ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যামেরন সরকারের আভাস

ইইউ নিয়ে গণভোট ’১৬ সালে!

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৩ মে ২০১৫

ইইউ নিয়ে গণভোট ’১৬ সালে!

ডেভিড ক্যামেরনের দ্বিতীয় মেয়াদে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে তাঁর দেশের সম্পর্ক এক নতুন সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। ব্রিটেন ইইউর সদস্য হিসেবে থাকবে কি থাকবে না এ নিয়ে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গণভোট ২০১৭ সালের থেকে এগিয়ে ১৬ সালে করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ক্যামেরন। খবর গার্ডিয়ান অনলাইনের। ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ক্যামেরনের দল জয়লাভ করার পর ইউরোপে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ দেশটির সঙ্গে ইইউর সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এ নিয়ে গণভোট না হওয়া পর্যন্ত ইউরোপে উৎকণ্ঠা কাটছে না। বিষয়টি নিয়ে ইইউর প্রভাবশালী সদস্য জার্মানি ও ফ্রান্সের সঙ্গে ব্রিটেনের তিক্ততা সৃষ্টির ঝুঁকি রয়েছে। যে কারণে বিবাদ এড়াতে ক্যামেরন এখন ২০১৬ সালেই গণভোটটি করে ফেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় ক্যামেরনের পক্ষে এ কথা বলা এখন সহজ হয়েছে যে, ভোটের সময় নির্ধারণের ম্যান্ডেট জনগণ তাঁকে দিয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা সব সময় বলে এসেছি ২০১৭ সাল হলো গণভোট আয়োজনের সময়সীমা, এর মানে এটি নয় যে ওই বছরই ভোট হতে হবে।’ রানী এলিজাবেথ এ মাসের ২৭ তারিখ যে ভাষণটি দিচ্ছেন তাতে যেন গণভোটের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকে সে লক্ষ্যে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি বিল অনুমোদিত হয়েছে। ক্যামেরন এতে সায় দিলে বিলটি দ্রুতই হাউস অব কমন্সে উত্থাপিত হতে পারে। সরকারী সূত্রগুলো জানিয়েছে, এখন গণভোট আয়োজন ত্বরান্বিত করা ক্যামেরনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচী। গণভোট এগিয়ে আনতে সরকার যেভাবে উদ্যোগী হয়েছে তাতে কোন কোন বিশ্লেষক ধারণা করছেন, এটি আগামী বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হতে পারে। সরকার যে আগাম গণভোট দেয়ার কথা ভাবছে তা কয়েকটি বিষয় থেকে অনুমান করা হচ্ছে। একটি হলো- ডেভিড লিডিংটনকে ক্যামেরন ইউরোপ বিষয়ক মন্ত্রী পদে পুনর্নিয়োগ দিতে পারেন বলে গণমাধ্যমের কাছে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন। উল্লেখ্য, লিডিংটন ২০১০ সাল থেকে এই পদে আছেন। আরেকটি ঘটনা হলো- ক্যামেরন পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর ব্রাসেলস ও ইইউর কয়েকটি প্রভাবশালী দেশের রাজধানীতে নতুন করে কূটনৈতির হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, (২৮ সদস্য বিশিষ্ট) ইউরোপীয় কাউন্সিল জানিয়েছে, ব্রিটেনে গণভোট হওয়ার আগে তারা জোট নিয়ে বড় কোন সিদ্ধান্ত নেবে না। এছাড়া আরও একটা কারণ হলো ফ্রান্স ও জার্মানির সাধারণ নির্বাচন। জার্মানিতে এটি হওয়ার কথা ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এবং ফ্রান্সে ওই বছর প্রথমার্ধে। ইইউ নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, ব্রিটেন যদি জোটের সঙ্গে থাকে কেবল তখনই তারা লিসবন চুক্তি অনুমোদন করবেন। ইইউর সাংবিধানিক ভিত্তি হলো এই চুক্তি। এটি সংস্কার চুক্তি নামেও পরিচিত। ১৯৯৩ সালে সম্পাদিত মাসত্রিখ্ত চুক্তি সংশোধন করে ২০০৭ সালে চুক্তিটি সই হয়েছিল। ইউরোপীয় কমিশনের সাবেক প্রধান হোসে ম্যানুয়াল বারোসো মনে করেন, পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর স্বাধীনভাবে নিজের কর্তৃত্ব প্রয়োগ করে ক্যামেরনের সফল হওয়ার সম্ভাবনা এখন আগের চেয়ে বেশি। অভিবাসী শ্রমিক, একক মুদ্রাবাজার, ব্রিটিশ জনগণের স্বকীয়তা রক্ষা এবং ইইউ আইনসভার ওপর জাতীয় আইনসভার ক্ষমতা- মূলত এই চারটি ইস্যুতে ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের বিবাদ চলছে। তবে বিষয়গুলো নিয়ে ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের সমঝোতায় আসার সময় এখনও চলে যায়নি।
×