ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দক্ষিণ চীন সাগরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা

প্রকাশিত: ০৪:০০, ১৭ মে ২০১৫

দক্ষিণ চীন সাগরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, তিনি দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ এলাকায় চীনের ভূমি পুনরুদ্ধার প্রকল্পের গতি ও বিস্তারে উদ্বিগ্ন। শনিবার বেজিংয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি’র সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলন কেরি এ কথা বলেন। ওয়াং বলেন, চীন তার সার্বভৌমত্বের সুরক্ষায় দৃঢ়সঙ্কল্প। কেরির চীনের প্রেসিডেন্ট র্শি জিনপিং ও অন্যান্য শীর্ষ সরকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েকটি বৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা। ইতোপূর্বে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, কেরি চীনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে গত বছরজুড়ে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সার্বিক তৎপরতা বিশেষ করে শৈলশ্রেণীর দ্বীপপুঞ্জের ওপর, যেগুলোর সার্বভৌমত্ব বিতর্কিত- সেখানে ব্যবহারযোগ্য ভূমির পরিমাণ চতুর্গুণ বৃদ্ধির ব্যাপারে চীনকে সতর্ক করে দিতে চান। বিবিসি ও ইয়াহু নিউজের। এদিকে, মার্কিন নৌবাহিনীর অন্যতম আধুনিক জাহাজ ইউএসএস ফোর্টওয়ার্থ দক্ষিণ চীন সাগরের আকাশসীমা টহল দিতে সেখানে একটি গোয়েন্দা ড্রোন ও একটি সিহক হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে। নৌবাহিনীর ওয়েবসাইটের একটি স্বল্পজ্ঞাত বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। বিবৃতিতে নৌবাহিনী স্ক্র্যাটলিতে চীনের দ্রুত ভূমি পুনরুদ্ধারের বিষয় উল্লেখ করা না হলেও জাহাজটির এই পদক্ষেপ বেজিংয়ের এই এলাকায় এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকিশেন জোন (এডিআইজেড) ঘোষণার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সামর্থ্যরে বহির্প্রকাশ। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, বেজিংয়ের এই পদক্ষেপ গ্রহণের সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে দক্ষিণ চীন সাগরের আকাশে যুক্তরাষ্ট্র-চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতার উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা চীন কর্তৃক নিমজ্জিত শৈলশ্রেণীর ওপর বালু ফেলে কৃত্রিম দ্বীপ সৃষ্টি স্ক্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের চারপাশে ব্যস্ত জাহাজ চলাচল পথে বৃহত্তর ভূখ-গত দাবি তোলা এবং সেই সঙ্গে ওই অঞ্চলে তার প্রভাব বৃদ্ধির গোপন উদ্যোগের পর্যায়ক্রমিক প্রচেষ্টা বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ্যাশ কার্টার তাঁর কর্মকর্তাদের চীনের দখল করা বিভিন্ন শৈলশ্রেণী ও দ্বীপগুলো যেভাবে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হচ্ছে, সে ব্যাপারে কিভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা যায় তা বিবেচনা করে দেখতে বলেছেন। মার্কিন সামরিক বাহিনী ইতোমধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরে টহল দিচ্ছে, তবে ওই দ্বীপপুঞ্জের চারধারের ১২ নটিক্যাল মাইলের ভূখ-গত সীমা অতিক্রম করার আভাস পেলেই চীন তাৎক্ষণিকভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে। চীনা দাবিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র সামরিক জাহাজ ও বিমান পাঠাতে পারে এই সংবাদে চীন বুধবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। দ্বীপগুলো ভৌগোলিকভাবে চীনের চেয়ে ভিয়েতনাম ও ফিলিস্তিনের কাছাকাছি হলেও বেজিং বলেছে, তারা সেগুলো তাদের সার্বভৌম ভূখ- হিসেবে দৃঢ়তার সঙ্গে রক্ষা করবে। চীনের এই মনোভাব ভিয়েতনাম, ব্রুনেই, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স ও তাইওয়ান বিরক্তি প্রকাশ করেছে। সব দেশই স্ক্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ ও চারপাশের সাগরের সম্পূর্ণ এলাকার বা অংশ বিশেষের মালিকানা দাবি করে থাকে। চীন ওই এলাকায় অবাধে জাহাজ চলাচলের অধিকারকে মেনে নিলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মুখপাত্র হুয়া চুনইয়িং বলেছেন, ‘এর অর্থ এই নয় যে, বিদেশী সামরিক জাহাজ ও বিমানগুলো আরেকটি দেশের আঞ্চলিক আকাশ ও সমুদ্রসীমায় অবাধ প্রবেশ করতে পারবে। চীন দৃঢ়তার সঙ্গে তার আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ হলো এই এলাকার সকলের জন্য নৌ চলাচলের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখা। দেশটি গভীর সমুদ্রের ওপর বিমানযাত্রা ও গতিবিধিকে বৈধ অধিকার বলে মনে করে।
×