাকার ৪২ নম্বর আরমান সাহেবের বাসায় বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল ৫টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত বাদল মিয়া বংশাল নয়াবাজার এলাকায় থাকেন। বাদল মিয়ার শ্যালক নাজির উদ্দিন জানান, বাদল মিয়া ও আবু তালেব হাওলাদার মিলে তিন দিন ধরে আরমান সাহেবের বাসায় রংয়ের কাজ করছিলেন। সকালে মালিকের ছেলে রোহান মোবাইল চার্জ দেয়। এর কিছুক্ষণ পর মোবাইলটি না পেলে তাদের সন্দেহ করে। এরপর তাদের মারধর করে। পরে পাশের মসজিদ থেকে ইমামকে ডেকে এনে তাদেরসহ বাড়ির সবাইকে চাল পড়া খাওয়ায়। এর কিছুক্ষণ পর বাড়ির সবাই বমি করা শুরু করে। তবে বাদল মিয়া রক্ত বমি করা শুরু করে। এতে সবার সন্দেহ বেড়ে যায়। পরে তারা আবার বাদল মিয়াকে মারতে থাকে। এক পর্যায়ে বাদল মিয়া অচেতন হয়ে যান। তারা খবর পেয়ে দুপুর ২টায় বাদল মিয়াকে উদ্ধার করতে যান। পরে ওই বাড়ির সবাই বাদলকে পুলিশের হাতে দিয়ে দেয়। পুলিশ প্রথমে তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে এবং পরে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসে।
×