ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্রাদার্স ইউনিয়নের কষ্টার্জিত জয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৩ মে ২০১৫

ব্রাদার্স ইউনিয়নের কষ্টার্জিত জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মঙ্গলবার, রাত। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। ‘বাংলাদেশ মান্যবর প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেড বনাম রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। প্রথমার্ধে কোন পক্ষই কাক্সিক্ষত গোল করতে পারেনি। সময় যতই গড়াচ্ছিল, ততই মনে হচ্ছিল নিষ্প্রাণ এই ম্যাচটির ভাগ্যে লেখা হতে যাচ্ছে একটাই শব্দ- ‘ড্র।’ কিন্তু ৭৮ মিনিটে হঠাৎ পাল্টে গেল ম্যাচের চালচিত্র। ভাগ্যদেবী সহায় হলো গোপীবাগের ‘দ্য অরেঞ্জ ব্রিগেড’খ্যাত ব্রাদার্সের প্রতি। গোলের সন্ধান পেয়ে গেল তারা। বদলি মিডফিল্ডার কাউসার আলী রাব্বি রহমতগঞ্জের ডি-বক্সের বাইরে থেকে স্কয়ার পাস দেন সতীর্থ ফরোয়ার্ড-অধিনায়ক নাইজিরিয়ান কেস্টার এ্যাকনকে। কেস্টার সেই বল ব্যাকহিল করে বক্সে ঢুকে প্লেসিং শটে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন এবং দলকে অনাবিল আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড অগাস্টিন ওয়ালসন (১-০)। লীগে এটা ওয়ালসনের ব্যক্তিগত সপ্তম গোল, যা লীগে যুগ্ম সর্বাধিক। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ফরোয়ার্ড এনামুল হকও করেছেন সাত গোল। তবে এই লীগে ওয়ালসন একটি হ্যাটট্রিকও করেছেন, যা আর কেউ এখনও করতে পারেননি। ওই ম্যাচে হ্যাটট্রিকসহ ওয়ালসন একাই করেছিলেন চার গোল। ওই ম্যাচে ব্রাদার্সের প্রতিপক্ষ ছিল এনামুলের মুক্তিযোদ্ধা। গোল করার পর সৈয়দ নঈমউদ্দিনের শিষ্যরা যেন আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। ‘জায়ান্ট কিলার’খ্যাত পুরনো ঢাকার ক্লাব রহমতগঞ্জ যেন ঝিমিয়ে পড়ে অনেকটাই। একাধিক আক্রমণ করে ব্রাদার্স ব্যতিব্যস্ত করে তোলে প্রতিপক্ষকে। কিন্তু গোল আর পায়নি। উল্টো রক্ত ঝরিয়েও ম্যাচ জিততে পারেনি রহমতগঞ্জ। গোল হজমের আগেই তাদের দুই খেলোয়াড় একসঙ্গে আহত হন। উড়ন্ত বল হেড করে ক্লিয়ার করতে গিয়ে মাথা ফেটে যায় রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডার-অধিনায়ক জাহাঙ্গীর আলম। তার সতীর্থ ফরোয়ার্ড নুরুল আবসারের ঠোঁট কেটে যায়। এ্যাম্বুলেন্সে চড়ে হাসপাতালে যেতে হয় উভয়কেই। বিজেএমসি-চট্টগ্রাম আবাহনী ম্যাচ ড্র পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা দুই দল সব সময়ই অবনমিত হওয়ায় আশঙ্কা থাকে। দুই দলই যখন পরস্পরের মুখোমুখি হয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই কৌতূহল জাগতে পারে ম্যাচটি নিয়ে। স্বভাবতই উভয় দলই চাইবে জয় কুড়িয়ে নিয়ে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের অবস্থানকে একটু নিরাপদ করা। কিন্তু টিম বিজেএমসি এবং চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড কেউই তা পারল না। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে দিনের প্রথম খেলায় তাদের ম্যাচটি পর্যবসিত হয় ড্রয়ে। ম্যাচের স্কোরলাইন ছিল ১-১। তবে খেলার প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল আবাহনীই। এটা নিজেদের অষ্টম ম্যাচে দ্বিতীয় ড্র আবাহনীর। পয়েন্ট ৫। অবস্থান দশম থেকে নবম। টপকে গেল ফরাশগঞ্জকে। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে সমান ড্রতে বিজেএমসির পয়েন্ট ২। অবস্থান আগের মতোই, তলানিতে (একাদশ)। চট্টগ্রাম আবাহনী ৮ ম্যাচের একটিতে জয় পেলেও এখন পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখেনি টিম বিজেএমসি। মঙ্গলবার প্রায় সমমানের দল হওয়ায় তাদের একটা সুযোগ ছিল তিন পয়েন্ট পাওয়ার। কিন্তু সেটিও পারেনি তারা। যদিও ম্যাচের শুরুটা বেশ আগ্রাসী ঢংয়েই খেলছিল মং ক্রা মারমার শিষ্যরা (বিজেএমসি)। ৩ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত বিজেএমসিই। কিন্তু প্রতিপক্ষ বক্সে গোলরক্ষকে একা পেয়েও গোল করার সুযোগ নষ্ট করেন ফরোয়ার্ড নাবিব নওয়াজ জীবন। ৬ মিনিটে একইভাবে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন বিজেএমসির এই ফরোয়ার্ড। ১১ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে জীবনের ক্রসে বল পেয়ে শট নেন ফরোয়ার্ড জাকির হোসেন জিকো। কিন্তু তার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২৪ মিনিটে অনেকটা খেলার ধারার বিরুদ্ধেই গোল করে এগিয়ে যায় চট্টগ্রামের আকাশী জার্সিধারীরা। বক্সের বাইরে থেকে মিডফিল্ডার আব্দুল হান্নান রাজুর শট আশ্রয় নেয় ১৯৭৩ এবং ১৯৭৯ সালের লীগ চ্যাম্পিয়ন বিজেএমসির জালে (১-০)। ৫৭ মিনিটে ডিফেন্ডার খান মোহাম্মদ তারার গোলে সমতায় ফেরে বিজেএমসি (১-১)।
×