ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৪২ বছর কোমায় থাকার পর মারা গেছেন সেবিকা অরুণা

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১৯ মে ২০১৫

৪২ বছর কোমায় থাকার পর মারা গেছেন সেবিকা অরুণা

ধর্ষণের পর ৪২ বছর কোমায় ছিলেন সেবিকা অরুণা শানবাগ (৬৮)। সোমবার মুম্বাইয়ে কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল (কেইএম) হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন। এই হাসপাতালেরই সেবিকা ছিলেন অরুণা। আর এখানেই তাঁর ওপর বর্বর হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। খবর এনডিটিভি অনলাইনের। নিজ কর্মস্থল এডওয়ার্ড হাসপাতালেরই এক কর্মীর দ্বারা ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটে ১৯৭৩ সালে। অরুণার বয়স তখন ২৬ বছর। ওই হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী সোহনলাল ভারতা বাল্মিকী ধর্ষণ করেন অরুণাকে। ধর্ষণের পর কুকুর বাঁধার শিকল দিয়ে অরুণার শ্বাসরোধ করার চেষ্টা চালানো হয়। পরে ফেলে রাখা হয় হাসপাতালের বেসমেন্টে। ১১ ঘণ্টা সেখানেই পড়ে ছিলেন অরুণা। উদ্ধারের সময়ও অরুণার গলায় শেকল বাঁধা ছিল। এতে তাঁর মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন অরুণা। কয়েকদিন আগে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) অরুণাকে রাখা হয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, অরুণা ফুসফুসের প্রদাহে ভুগছিলেন। তাঁকে শ্বাসপ্রশ্বাস চালানোর কৃত্রিম ব্যবস্থার মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল। এনডিটিভির খবরে জানানো হয়, হাসপাতালের দত্তক নেয়া পশুদের জন্য বরাদ্দ করা খাবার চুরি করতেন বাল্মিকী। এ কারণে অরুণা প্রায়ই তাকে বকাবকি করতেন। এরপর তিনি এ ঘটনা ঘটান। অরুণার এই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে ‘অরুণাস স্টোরি’ নামে একটি বই লেখেন পিংকি ভিরানি। তিনি ২০১১ সালে ভারতের সুপ্রীমকোর্টে কোমায় থাকা অরুণার খাবার বন্ধ করে তাঁকে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়ার আবেদন করেন। সুপ্রীমকোর্ট তাঁর আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। হাসপাতালের সাবেক ও বর্তমান কর্মীরাও চেয়েছেন অরুণা এভাবেই বেঁচে থাকুন। গত ৪২ বছর ধরে হাসপাতালের সেবিকারা পরম যতেœ রেখেছেন অরুণাকে। এতদিন বিছানায় থাকার পরও অরুণার পিঠে কোনো ক্ষত তৈরি হয়নি। সেবিকারা তাঁর ডায়াপার বদলে দিতেন, খাওয়াতেন। অরুণা ছটফট করলে তাঁকে আরাম দেয়ার চেষ্টা করতেন। হাসপাতালের নিচতলার একটি কক্ষে অরুণাকে রাখা হয়। সেখানে সব সময়ই কয়েকজন তাঁর সেবা করতেন।
×