ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বহুপাক্ষিক সংলাপ

কৃষিপণ্যের উপযুক্ত মূল্য ও সরকারী সেবা পাচ্ছেন না কৃষক

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ১০ মে ২০১৫

কৃষিপণ্যের উপযুক্ত মূল্য  ও সরকারী সেবা পাচ্ছেন না কৃষক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কৃষি পণ্য বিক্রি করে কৃষকেরা উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছেন না। সরকারী বিভিন্ন সেবা পেতেও তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত বিভিন্ন সেবা পেতে স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীরা কৃষকের অন্যতম বাধা। খাস জমি ও জলাশয়গুলোর লিজ রাজনৈতিক কর্মীদের নামে বরাদ্দ হয়, আর বঞ্চিত হয় সমাজের কৃষক। কৃষকের অধিকার আদায়ে প্রয়োজনে প্রতিটি উপজেলায় কৃষি আদালত গঠন করতে হবে। সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের অভাবে পরিবেশের স্থায়িত্বশীল ব্যবহার, সামাজিক স্থিতিশীলতা, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়। অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অবহেলার কারণে মানুষ জনসম্পদ থেকে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে। অধিকার রক্ষায় সমাজের এসব বৈষম্য দূর করতে হবে। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে “কৃষি ও কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় বহুপাক্ষিক সংলাপ”- এ বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এ্যাকশনএইড বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় কৃষক মৈত্রী ও এশিয়ান ফার্মারস এ্যাসোসিয়েশন। সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, কৃষি পণ্য বিক্রি করে কৃষকেরা উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছেন না। কৃষকের অধিকার আদায়ে প্রয়োজনে প্রতিটি উপজেলায় কৃষি আদালত করতে হবে। বর্তমানে কৃষকেরা ১০ টাকায় ব্যাংক এ্যাকাউন্ট করার সুবিধা পাচ্ছে, তদ্রƒপ ১০ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্প দিয়ে যেন তারা মামলা দায়ের করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। জাতীয় সংসদে সরকার বিল না আনলে বেসরকারীভাবে আমরা বিল আনব। বিল পাস না হলে কৃষকদের নিয়ে আন্দোলন গড়েতোলা হবে। কৃষকের জন্যে কৃষি আদালতের প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি। তিনি আরও বলেন, আমরা একটি মানবিক ও বৈষম্যহীন সমাজ চাই। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বংলাদেশে আমরা এই বৈষম্যমূলক সমাজ চাইনি। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির বিচার এখনও সম্ভব হয়নি। অর্থমন্ত্রী বাজেটের আগের দিন পর্যন্ত বলেন, কালো টাকা সাদা হবে না; কিন্তু বাজেটে এর উল্টোটা ঘটে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেলে বিদেশ থেকে খাদ্যশস্য বিশেষ করে চাল-গম আমদানি করতে হবে, এটার কোন মানে হয় না। হত দরিদ্রের জন্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। আওয়ামী লীগ নেতা নেত্রকোনা-১ আসনের সাংসদ ছবি বিশ্বাস তার বক্তব্যে বলেন, যারা উৎপাদক শ্রেণী অর্থাৎ কৃষক তাদের টিকিয়ে রাখতে হবে। তাদের অধিকারগুলো রক্ষা করতে হবে। মৎস্য চাষ ও ভূমির অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন চলছে তা চলবে। আইন প্রণয়ন করে রাজনৈতিকভাবে তার সমাধান করতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশের উন্নয়নে কৃষি ও শিল্প বিল্পব ঘটাতে বলেছিলেন; কিন্তু তাকে হত্যার পর বৈদেশিক ভিন্ন ভিন্ন প্রভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ তার বক্তব্যে বলেন, দরিদ্রের জন্যে কাজ করা অসম্ভব-তা নয়। তার জন্যে দীর্ঘ সময় লেগে থাকতে হয়। বর্তমানে কৃষি শ্রমিকেরা প্রতি দিনে শ্রমের বিনিময়ে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা পাচ্ছেন। শ্রমিকের মূল্য বাড়লেও কৃষি পণ্যের মূল্য বাড়ছে না, ফলে ছোট ছোট কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবিরের সঞ্চালনা ও কেন্দ্রীয় কৃষক মৈত্রীর সভাপতি মোঃ মনির আহমেদের সভাপতিত্বে বহুপাক্ষিক ওই সংলাপে অংশ নেন এশিয়ান ফার্মারস এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক এস্থার পেনুনিয়া এবং কৃষক ও কৃষির সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
×