ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চাঁপাইয়ের বিশাল সমাবেশে শেখ হাসিনা;###;বিএনপি জামায়াত দেশ ও মানবতার শত্রু

খুন ধ্বংস চলবে না

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৭ মে ২০১৫

খুন ধ্বংস চলবে না

উত্তম চক্রবর্তী/ ডিএম তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ধ্বংস-খুন ও সন্ত্রাসের রাজনীতির ধারক-বাহক বিএনপি-জামায়াত জোটকে ‘না’ বলার এবং পরিহার করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যারা দেশের মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে, দেশের সম্পদ ধ্বংস করে তাদের দল আর নয়, তাদের ভোট বা সমর্থন আর নয়। এদেরকে ‘না’ বলুন, পরিহার করুন। দেশের উন্নয়ন, প্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য আওয়ামী লীগের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হোন। ধ্বংসের রাজনীতি পরিহার করে উন্নয়নের রাজনীতিতে শামিল হোন। বাংলাদেশের মাটিতে আর ধ্বংসের রাজনীতি চলবে না, খুনের রাজনীতি বাংলাদেশে চলবে না। শনিবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা শহর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সরকার কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত মানেই ধ্বংস, সন্ত্রাস, খুন-খারাবির রাজনীতি। এরা ধ্বংস, খুন ছাড়া মানুষের ভাল করতে জানে না। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মানুষ খুন ছাড়া অন্য কিছু শেখেনি। দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশের ও মানবতার শত্রু। যারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, দেশের সম্পদ বিনষ্ট করেছে তাদের ক্ষমা নেই। এদের ধরিয়ে দিন। এদের উপযুক্ত শিক্ষা ও শাস্তি দেয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করার আর সাহস না পায়। ভারতের পার্লামেন্টে দু’দেশের স্থলসীমান্ত চুক্তির বিল পাস হওয়াকে বর্তমান সরকারের বড় ধরনের কূটনৈতিক সাফল্যে উল্লেখ্য করে বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর পর ভারতের পার্লামেন্টে বিলটি পাস হয়েছে। এটা বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বড় সফলতা। শুধু এই চুক্তিই নয়, ঐতিহাসিক গঙ্গার পানি চুক্তির মাধ্যমে আমরা ভারত থেকে পানির হিস্যাও আদায় করেছি। অথচ বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে এসব কিছুই করতে পারেনি। বিএনপি মুখে ভারত বিরোধিতা করলেও ক্ষমতায় থাকতে সেদেশের তোষামোদি, চাটুকারী করে। ভারত ছাড়াও মিয়ানমারের কাছ থেকে আমরা বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। কিন্তু বিএনপি পারে না কেন? এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রী টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিকের সংসদ সদস্য পদে বিজয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও সফলতা অর্জন করেছি। কিন্তু বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতি আর মানুষ খুন ছাড়া আর কিছুই শেখেনি। সরকারী কোষাগার থেকে ভাতা নিয়ে খালেদা জিয়া তাঁর ছেলেদের সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও ড্রাগ গ্রহণ শিখিয়েছেন। মানিলন্ডারিংয়ের কারণে তাঁর ছেলেকে লন্ডনে এখন লুকিয়ে থাকতে হয়। এটাই হচ্ছে বিএনপি আর আমাদের মধ্যে পার্থক্য। আমরা দেশের উন্নয়ন করি, আর তারা দেশকে ধ্বংস করে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ এখন এগিয়ে যায়, তখনই বিএনপি-জামায়াত দেশকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লাগে। এরা দেশের শত্রু, মানবতার শত্রু। তিনি ছিটমহলবাসীর উন্নয়নে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়ে বলেন, ছিটমহলবাসীরা এখন নাগরিকত্বসহ সব ধরনের সরকারী সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে। বিদ্যুতসহ যা যা লাগে তার সবই দেয়া হবে। দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠনের পর এই প্রথম চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জেলা সদরটিতে যেন মানুষের ঢল নেমেছিল। আগের দিনের মুষলধারায় বৃষ্টি আর শনিবারের প্রচ- গরমের মধ্যে তীব্র জনস্রোত নেমেছিল জনসভাকে কেন্দ্র করে পুরো জেলা সদরে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ৩৫ মিনিটের বক্তব্যে বিএনপি-জামায়াত জোটের ৯২ দিনব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞ, ভয়াল সন্ত্রাসের বিবরণ তুলে ধরার পাশাপাশি অবহেলিত সীমান্তবর্তী এ জেলার সার্বিক উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতির কথা ব্যক্ত করেন। আগামীতেও ‘নৌকা’ মার্কায় সমর্থনের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীসহ দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মানেই সন্ত্রাস, দুর্নীতি আর মানুষ খুন। আর আওয়ামী লীগ মানেই উন্নয়ন, সমৃদ্ধি আর প্রগতি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশের উন্নয়ন হয়। আর বিএনপি ক্ষমতায় আসলেই দেশ ধ্বংস হয়। এরা ক্ষমতায় থাকলেই হত্যা, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও বাংলা ভাইয়ের সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের সময় সারাদেশে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক আলহাজ মঈনুদ্দীন ম-লের সভাপতিত্বে বিশাল এ জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন রাজশাহীর সাবেক মেয়র এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি, আবদুল ওদুদ বিশ্বাস এমপি, গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস এমপি, অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুছ এমপি, গোলাম রাব্বানী এমপি, জিয়াউর রহমান, এ্যাডভোকেট শামসুল হক, রুহুল আমিন, আবদুল কাদের, আতাউর রহমান, এ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, অধ্যক্ষ আতিকুল আলম, মাসুদুর রহমান, ফায়জার রহমান কনক প্রমুখ। এ সময় মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী, মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এনামুল হক প্রমুখ। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জে এটাই ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম সফর। এর আগে ২০১১ সালের ১৩ এপ্রিল সর্বশেষ এই জেলা সফর করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর আগমন এবং তার জনসভাকে ঘিরে চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর হাজার হাজার মানুষ যোগ দেন। দুপুর আড়াইটায় জনসভা শুরুর কথা থাকলেও সকাল থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষ জনসভায় আসতে শুরু করেন। রং-বেরঙের ব্যানার ও ফেস্টুনসহ বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ও হেঁটে মিছিলসহকারে জনসভায় যোগ দেন তারা। দুপুরের আগেই চারিদিক থেকে মানুষের ঢলে পুরো এলাকা ভরে ওঠে। জনসভাস্থল ছাপিয়ে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জনারণ্যে পরিণত হয়। সংলগ্ন সড়ক ও আশপাশের ভবনের ছাদে বসেও বিপুলসংখ্যক মানুষকে মাইকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে দেখা গেছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, ভোলাহাট, নাচোল হয়ে গোটা শহরজুড়ে দৃষ্টিনন্দন ডিজিটাল তোরণ, ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে বর্ণিলভাবে সাজানো হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ চার জাতীয় নেতার প্রতিকৃতি দিয়ে অসংখ্য তোরণ ছিল চোখে পড়ার মতো। স্থানীয় এমপি, নেতাদের নামেও অসংখ্য তোরণ, ব্যানার-ফেস্টুন ও পোস্টারও দেখা যায়। আর প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে পুরো এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছিল নিñিদ্র নিরাপত্তা বলয়। বিকাল আড়াইটাই জনসভা শুরুর সময় নির্ধারণ করা হলেও বেলা ১১টার পর থেকেই জনসভাস্থলে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে। দুপুর ২টার আগেই জনসভাস্থল লোকে-লোকারণ্যে হয়ে পড়ে। আগের দিনের মুষলধারায় বৃষ্টির কারণে বিশাল মাঠের অনেক জায়গায় কাদার সৃষ্টি হলেও মানুষের স্রোত থামাতে পারেনি। জেলার ৫টি উপজেলা ছাড়াও সংলগ্ন রাজশাহী, পবা, তানোর, গোদাগাড়ি, মান্দাসহ অন্যান্য জেলা থেকেও বিপুলসংখ্যক মানুষকে জনসভাস্থলে মিছিল নিয়ে আসতে দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রী ৩টা ৪০ মিনিটে জনসভাস্থলে পৌঁছার সময় পুরো মাঠ ছাপিয়ে জনস্রোত আশপাশের এক বর্গকিলোমিটার এলাকা ছাড়িয়ে যায়। প্রায় দুই কিলোমিটার পথে টানানো মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে শুনতে দেখা গেছে। এর আগে সকাল পৌনে ১১টায় ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে প্রধানমন্ত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন। বেলা সোয়া ১২টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জর মেজবাহুল হক নতুন স্টেডিয়ামে নির্মিত হেলিপ্যাডে নেমে সার্কিট হাউজে উপস্থিত হলে তাঁকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। বেলা ১টায় শহরের মহানন্দা নদীর ওপর নির্মিত ‘শেখ হাসিনা সেতু’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। এলজিইডির বাস্তবায়নে ৫৪৬ দশমিক ৬০ মিটার দীর্ঘ প্রিস্টেড গার্ডার ‘শেখ হাসিনা’ সেতুটি (দ্বিতীয় মহানন্দা সেতু) নির্মাণের ফলে জেলার দুর্গম চরাঞ্চলের নয়টি ইউনিয়নের পাঁচ লাখ লোক স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর জেলা শহরের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হলেন। