ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা আবাহনী - ফরাশগঞ্জ

ফরাশগঞ্জে আটকে গেল আবাহনী

প্রকাশিত: ০৬:১১, ১২ মে ২০১৫

ফরাশগঞ্জে আটকে গেল আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির ফারাক থাকলে আগ্নেয়গিরির লাভার মতো ক্ষোভের বহির্প্রকাশ ঘটতেই পারে। ছোট দলের কাছে পয়েন্ট খোয়ানোতে সোমবার এমন দৃশ্যই দেখা গেল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। ‘মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে দিনের প্রথম ম্যাচে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিংয়ের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করল শিরোপা প্রত্যাশী ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। ‘নীলকুঠি’ শিবিরের কাছে দুই পয়েন্ট খোয়ানোর কারণে ক্ষেপে যায় ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’-এর সমর্থকরা। খেলা শেষ হতে না হতেই তারা একের পর এক বোতল ছুড়ে মারে আবাহনীর ফুটবলারদের দিকে। সেই সঙ্গে ‘ফ্রি’ গালিগালাজ তো আছেই! এতে প্রথমে হতভম্ভ হলেও পরে আবাহনীর কিছু ফুটবলারকেও দেখা যায় উত্তেজিত ও মারমুখী হয়ে উঠতে। পুলিশ ও বাফুফে কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তখন মোহামেডান গ্যালারির দর্শকরা তখন পুরো ব্যাপারটি রসিয়ে রসিয়ে উপভোগ করছিল। করারই কথা, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের দুর্দশায় কে না মজা লুটতে চায়! এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচ জয়বঞ্চিত থাকল গত লীগের রানার্সআপ আবাহনী (আগের ম্যাচে ০-১ গোলে হারে মুক্তিযোদ্ধার কাছে)। ৮ ম্যাচে এটা তাদের দ্বিতীয় ড্র (নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা ২-২ গোলে ড্র করেছিল রহমতগঞ্জের কাছে), পয়েন্ট ১৪। অবস্থান আগের মতোই, চতুর্থ। যদিও তাদের মতো সমান পয়েন্ট মোহামেডানেরও, তবে গোলগড়ে এগিয়ে থাকায় তৃতীয় অবস্থানটি ‘ব্ল্যাক এ্যান্ড হোয়াইট’রাই। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে বিস্ময়করভাবে এটা চতুর্থ ড্র ফরাশগঞ্জের! মজার ব্যাপার, ড্র করেই তারা সব পয়েন্ট পেয়েছে (৪)! এর আগে তারা ড্র করে ফেনী সকার (০-০), চট্টগ্রাম আবাহনী (২-২) এবং শেখ রাসেলের (২-২) সঙ্গে। রাসেলকে রুখে দিয়ে পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের অবস্থানেরও এক ধাপ উত্তরণ ঘটিয়ে পুরনো ঢাকার ক্লাবটি। দশম থেকে চলে এসেছে নবম স্থানে। টপকে গেল চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডকে। চট্টগ্রাম আবাহনীরও সমান পয়েন্ট। তবে গোলগড়ে এগিয়ে থাকায় ফরাশগঞ্জই আপাতত তাদের ওপরে। ৩৫ মিনিটে পোস্টের প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে ফরাশগঞ্জের ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরার শট আবাহনীর গোলরক্ষক জিয়াউর রহমান ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। বল সাইড পোস্ট ঘেঁষে মাঠের বাইরে চলে গেলে বিপন্মুক্ত হয় আবাহনী। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে আবাহনীর ঘানাইয়ান ফরোয়ার্ড ওসেই মরিসন বল নিয়ে বক্সে ঢুকে শট নেন। তবে সেই শট ক্ষিপ্রতার সঙ্গে লুফে নেন ফরাশগঞ্জের গোলরক্ষক সুজন চৌধুরী। ৬৫ মিনিটে নাহিদের ক্রসে ফরাশগঞ্জের বক্সে বল পান মরিসন। ফাঁকা পোস্টে শট নেন মরিসন। কিন্ত গোলরক্ষক সুজন চৌধুরী শুয়ে পড়ে পা দিয়ে বল ঠেকিয়ে দেন। তারপর সেই বল সতীর্থ ডিফেন্ডার সুশান্ত কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করে দলকে বাঁচান। ৭৭ মিনিটে ফরাশগঞ্জের নাইজিরিয়ান মিডফিল্ডার উচে ফেলিক্স সতীর্থ স্বদেশী মিডফিল্ডার আকিনইয়েলে পিটারকে বল পাস দেন। পিটার বক্সে দাঁড়ানো আরেক মিডফিল্ডার নাজমুল ইসলাম রাসেলকে বল দিলে তিনি যে তীব্র শটটি নেন, তা শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। রেফারি আবদুল হান্নান খেলা শেষের বাঁশি বাজালে হতাশা নিয়ে আবাহনী এবং আনন্দ নিয়ে মাঠ ছাড়ে ফরাশগঞ্জ দল। তবে তার আগে ঘটে সেই ‘বোতল-বৃষ্টি!’
×