ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মাথাপিছু আয় বেড়েছে

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ১৭ মে ২০১৫

মাথাপিছু আয় বেড়েছে

বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩১৪ ডলার। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে এই হার বেড়েছে ১২৪ ডলার। গত বছর যা ছিল ১১৯০ ডলার। মাথাপিছু আয় বাড়ায় বিশ্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থান এখন ৫৮তম স্থানে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় আয় বাড়ার পাশাপাশি মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে। তবে হরতাল-অবরোধের কারণে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম হয়েছে। মাথাপিছু আয় হচ্ছে নির্দিষ্ট বছরে একটি দেশের উৎপাদিত দ্রব্য ও সেবাসমূহের মোট পরিমাণকে মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে পাওয়া ফল। এই আয় ধরা হয় স্বাভাবিক মূল্যের ভিত্তিতে। গত কয়েক বছর ধরেই গড় আয় ছিল ৩২০ থেকে ৩৬০ ডলারের মধ্যে। এখন সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩১৪ ডলারে। পাশাপাশি মানুষের গড় আয়ুও বেড়েছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা আর দেশের পরিশ্রমী জনগোষ্ঠীর কারণে। ২০০৯ সাল থেকে একটি সরকার ধারাবাহিক ক্ষমতায় থাকার কারণে বহাল রয়েছে সরকারের অর্থনৈতিক কর্মসূচীর গতিধারা। তাই গড় আয় বাড়ছে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে। নানা বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও অর্থনীতির ক্ষেত্রগুলোতে উন্নতির পথ প্রসারিত হচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, নাশকতা কোনকিছুই আয়ের গতিকে রুদ্ধ করতে পারেনি। মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এদিক থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। তবে জিডিপির ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি অর্জন কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে টানা তিন মাসের বেশি সময় ধরে হরতাল ও অবরোধের কারণে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার ৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল, সেখানে জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে অর্জিত হয়েছে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। টানা ৬ বছর ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি বিশ্বের মাত্র ৪টি দেশ অর্জন করতে পেরেছে। সেখানে বাংলাদেশের নামও রয়েছে। দেশের পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক থাকত, নাশকতা না চলত তবে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশই হতো। বিশ্বব্যাংক অবশ্য বলেছিল, প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এডিবি ও আইএমএফের মতে ৬ শতাংশের কাছাকাছি হবে। কিন্তু বাস্তবে তার বেশি হয়েছে। অবশ্য প্রতি বছর জিডিপিতে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি ও অবদান কমে যাচ্ছে। একই সময়ে শিল্প ও সেবা খাতের প্রবৃদ্ধির অবদান বাড়ছে। এছাড়া শিল্প খাতের অবদান বেড়ে হয়েছে ২৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আর সেবা খাতের অবদান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এ তিনটি খাতে প্রবৃদ্ধির হার যথাক্রমে কৃষিতে ৩ দশমিক ৪, শিল্পে ৯ দশমিক ৬ এবং সেবায় ৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ক্রমশ এগিয়ে যাবে। সে অনুযায়ী গৃহীত নীতিমালা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন জরুরী । আর এটা করা গেলে ২০১৯ সালের আগেই বাংলাদেশ এশিয়াসহ বিশ্বে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। মানুষের জীবনযাত্রা হবে গতিময় ও সমৃদ্ধশালী। জনগণ তাই চায় নাশকতা, হানাহানি ও সহিংসতামুক্ত স্বদেশ।
×