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী এই সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর ৪৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন বছরে আধুনিক মানের এই সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলো। প্রধানমন্ত্রী সেতুর উদ্বোধনের পর মোনাজাতে অংশ নেন। এরপর এই অঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের সেতুটি ঘুরে দেখেন তিনি। বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে জনসভাস্থলে পৌঁছেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা সদরে স্থাপিত যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (যুব ভবন), বাংলাদেশ কৃষি পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উপকেন্দ্র, জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতির নবনির্মিত চক্ষু হাসপাতাল ভবন, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর কলেজের চারতলা ভিতবিশিষ্ট দ্বিতল (দ্বিতীয়) একাডেমিক ভবন এবং গোমস্তাপুরে নবনির্মিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে চাঁপাইনবাগঞ্জ জেলা হাসপাতালের ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যা উন্নীতকরণ, কানসাট-রোহনপুর-ভোলাহাট সড়ক উন্নয়ন, পদ্মা নদীর ভাঙ্গন রোধে আলাতুলী এলাকা রক্ষা প্রকল্প এবং আমনুরা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। জনসভা শেষে সন্ধ্যায় হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনপূর্ব চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ সারাদেশে বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাস-নৈরাজ্যসহ হরতাল-অবরোধের নামে ৯২ দিন ব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞ ও ভয়াল সন্ত্রাসের বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, অবরোধ-হরতালের নামে বিএনপি নেত্রী দলীয় কার্যালয়ে ৮৩ জনকে নিয়ে ভালই ছিলেন, ভাল ভাল খাবার খেয়েছেন। আর হরতলের নামে নাশকতা-সন্ত্রাস চালিয়ে গরিব-দুঃখী সাধারণ জনগণের পেটে লাথি মেরেছেন। কানসাটে বিদ্যুত কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ এবং একজন প্রকৌশলীকে হত্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বিদ্যুত কেন্দ্র করি, আর বিএনপি-জামায়াত পুড়িয়ে দেয়। বিএনপির আমলে বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৩২শ’ মেগাওয়াট। এখন বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা ১৩ হাজার ৭শ’ মেগাওয়াট। দেশের এখন ৭০ ভাগ মানুষ বিদ্যুত সুবিধা পাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনরত ১৭ জন মানুষকে গুলি করে হত্যা এবং ২০১৩ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে বিদ্যুত কেন্দ্র পুড়িয়ে দেয়াসহ নির্বাচন বানচাল আন্দোলনের নামে নির্যাতন ও সন্ত্রাসের বিবরণ তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এদের মতো জঘন্য রাজনীতি বাংলাদেশের মানুষ আর দেখেনি। এই এলাকায় জিহাদ নামের নয় বছরের একজন শিশুকেও তারা পিটিয়ে হত্যা করেছেন। এই শিশুটির কী অপরাধ ছিল? মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করলে সবাই কষ্ট পায়। কিন্তু খালেদা জিয়ার মনেই কেবল কিছু হয় না। মানুষ হত্যা করাই তার চরিত্র। চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার উন্নয়নে তার সরকারের ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে একটি উন্নতমানের বাস টার্মিনাল, নবনির্মিত শেখ হাসিনা সেতুর সঙ্গে শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সেতুর সংযোগ সড়ক, পর্যটন কেন্দ্র্র, শিশুপার্ক, উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ও প্রতিটি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ ছাড়াও আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীনদের আবাসন ও তাদের মধ্যে খাস জমি বিতরণের পদক্ষেপ নেয়া হবে। এছাড়া সোলার সিস্টেমের মাধ্যমে বিদ্যুত সংযোগ প্রদান ও প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। আগামীতেও ‘নৌকা’ মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানেই উন্নয়ন, সমৃদ্ধি আর প্রগতি। মানুষ যাতে উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে পারে, সেই সুযোগ আওয়ামী লীগই করে দিয়েছে। প্রতিটি মানুষ খেয়েপরে শান্তিতে বেঁচে থাকবে- সেই ব্যবস্থা আমরাই করে দিয়েছি। মানুষ ভাল থাকবে, সুখে থাকবে- এটিই আমাদের লক্ষ্য। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব।
×