ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিরিজ ও ম্যাচসেরা আজহার

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১০ মে ২০১৫

সিরিজ ও ম্যাচসেরা আজহার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ খুলনা টেস্ট ড্র করতেই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল, পাকিস্তানের প্রধান কোচ ওয়াকার ইউনুসের চাকরি যাচ্ছে। সঙ্গে এটাও জানা গেল, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মিরপুর টেস্ট দেখতে আসছেন। তিনি খেলা দেখবেন এবং যে ক্রিকেটাররা খারাপ করবেন, তাদের নামের পাশে লাল কালির দাগ পড়তে থাকবে। খেলা শুরু হলো এবং শাহরিয়ার ভিআইপি আসনে বসতেই যেন বদলে গেল পাকিস্তান। যে পাকিস্তান ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হেরেছে। একমাত্র টি২০ ম্যাচেও হেরেছে। প্রথম টেস্টে ড্র করেছে। মিরপুর টেস্টে একচেটিয়া প্রাধান্য বিস্তার করতে থাকল। শেষপর্যন্ত ৩২৮ রানের বড় ব্যবধানেই ম্যাচও জিতে নিল। সিরিজজুড়ে প্রথম জয় পেল পাকিস্তান। সেই সঙ্গে প্রথমবারের মতো সিরিজজুড়ে পাকিস্তানের কোন ক্রিকেটার ম্যাচ সেরাও হলেন; সিরিজ সেরাও হলেন। সিরিজ শুরু হয় ওয়ানডে দিয়ে। তিন ওয়ানডেতেই পাকিস্তান হারে। তিন ওয়ানডেতেই ম্যাচ সেরা বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাই হন। ৭৯ রানে জয়ী প্রথম ওয়ানডেতে ম্যাচ সেরা হন ৭৭ বলে ১০৬ রান করা মুশফিকুর রহীম। ৭ উইকেটে জেতা দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ম্যাচ সেরা হন ১১৬ বলে ১১৬ রান করা তামিম ইকবাল। ৮ উইকেটে জেতা তৃতীয় ওয়ানডেতে ম্যাচ সেরা হন ১১০ বলে অপরাজিত ১২৭ রান করা সৌম্য সরকার। শুধু ম্যাচেই নয়, ম্যাচ জেতানোর ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের আধিপত্য বজায় থাকে। ওয়ানডের সিরিজ সেরা হন প্রথম (১৩৫ বলে ১৩২ রান) ও দ্বিতীয় (১১৬ বলে ১১৬ রান) ওয়ানডেতে শতক করা তামিম ইকবাল। এরপর যখন একমাত্র টি২০ ম্যাচে খেলতে নামে বাংলাদেশ, সেটিতেও জয় তুলে নেয়। প্রথমবারের মতো টি২০তে ৭ উইকেটে পাকিস্তানকে হারায়। অসাধারণ ব্যাটিং করেন সাব্বির রহমান রুম্মন। ৩২ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ৫১ রান করেন। তার এ ইনিংসে বাংলাদেশও জয় পায়। ম্যাচ সেরা হন সাব্বির। নির্ধারিত ওভারে পাত্তাই পায়নি পাকিস্তান। শুধুই বাংলাদেশের জয়জয়কার হয়। সেই ধারা বজায় থাকে খুলনায় হওয়া প্রথম টেস্টেও। বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচটি ড্র হয়। প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে ড্র করে বাংলাদেশ। এ ড্র টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম ইকবাল ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস খেলেন। ২৭৮ বলে ১৭ চার ও ৭ ছক্কায় ক্যারিয়ারের সেরা ২০৬ রানের ইনিংস খেলেন। দেশের মাটিতে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকান। আর মুশফিকুর রহীমের (২০০ রান) পর এক ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্বিশতক করেন। সেই ইনিংসটি আবার বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ইনিংসে সবচেয়ে বড় ইনিংসও! ম্যাচ বাঁচানোতে তামিমই হন ম্যাচ সেরা। এ পর্যন্ত প্রাধান্য শুধুই থাকে বাংলাদেশের। কিন্তু যেই দ্বিতীয় টেস্ট মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হয়, পাকিস্তান বদলে যায়। শুরুর দিন থেকে সাড়ে তিন দিন পর্যন্ত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ থাকে পাকিস্তানের হাতেই। ম্যাচও জিতে পাকিস্তান। সিরিজ সেরা, ম্যাচ সেরার পুরস্কারও এবার পাকিস্তানের ভাগ্যেই জুটে। আজহার আলী প্রথম ইনিংসেই ক্যারিয়ারের সেরা ৪২৮ বলে ২০ চার ও ২ ছক্কায় ২২৬ রান তুলেন। ম্যাচ সেরা হন। এর সঙ্গে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৮৩ রানের সঙ্গে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫ রান করায়, টেস্ট সিরিজে ২ ম্যাচে ৩ ইনিংসে ১১.৩৩ গড়ে সর্বোচ্চ ৩৩৪ রান করায় আজহারই সিরিজ সেরা হন।
×