ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকগুলোকে ছিটমহলবাসীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান গবর্নরের

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১৩ মে ২০১৫

ব্যাংকগুলোকে ছিটমহলবাসীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান গবর্নরের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সিটমহলবাসীদের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও এনজিওদের সিএসআর কার্যক্রমের আওতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান। মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে মাস্টারকার্ড, ব্যুরো এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক আয়োজিত ১০ টাকার হিসাবধারীদের ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগ্রামের উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে মাস্টারকার্ড, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও ব্যুরো বাংলাদেশ ১০ টাকার হিসাবধারী ১০ হাজার গ্রাহককে ফিন্যান্সিয়াল এ্যান্ড বিজনেস লিটারেসি বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, মাস্টারকার্ডের সাউথ এশিয়ার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ভিকাস ভার্মা, ব্যুরো বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আবদুল কুদ্দুস ও মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল প্রমুখ। গবর্নর বলেন, সিটমহলবাসী দীর্ঘদিন স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। তারা চিকিৎসা, শিক্ষা, অর্থনৈতিকসহ সকল ক্ষেত্রেই পিছিয়ে আছে। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরিয়ে আনতে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে আমাদের সকলের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। আমি আশা করব দেশের ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও এনজিওগুলো তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে। ১০ টাকার হিসাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কৃষকদের জন্য সরকার আগে যে ভর্তুকি দিত তা সচিবালয় থেকে কোথায় যেন চলে যেত। কিন্তু এখন আর সেটি সম্ভব নয়। কারণ কৃষকদের জন্য ১০ টাকার ব্যাংক হিসাব রয়েছে। ভর্তুকির অর্থ এখন সরাসরি কৃষকদের এ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে। এ ধরনের হিসাব খোলার ফলে এখন প্রান্তিক চাষীরা সহজে ঋণ নিতে পারছে। ব্যাংকগুলো এজন্য আমাদের কাছ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছে। আতিউর রহমান বলেন, দেশে বর্তমানে ব্যাংকগুলোর ১০ হাজার ব্রাঞ্চ আছে। আমরা ব্যাংকগুলোকে বলেছি যাতে প্রতিটি ব্রাঞ্চ বছরে একজন করে নারী উদ্যোক্তা তৈরি করে। এতে করে প্রতিবছর অন্তত ১০ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরি হবে। আমরা ব্র্যাক ব্যাংকে ৫০০ কোটি টাকার একটি তহবিল দিয়েছি। এতে করে বর্গাচাষীরা উপকৃত হচ্ছেন। সকল শ্রেণীর মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে আমাদের এ প্রচেষ্টা। ড. আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনর্অর্থায়ন তহবিলে পরিচালন ব্যয়ের ভর্তুকি যদি সরকার প্রদান করে তবে প্রান্তিক চাষীদের আমরা ব্যাংকরেটে (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) ঋণ দিতে পারব। এর আগে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল কুদ্দুস বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমাদের বলা হয়েছে, শহরের পাশাপাশি গ্রামেও ব্রাঞ্চ খুলতে। আমরা আমাদের শহরের বাইরের কর্মকর্তাদের বলেছি, সাধারণ মানুষের কাছে যেতে, তাদের যথাযথ ব্যাংকিং সেবা দিতে। এরই অংশ হিসাবে আমরা ব্যুরো বাংলাদেশকে ১০ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা দিয়েছি। যার মাধ্যমে আমরা সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে সহজেই পৌঁছতে পারব। মাস্টারকার্ডের সাউথ এশিয়ার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ভিকাস ভার্মা বলেন, ব্যুরো বাংলাদেশ ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সহযোগিতায় ১০ হাজার ১০ টাকার ব্যাংক হিসাবধারীকে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মসূচী ঘোষণা করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এই প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দেবে যা তাদের অর্থনৈতিক কর্মকা-ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে এবং পরিবার ও সমাজে সামগ্রিক অবদান রাখতে আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তুলবে।
×