ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আজ ঢাকা ছাড়ছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ১১ মে ২০১৫

আজ ঢাকা ছাড়ছে পাকিস্তান  ক্রিকেট দল

মোঃ মামুন রশীদ ॥ শুরুটা খুব বাজে হয়েছে। পুরো সিরিজেই স্বাগতিক বাংলাদেশের সঙ্গে পেরে ওঠেনি পাকিস্তান দল। তবে শেষ ভাল যার সব ভাল তার। সেই শেষ ভালটা নিয়েই দেশে ফিরে যাচ্ছেন পাক ক্রিকেটাররা। সফরের শেষ ম্যাচ দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজ জয়ের আনন্দ নিয়েই ঘরে ফিরতে পারছে মিসবাহ-উল-হকের দল। আজ দুপুরেই বাংলাদেশ ছাড়বেন পাক ক্রিকেটাররা। গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখার পর এবারই প্রথম সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির শিকার হয়েছে পাকরা। এর আগে বাংলাদেশ সফরে কিংবা নিজেদের ঘরের মাঠে হার বা ড্র না দেখলেও ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানের লজ্জাজনক হোয়াইটওয়াশ এবং একমাত্র টি২০ ম্যাচে হেরে যায় পাকরা। দুই টেস্টের সিরিজের প্রথমটিতেই হোঁচট খায় প্রথমবার বাংলাদেশ ড্র করার কারণে। তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খান দ্বিতীয় টেস্টের শুরুর দিন আসার কারণেই হয়তো উজ্জীবিত হয়ে ওঠে পাক ক্রিকেটাররা। দারুণ এক জয় তুলে নেয়। সফরের শেষ ম্যাচের এ জয়টাকে ভবিষ্যতের জন্য শুভ লক্ষণ এবং টেস্টে পাকরা ধারাবাহিক সেটার প্রমাণ-এসব কথাই বলেছেন মিসবাহ ও কোচ ওয়াকার ইউনুস। সেই শুভ লক্ষণের আনন্দটা নিয়েই এবার দেশে ফিরবে পাকিস্তান দল। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত সাফল্য দেখিয়ে ফিরেছিল বাংলাদেশ দল। প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। অপরদিকে, পাকিস্তানের অবস্থা ছিল নাজুক। অনেক কষ্টে কোয়ার্টারে পা রাখতে পারলেও বাজেভাবে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে বিদায় নেয় তারা। বিশ্বকাপ শেষেই সমালোচনায় টালমাটাল পাকিস্তান দলের সিরিজ উজ্জীবিত ও আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। বাজে নৈপুণ্যের জন্য বাদ পড়েছেন বেশ কয়েকজন। আবার অধিনায়ক মিসবাহ এবং অভিজ্ঞ শহীদ আফ্রিদি অবসর নিয়েছেন বিশ্বকাপের পরই। যার কারণে এবার বাংলাদেশ সফরে নতুন নেতৃত্বে একটি তারুণ্যনির্ভর ওয়ানডে দল পাঠায় তারা। যা হবার তাই হয়েছে। চরমভাবে পদানত হয়েছে পাকরা স্বাগতিক বাংলাদেশের কাছে। যে দলটির বিরুদ্ধে কখনও ১৯৯৯ সালের পর জিততেই পারেনি সেই দলটি এবার হোয়াটওয়াশ করে পাকিস্তানকে। ঘরের মাঠে কিংবা বাংলাদেশের মাটিতে কখনই বাংলাদেশের কাছে ওয়ানডে, টি২০ এবং টেস্ট হারের রেকর্ড ছিলনা পাকিস্তানের। কিন্তু এবার সেই দলটিই টানা তিন ম্যাচেই হারল। হোয়াইটওয়াশের লজ্জা। নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক আজহার আলী ব্যর্থ হলেন। টি২০ ক্রিকেটের জন্য দারুণ শক্তিশালী এবং বাংলাদেশের চেয়ে অভিজ্ঞ একটি দল ছিল পাকিস্তানের। কিন্তু উজ্জীবিত বাংলাদেশের কাছে আরেকবার একতরফাভাবে হেরে বসে তারা। ব্যর্থ হলেন অধিনায়ক ্আফ্রিদিও। আজহার-আফ্রিদি যা পারেননি সেটা করে দেখালেন মিসবাহ। বাংলাদেশ সফরে এবার টানা ৫ পরাজয়ে (প্রস্তুতি ম্যাচ, তিন ওয়ানডে ও টি২০) বিপর্যস্ত পাকিস্তান দল যেন বদলে গেল টেস্ট সিরিজে। অবশ্য অভিজ্ঞতারও যথেষ্ট সম্মিলন ছিল। অধিনায়ক মিসবাহ ছাড়াও ইউনুস খান, মোহাম্মদ হাফিজ, সাঈদ আজমলের মতো অভিজ্ঞরা ছিলেন দলে। আর টেস্ট ক্রিকেট নিয়মিত না খেলা বাংলাদেশ অনভ্যস্ততার জন্য প্রথম টেস্টেই দারুণ সংগ্রাম করেছে। খুলনায় প্রথম টেস্ট বাঁচাতে পারলেও পাকিস্তানের অভিজ্ঞতার কাছে হারতে হয়েছে মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্টে। চারদিনেই মিরপুরে ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতেছে পাকরা। পেয়ে গেছে আগামীতে এগিয়ে যাওয়ার রসদ। ইতোমধ্যেই ওয়ানডে অধিনায়ক হয়েছেন আজহার। দুই বছর পর ওয়ানডে দলে ফিরেছেন নেতৃত্ব নিয়ে। তার ওয়ানডে খেলার যোগ্যতা নেই এমন কথা যারা বলেছেন তাদেরও জবাব দিয়েছেন ব্যাট হাতে। তিন ওয়ানডেতে ৭২, ২৬ ও ১০১ রান করার পর দুই টেস্টে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৮৩, ২৫ ও ২২৬ রানের ইনিংস। আগামীর কা-ারী হিসেবে যোগ্য ক্রিকেটারকেই পেয়েছে পাকরা। আর এটাকেই শুভ লক্ষণ বলে মনে করেন টেস্ট অধিনায়ক মিসবাহ। আর কোচ ওয়াকার মনে করেন টানা জয়ের মধ্যে থাকা দলকে হারানোটা অনেক বড় কৃতিত্ব এবং ঘুরে দাঁড়ানোটাই বীরত্ব। ভবিষ্যতে আসন্ন সিরিজগুলোয় এ জয়টা অনুপ্রেরণাদায়ক হবে বলেই মনে করেছেন ওয়াকার। জয়হীন থেকে দেশে ফিরতে হয়নি এবং হারানো বিশ্বাসটা শেষ ম্যাচে ফিরে পেয়েছে পাকরা।
×