ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার হটাতে বিদেশীদের প্রভাব কাজে লাগাতে চেয়েছিল দলটি ;###;জোট থেকে জামায়াতকে বাদ না দেয়ায় প্রভাবশালী অনেক কূটনীতিকও এখন ক্ষুব্ধ;###;সরকারের পাল্টা কূটনীতি এবং খালেদার জামায়াতপ্রীতিতে ওই প্রয়াস ভেস্তে যায়

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপির তৎপরতায় বিপর্যয় ॥ কূটনীতিতে ব্যর্থতা

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ১৮ মে ২০১৫

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপির তৎপরতায় বিপর্যয় ॥ কূটনীতিতে ব্যর্থতা

শরীফুল ইসলাম ॥ প্রভাবশালী দেশের কূটনৈতিকদের পক্ষ থেকে জামায়াতকে রাজনৈতিক জোট থেকে বাদ দেয়ার বিষয়ে বার বার তাগিদ দিলেও তাতে কর্ণপাত করছে না বিএনপি। দলীয় হাইকমান্ড বিভিন্ন মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোর লবিং করে জোটে জামায়াতকে রেখেই ক্ষামতায় যাওয়ার কৌশল নেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জামায়াত প্রশ্নে বিএনপির কূটনৈতিক তৎপরতা ব্যর্থ হয়। তবে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে আবারও নতুন করে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে বিএনপি। এ তৎপরতা সফল না হলে আগামী বছরের শুরুতেই আবার কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার চেষ্টা চালাবে দলটি। এদিকে বিএনপির যেসব সিনিয়র নেতারা আগে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে কাজ করতেন তাদের অধিকাংশই এখন সক্রিয় নেই। তবে বিএনপির কিছু নেতার পাশাপাশি জাতীয়তাবাদী সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এখন এ দায়িত্ব পালন করছেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, ও ড. ওসমান ফারুক কূটনীতিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন। তাদের মধ্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী এখন কারাগারে অবস্থান করছেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন। আর টানা অবরোধ চলাকালে রিয়াজ রহমান গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বিএনপির কার্যক্রম থেকে দূরে সরে গেছেন। সাবিহউদ্দিন আহমেদও আগের মতো সক্রিয় নেই। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে ড. ওসমান ফারুক কিছুটা কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া দেশে অবস্থান করে ড. আব্দুল মঈন খান ও রিয়াজ রহমানও এখনও এ বিষয়ে তৎপর রয়েছেন। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমেদ, ফরহাদ মাজহার ও ডাঃ জাফরউল্লাহ চৌধুরীসহ ক’জন জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবী বিএনপির পক্ষে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। টানা অবরোধ কর্মসূচী চলাকালে এমাজউদ্দীন আহমেদই জাতিসংঘের ঢাকা অফিসে গিয়ে একটি আবেদন দিয়ে দেশের রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে জাতিসংঘ মহাসচিবের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এরপর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়ে কিছুটা তৎপরতা শুরু হলেও আন্দোলন চলাকালে পেট্রোলবোমাসহ বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকা-ের কথা বিবেচনায় নিয়ে পরে আর বেশি দূর অগ্রসর হয়নি। অভিজ্ঞ মহলের মতে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশ বিএনপির সঙ্গে ২০ দলীয় জোটে জামায়াত থাকার বিষয়টিকে ভালভাবে নিতে পারছে না। তাদের ধারণা বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক জামায়াত থাকাতেই আন্দোলনে বেশি নাশকতা হয়েছে। তাই তারা এখন চায় বর্তমান সরকার মেয়াদ পূর্ণ করুক। আর আপাতত সরকারবিরোধী আন্দোলনে না যাওয়ার যে কৌশল বিএনপি নিয়েছে বিদেশী কূটনৈতিকদের পরামর্শেই তা নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে বিএনপি জোটের আন্দোলন চলাকালে পেট্রোলবোমাসহ নাশকতামূলক কর্মকা-ের বিষয়ে বিদেশী কূটনৈতিকদের অবহিত করার মাধ্যমে এ জোটের রাজনীতি সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দিতে সক্ষম হয়েছে বর্তমান সরকার। এছাড়া জাপান, চীন, রাশিয়া ও ভারতসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকার বিশ্ব দরবারে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। বিশেষ করে ভারত সরকারের সীমান্ত বিল পাস এ সরকারের একটি বড় কূটনৈতিক সফলতা। এ বিষয়টিকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছে কূটনীতিকরা। এছাড়া এ সরকারের আমলে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন খাতগুলোর সূচককেও ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে তারা। তাই দেশকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির চেয়ে তারা আওয়ামী লীগকেই বেশি যোগ্য মনে করছে। আর এখানেই আওয়ামী লীগের কাছে হেরে গেছে বিএনপি। আপাতত কূটনৈতিক তৎপরতায় কোন সফলতা অর্জনের সম্ভাবনা না থাকলেও একেবারে আশা ছাড়েনি বিএনপি। তাই এ বিষয়ে আবার নতুন করে চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। ইতোমধ্যেই বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ও আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেছেন ৩ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের অনিয়মের রেকর্ড তাদের কাছে আছে এবং যথা সময়ে তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া হবে। ৩ সিটি নির্বাচনের অনিয়মের রেকর্ডপত্রগুলো গুছিয়ে রেখেছেন বলেও তিনি জানান। ২০ এপ্রিল সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার কার্যক্রমে অংশ নেয়ার সময় রাজধানীর কাওরানবাজারে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের ক’টি গাড়ি ভাংচুর করে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। পরদিন ১৭ দেশের কূটনীতিকদের গুলশান কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে খালেদা জিয়ার বহরের ভাঙ্গা গাড়িগুলো প্রদর্শন করান বিএনপি নেতারা। এরপর বিদেশী কূটনীতিকরা এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেও পরে আর এ নিয়ে তেমন মাতামাতি করেননি তারা। অবশ্য এর আগে টানা আন্দোলন চলাকালে গুলশান কার্যালয়ে ডেকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করে আন্দোলনের যৌক্তিকতা সম্পর্কে ব্রিফ করেন। কিন্তু এ আন্দোলনে পেট্রোলবোমাসহ নাশকতামূলক কর্মকা- হওয়ায় বিদেশীরা বিএনপি জোটের আন্দোলনের প্রতি সায় না দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে তাগিদ দেন। অপরদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে আসছেন শুনে বিএনপির কিছু নেতা ও দলীয় কিছু বুদ্ধিজীবী মোদির সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাক্ষাত পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এছাড়া ভারতের সঙ্গে আবারও নতুন করে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে ভারতের তরফ থেকে এখনও নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়ার সাক্ষাতের বিষয়ে কোন আশ্বাস দেয়া হয়নি বিএনপিকে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের পক্ষ থেকে দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য সংলাপের মাধ্যমে উভয় পক্ষকে সমঝোতায় পৌঁছার জন্য মাঝেমধ্যেই আহ্বান জানানো হয়। আর এতেই বিএনপি মনে করে তারা হয়ত বিএনপির পক্ষ হয়ে সরকারকে চাপ দিচ্ছে। আর সরকারও বিদেশীদের সংলাপের আহ্বানকে সরাসরি উপেক্ষা না করে তাদের বলে থাকে বিএনপিকে আগে আন্দোলনের নামে নাশকতা করে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির জন্য ক্ষমা চাইতে হবে এবং জামায়াতকে ২০ দলীয় জোট থেকে বাদ দিতে হবে। তার পর সংলাপ হতে পারে। আর সরকারের এ অবস্থানের বিপরীতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বিদেশীদের বলে থাকেন বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। জামায়াত প্রশ্নে খালেদা জিয়া বিদেশীদের কাছে বরাবরই কৌশলী জবাব দিয়ে থাকেন। আর জোটে জামায়াতকে রাখার জন্যই যে খালেদা জিয়া কৌশলী ভূমিকা পালন করে থাকেন তা এতদিনে বিদেশীরাও বুঝে গেছেন। তাই প্রভাবশালী অনেক দেশের কূটনৈতিকরাও এখন বিএনপির ওপর কিছুটা ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে। সূত্র মতে, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দফায় দফায় আন্দোলন কর্মসূচী দিয়েও সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে ব্যর্থ হয় বিএনপি। এর পর ২০১৩ সালের সধ্যভাগ থেকে আন্দোলন জোরদারের পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করে দলটি। এ তৎপরতায় সফল হতে বিশ্বের প্রভাবশালী বিভিন্ন দেশে লবিস্ট নিয়োগ করার পাশাপাশি দেশের নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনুসসহ আরও কিছু বুদ্ধিজীবীকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। ২০১৩ সালের শেষের দিকে এ তৎপরতায় কিছুটা সফলতা পায় বিএনপি। জাতিসংঘের পাশাপাশি বেশ ক’টি প্রভাবশালী দেশ দলটির প্রধান দাবি আদায়ের পক্ষে অর্থাৎ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সমঝোতার জন্য তোড়জোড় চালায়। কিন্তু সরকারের তরফ থেকে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন চলাকালীন পেট্রোলবোমাসহ জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনাগুলো বিদেশী কূটনৈতিকদের কাছে তুলে ধরা হয়। এ ঘটনায় জামায়াত বেশি সক্রিয় ছিল এমন অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় একপর্যায়ে কূটনৈতিকদের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক জোট থেকে জামায়াতকে বাদ দিতে বিএনপিকে চাপ দেয়া হয়। কিন্তু ভোটের রাজনীতির কথা ভেবে বিএনপি তাতে রাজি না হওয়ায় কূটনৈতিকরাও কিছুটা হতাশ হয়। তাই নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা সফল না হওয়ায় বিএনপি ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোকে নিয়ে বেশ ক’দিন হরতালসহ কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচী পালনের পাশাপাশি নির্বাচন বর্জন করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিএনপির দিকে তাকিয়ে না থেকে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে নতুন সরকার গঠন করে ফেলে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আবার নতুন করে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করে বিএনপি। এবার সরকারের বিরুদ্ধে ভোটারবিহীন নির্বাচনের কথা বলে কিছুটা সহানুভূতি পাওয়ায় ধীরে ধীরে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে থাকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউন করতে ৩ জানুয়ারি বাসা ছেড়ে গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান নেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। ৫ জানুয়ারি ওই কার্যালয় থেকেই দেশব্যাপী টানা অবরোধ কর্মসূচী ঘোষণা করেন তিনি। একাধারে অবরোধ ও দফায় দফায় হরতাল পালন করেও আন্দোলন সফল না হওয়ায় ৯২ দিন পর ৫ এপ্রিল গুলশান কার্যালয় ছেড়ে বাসায় ফিরে যান খালেদা জিয়া। তবে বাসায় ফিরে যাওয়ার পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন। তিনি নেতিবাচক আন্দোলন ছেড়ে গুলশান কার্যালয় থেকে বাসায় ফিরে আসায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান। সেই সঙ্গে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন শুরু করার পাশাপাশি সব রাজনৈতিক দল এক সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের আহ্বান জানান। এক সময় কিছুটা চাপে রাখলেও এখন বিদেশীরাও যে বর্তমান সরকার মেয়াদ পূরণ করুক তা চায় এবং বিরোধী দলের নেতিবাচক আন্দোলন চায় না তা সম্প্রতি ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী ও ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি রবার্ট ওয়াটকিনসের বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়। ১০ মে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে তিনি বাংলাদেশকে একটি অগ্রসরমান দেশ হিসেবে উল্লেখ করে যথাসময়ে ভিশন-২০২১ অর্জন সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এমন অগ্রসরতার সময়ে ৯২ দিন টানা অবরোধ-হরতাল চলার মতো ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশা করা যায় বিষয়টি একটি সুষ্ঠু সমাধানের দিকে যাচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন জনকণ্ঠকে বলেন, আন্দোলনের আগে বিএনপির কূটনৈতিক তৎপরতা কিভাবে চলত তা আমার জানা নেই। তবে আপাতত বিএনপি আন্দোলনে নেই। দলের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে। তাদের মুক্ত করাই এখন প্রধান কাজ। তবে এখন দলের পক্ষ থেকে কোন ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা আছে কিনা বা কূটনৈতিকরা বিএনপির বর্তমান অবস্থাকে কিভাবে দেখছেন তা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলতে পারবেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ ক’জন সিনিয়র নেতা এখন জেলে। তারা আগে নিয়মিত বিদেশী কূটনৈতিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। মাঝেমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে মতবিনিময় করতেন। এখন আমরা যারা বাইরে আছি তারাও যোগাযোগ রাখছি কূটনৈতিকদের সঙ্গে। তবে আগের মতো হচ্ছে না। তবে আমরা কূটনৈতিকদের ওপর নির্ভরশীল নই। আমাদের নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে হবে। বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আসম হান্নান শাহ বলেন, দলের অনেক নেতা কারাগারে। এর মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী মূলত কূটনীতিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। কিন্তু তারা এখন কারাগারে অবস্থান করছেন। সরকার বিএনপির কূটনৈতিক তৎপরতা দুর্বল করতেই তাদের মামলায় জড়িয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। এ কারণেই বিএনপি চলমান রাজনৈতিক পরস্থিতিতে কূটনৈতিক তৎপরতায় সফলতা অর্জন করতে পারছে না।
×