ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বরেকর্ড গড়ার অপেক্ষা বাড়ল টাইগার ওপেনারের

তিন হাজার রানের মাইলফলক তামিমের

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১০ মে ২০১৫

তিন হাজার রানের মাইলফলক তামিমের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সফরকারী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঘরোয়া সিরিজটা সবচেয়ে সুখকর হয়েছে তাঁর জন্যই। কারণ সব সমালোচনার জবাব ব্যাট হাতেই দিয়ে দিয়েছেন। ওয়ানডে সিরিজে টানা দুই সেঞ্চুরি আর একটি অর্ধশতক হাঁকিয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক রানের মালিক হয়ে গেছেন। দারুণ সুযোগ ছিল টেস্ট ক্রিকেটেও সর্বাধিক রান করার মোক্ষম সুযোগ। মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫৩ রান করলেই সেটা হতো। কিন্তু পারলেন না তামিম। দুই ইনিংস মিলিয়ে করতে পেরেছেন মাত্র ৪৬ রান। ফলে এখনও সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনের শীর্ষস্থানটা অটুট থেকে গেল। অপেক্ষা বাড়ল তামিমের। আগামী জুনে ভারতের বিরুদ্ধে একমাত্র টেস্টে মাত্র ৭ রান করলেই অবশ্য তা হয়ে যাবে। দেশসেরা না হতে পারলেও ইতোমধ্যেই দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ৩ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওই কীর্তি দেখিয়েছেন হাবিবুল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এবার সিরিজে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন বাঁহাতি ওপেনার তামিম। তাঁর আগে বাংলাদেশের কোন ওপেনার এত বেশি রান করতে পারেননি। ওয়ানডে, টি২০ ও টেস্ট তিন ফরমেটের ক্রিকেটেই তাঁর বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস রয়েছে। ওয়ানডেতে ১৫৪, টি২০ ক্রিকেটে অপরাজিত ৮৮ এবং টেস্টে ২০৬! এছাড়াও টেস্টে সর্বাধিক ৭টি এবং ওয়ানডেতে সর্বাধিক ৬টি করে সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর। এবার ওয়ানডে সিরিজে দারুণ ধারাবাহিকতার পরিচয় দেয়া তামিম হয়ে গেছেন বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক রানের মালিক। ওয়ানডেতে তাঁর রান ৪৪৩৭। অথচ এই তামিমকে নিয়ে গত বছর থেকেই শুরু হয়েছিল বিতর্ক! দলে কোন যোগ্যতায় খেলছেন তিনি এমন প্রশ্নই বারবার উঠেছে। তীর্যক কথাও কম শুনতে হয়নি। এ বছর বিশ্বকাপেও সময়টা ভাল যায়নি বলে সমালোচনার তীরে বিদ্ধ ছিলেন। কারণ তামিম ধারাবাহিক না! কিন্তু এই তামিমই একমাত্র বাংলাদেশী ক্রিকেটার যিনি ওয়ানডেতে টানা ৪টি হাফসেঞ্চুরি করেছেন ২০১২ এশিয়া কাপে। এই তামিমই ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে টানা পাঁচটি অর্ধশতাধিক রানের ইনিংস ( ৮৫, ৫২, ৫৫, ১০৩, ১০৮) উপহার দিয়েছিলেন, যা বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক। দারুণ এক রেকর্ড গড়া হয়ে যেত মিরপুর টেস্টের চতুর্থ দিনে আর ১৬ রান করতে পারলেই। একই দলের টেস্ট, ওয়ানডে দুই ধরনের ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ের মূল তিন রেকর্ডই (রান, সেঞ্চুরি, সর্বোচ্চ ইনিংস) হয়ে যেত তামিমের। কিন্তু আগের দিনের ৩২ রান নিয়ে খেলতে নামা তামিম আর মাত্র ১০ রান যোগ করতে পারলেন। এখন তাঁর টেস্টে রান ৩০২০, মাত্র ৬ রান পিছিয়ে থাকলেন হাবিবুলের চেয়ে (৩০২৬)। কীর্তির দিক দিয়ে তামিমের সবচেয়ে কাছাকাছি থাকতেন শচীন টেন্ডুলকর ও রিকি পন্টিং। দু’জনই নিজ নিজ দলের টেস্ট ওয়ানডের সর্বোচ্চ রানের মালিক, টেস্ট এবং ওয়ানডের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিকও। তবে এ দুই ফরমেটে এই দু’জন নিজ দলের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস খেলতে পারেননি। অবশ্য সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি, হয়ত জুনেই ভারতের বিরুদ্ধে সেটা করে ফেলবেন। সেজন্য করতে হবে দুই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ৭ রান। সেটিও কোনভাবে না করতে পারলে পরবর্তী যেকোন টেস্টেই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বকালের সেরা এই ওপেনারের সুযোগ থাকছে শচীন-পন্টিংকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।
×