ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আবাহনীকে টপকে মোহামেডান পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে, মোহামেডান ৫- রহমতগঞ্জ

বাঙ্গুরার হ্যাটট্রিকে মোহামেডানের আয়েশী জয়

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৭ মে ২০১৫

বাঙ্গুরার হ্যাটট্রিকে মোহামেডানের আয়েশী জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘সাদা-কালো’খ্যাত ঢাকা মোহামেডানের খেলা দেখে শুরুতে মনে হচ্ছিল আজও বুঝি সাদামাটা খেলে তারা পয়েন্ট নষ্ট করবে। যেভাবে আগের দুই ম্যাচে তারা পয়েন্ট নষ্ট করেছে ফেনী সকার ও শেখ জামালের সঙ্গে ড্র করে। কিন্তু ম্যাচের ২৪ মিনিট থেকেই সাদা-কালোদের নৈপুণ্য ক্রমেই হয়ে ওঠে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর। তাদের মুহুর্মুহু আক্রমণে ল-ভ- হয়ে যায় রহমতগঞ্জের রক্ষণদুর্গ। তারা করে বসে অসহায় আত্মসমপর্ণ। তাদের জালে একের পর এক গোল ঢোকাতে থাকে গত লীগের চতুর্থ স্থান অধিকারীরা। ম্যাচ শেষে দেখা গেল স্কোরলাইনটা বেশ স্বস্তিদায়ক, ৫-০ (বিজয়ী দল প্রথমার্ধে এগিয়ে ছিল ৩-০ গোলে)। তৃপ্তির পরিমাণ আরও দ্বিগুণ হলো দুটো কারণে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনীকে টপকে (একসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা, শেখ রাসেল ও আবাহনীকে টপকে) পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম থেকে তৃতীয় স্থানে উঠে আসা এবং মোহামেডানের গিনির ফরোয়ার্ড ইসমাইল বাঙ্গুরার ম্যাচে নয়নাভিরাম হ্যাটট্রিক করে চলমান লীগে ব্যক্তিগত সর্বাধিক গোলদাতার আসনে অধিষ্ঠিত হওয়া। লীগে এখন বাঙ্গুরার গোলসংখ্যা আট। পেছনে ফেলে দেন সাত গোল করা মুক্তিযোদ্ধার ফরোয়ার্ড এনামুল হক এবং ব্রাদার্স ইউনিয়নের হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড অগাস্টিন ওয়ালসনকে (মুক্তির বিরুদ্ধে অগাস্টিন করেছিলেন চার গোলসহ লীগের প্রথম হ্যাটট্রিকটি, দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে অগাস্টিন মাঠে নামার আগে পরিসংখ্যান)। ৯ ম্যাচে এটা মোহামেডানের পঞ্চম জয়। ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তারা পাঁচ থেকে উঠে এলো পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে। আবাহনীরও সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট। কিন্তু গোলগড়ে পিছিয়ে থাকায় নিজেদের স্থানটি মোহামেডানকে ছেড়ে দিয়ে আবাহনীকে নেমে যেতে হয়েছে তৃতীয় স্থানে (ব্রাদার্স-সকার ক্লাবের মধ্যে খেলার আগ পর্যন্ত পয়েন্ট টেবিলের অবস্থান অনুযায়ী)। পক্ষান্তরে নবম ম্যাচে এটা পঞ্চম হার রহমতগঞ্জের। পয়েন্ট আট। শনিবার ম্যাচের আগে প্রতিপক্ষ ‘আইলো’, ‘ডাইলপট্টি’ এবং ‘জায়ান্ট কিলার’খ্যাত রহমতগঞ্জকে সমীহই করছিল মোহামেডান। এর কারণও আছে। ঢাকা আবাহনীকে চলমান লীগে রুখে দেয়া (২-২) দলকে সমীহ না করে উপায় আছে? ম্যাচের ২৩ মিনিট পর্যন্ত সেভাবেই খেলে যাচ্ছিল পুরান ঢাকার ক্লাব রহমতগঞ্জ। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করা শুরু করে তখন থেকেই। ২৩ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে সতীর্থ মিডফিল্ডার জুয়েল রানার হেড বুকে নিয়ে ভলি শটে রহমতগঞ্জের জালে পাঠান গিনির ফরোয়ার্ড বাঙ্গুরা (১-০)। ২৫ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে মিডফিল্ডার মোঃ ইব্রাহিমের ক্রস থেকে হেডে গোল করেন আবারও সেই বাঙ্গুরা (২-০)। ৩০ মিনিটে অধিনায়ক-ডিফেন্ডার অরূপ বৈদ্যের কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁ প্রান্ত দিয়ে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের আচমকা শটে গোল করেন মিডফিল্ডার জুয়েল রানা (৩-০)। ৩১ মিনিটে থ্রো থেকে বল পেয়ে মোহামেডানের বক্সের ভেতর শট নেন মিডফিল্ডার মোঃ ইয়াসিন। তার শট মোহামেডানের ডিফেন্ডারদের গায়ে লেগে ফিরে আসে। এর পরই রহমতগঞ্জের কোচ কামাল আহমেদ বাবু রেফারি জালাল উদ্দিনের সঙ্গে অসদাচরণ করায় তাকে মাঠ থেকে বের করে দেন রেফারি। এতে প্রায় ৮ মিনিট খেলা বন্ধ ছিল। ৭৬ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে অরূপের ক্রসে বক্সে বল পেয়ে হেড করে মোহামেডানের ভা-ারে আরও একটি গোল যোগ করেন তৌহিদুল আলম সবুজ (৪-০)। ৮৭ মিনিটে রহমতগঞ্জের জালে আবারও বল পাঠিয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন বাঙ্গুরা (৫-০)। এ জয়ে দুই ম্যাচ পর আবারও জয়ের ধারায় ফিরলো জোসির শিষ্যরা। আর রহমতগঞ্জ এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচ হারলো। আগের ম্যাচে তাদের পরাভূত করেছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন (১-০)। উল্লেখ্য, শুক্রবার মোহামেডান-রহমতগঞ্জ ম্যাচটি সাত মিনিট হওয়ার পর ভারি বর্ষণে মাঠে পানি জমায় এবং বিপজ্জনকভাবে বজ্রপাত হওয়ায় ম্যাচটি স্থগিত করে শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। সেই স্থগিত ম্যাচ পুনরায় নতুন করে অনুষ্ঠিত হয়। আর সেই ম্যাচে মোহামেডানের গোল তা-বে নাকাল হয় রহমতগঞ্জ।
×