ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

জ্বালানি-বিদ্যুতে আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি আট হাজার ৮শ’ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ১৮ মে ২০১৫

জ্বালানি-বিদ্যুতে আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি আট হাজার ৮শ’ কোটি টাকা

রশিদ মামুন ॥ সব ধরনের জ্বালানি তেল বিক্রিতে লাভ হলেও বিপিসির জন্য আসন্ন বাজাটে ৮০০ কোটি টাকা ভর্তুকি রাখা হচ্ছে। অন্যদিকে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় গতবারের চেয়ে আসন্ন বাজাটে ভর্তুকি হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে আট হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। জ্বালানি বিদ্যুতখাত মিলিয়ে আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি নির্ধারণ করা হয়েছে আট হাজার ৮০০ কোটি টাকা। জ্বালানি এবং বিদ্যুত মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত অর্থবছরের তুলনায় এবার বিদ্যুত ও জ্বালানিখাতে মোট ভর্তুকির পরিমাণ কমছে। বিগত ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে বিদ্যুত-জ্বালানিখাতে মোট ১২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি রাখা হয়। কিন্তু সব ধরনের জ্বালানিতে লাভ করায় বিপিসির ভর্তুকির অর্থ প্রয়োজন হয়নি। সেই হিসেবে বিদ্যুত-জ্বালানি উভয় খাত মিলেয়ে সরকারের ভর্তুকি সাত হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। পিডিবি বলছে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও দেশীয় বাজারে কমেনি। এতে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় কমানো সম্ভব হয়নি। দেশে তেলের দাম কমলে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় অনেকটা কমে যেত। সেক্ষেত্রে সরকারকে বিদ্যুতখাত বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হতো না। বিদ্যুতের বিক্রয়মূল্যে লোকসানের কারণে বাংলাদেশ এনার্জি কমিশনের (বিপিসি) কাছে দাম বৃদ্ধির আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু এখনও সেই আবেদনের সুরাহা হয়নি। এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন দাম বৃদ্ধি হবে কি না সে সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। তবে সরকার চাইছে জ্বালানির লাভ বিদ্যুতে ভর্তুকির মাধ্যমে সমন্বয় করতে। এজন্য আপাতত জ্বালানি তেলের দাম কমার কোন সম্ভাবনা নেই। বিপিসি সূত্র জানায়, এখন অকটেন ও পেট্রোলে লিটার প্রতি বিপিসি লাভ করছে ৩৫ টাকা, কোরোসিনে যা ১৪ টাকা, ডিজেলে যা ১৫ টাকা, ফার্নেসে তা ২০ টাকা এবং জেড ফুয়েলে লিটারে ১৯ টাকা লাভ হচ্ছে। অন্যদিকে পিডিবি বলছে, উৎপাদন ও বিক্রিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে পার্থক্য এক টাকা ৬৭ পয়সা। এই হারে বছরে প্রায় সাত হাজার ৫৬০ কোটি টাকা বিদ্যুতখাতে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হবে। যার পুরোটাই পিডিবিতে ঋণ হিসেবে দিয়ে থাকে অর্থ বিভাগ। যদিও এই অর্থ কোনদিনই পরিশোধ করে না পিডিবি। ফলে তা অঘোষিত ভর্তুকি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জানতে চাইলে বিপিসি চেয়ারম্যান এ এম বদরুদ্দোজা রবিবার বিকেলে জনকণ্ঠকে বলেন, জ্বালানি তেলের সিংহভাগ আমদানি করা হয়। কয়েকমাস আগেও বিপিসি প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেল বিশ্ববাজার থেকে ৫৮ ডলারে আমদানি করছিল। গত বৃহস্পতিবার যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭ ডলারে। মাঝে কোন কোন সময় ৭৮ ডলারে প্রতি ব্যারেল আমদানি করতে হয়েছে। অস্থিতিশীল বিশ্ববাজারে যে জ্বালানি তেলের দাম আর বাড়বে না তা বলা যায় না। তবে এখন আমরা সব ধরনের জ্বালানি তেল বিক্রিতে লাভ করছি। অর্থবিভাগ সূত্র জানায়, অস্থিতিশীল বাজারের কারণেই বিপিসি বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধিতে কোন অসুবিধায় না পাড়ে এজন্য ৮০০ কোটি টাকার ভর্তুকি থাকছে আসন্ন বাজেটে।
×