ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

হবিগঞ্জের রাজ্জাকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১৮ মে ২০১৫

হবিগঞ্জের রাজ্জাকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতারকৃত হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জের দুই সহোদর মহিবুর রহমান বড় মিয়া ও মুজিবুর রহমান আঙ্গুর মিয়ার সঙ্গে জড়িত আসামি হিসেবে তাদের চাচাত ভাই আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আগামী ২১ জুনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে গ্রেফতারকৃত তিনজনকে সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এদিকে নেত্রকোনার দুই রাজাকার ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের পঞ্চম সাক্ষী সিদ্দিকুর রহমান জবানবন্দী প্রদান করেছেন। আজ নতুন সাক্ষীর জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। পটুয়াখালীর রাজাকার কমান্ডার ফোরকান মল্লিকের পক্ষে সাফাই সাক্ষী শেষ হয়েছে। ২৮ মে থেকে এই মামলার যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১ ও ২ এ আদেশগুলো প্রদান করেছেন। হবিগঞ্জ জেলার রাজাকার আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। রবিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -২ এ আদেশ প্রদান করেছেন। অন্যদিকে হবিগঞ্জের তিন আসামির বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল এ অভিযোগ দাখিল করেন। পরে ২৫ মে তা আমলে নেয়ার বিষয়ে শুনানি ও আদেশের দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। গত ৩০ এপ্রিল একই মামলার আসামি বড় মিয়া-আঙ্গুর মিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন। সে সময় এ মামলার তদন্তকালে আব্দুর রাজ্জাকের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানিয়েছিলেন প্রসিকিউশন। এর আগে ২৯ এপ্রিল ধানম-ি কার্যালয় সেফহোমে এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করে তদন্ত সংস্থা। বড় মিয়া-আঙ্গুর মিয়া- আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ চারটি মানবতাবিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। সেফ হোমে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাপা মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ২১ জুনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে গ্রেফতারকৃত তিনজনকে সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রবিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। একই মামলার ওই ১২ আসামির মধ্যে কেশবপুরের রাজাকার কমান্ডার সাখাওয়াত হোসেন ছাড়া গ্রেফতার রয়েছে আরও তিনজন। তারা হলো- বিল্লাল হোসেন, আকরাম হোসেন ও ওজিয়ার মোড়ল। তাদের মধ্যে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর গত বছরের ২৯ নবেম্বর রাজধানীর উত্তরখান থেকে মুক্তিযুদ্ধকালীন শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অন্যদিকে গত ১২ মে বাকি ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। ঐদিনই রাতে তিন রাজাকারকে গ্রেফতার করে পরদিন ১৩ মে ঢাকায় ট্রাইব্যুনালে সোপর্দ করে যশোরের কেশবপুর থানা পুলিশ। ট্রাইব্যুনাল তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা পলাতক অন্য ৮ আসামি হলো- কেশবপুরের মোঃ ইব্রাহিম হোসেন, শেখ মোঃ মজিবুর রহমান, মোঃ আব্দুল আজিম সরদার, মোঃ আজিম সরদার, কাজী ওয়াহেদুল ইসলাম, মোঃ লুৎফর মোড়ল, মোঃ আব্দুল খালেক মোড়ল এবং মশিয়ার রহমান। রবিবার প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন ট্রাইব্যুনালে আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
×