ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

নৃত্য গীত কবিতায় ছায়ানটের রবীন্দ্র উৎসব সমাপ্ত

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১০ মে ২০১৫

নৃত্য গীত কবিতায় ছায়ানটের রবীন্দ্র উৎসব সমাপ্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসবের আয়োজন করে ছায়ানট। শনিবার ছিল উৎসবের শেষ দিন। সন্ধ্যায় ধানম-ির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে এদিন পরিবেশিত হয় এদিন পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রনাথের গান থেকে কবিতা ও কবিতা থেকে গান নিয়ে সন্্জীদা খাতুনের গ্রন্থনা ‘রূপে রূপে অপরূপ’। উপস্থাপিত হয় সুরতীর্থের মূল গান ও তা থেকে ভাঙা রবীন্দ্রসঙ্গীতের উপস্থাপন। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে জাগো আর্ট সেন্টার ও ভাবনার শিল্পীরা। সেই সঙ্গে ছিল অতিথি এবং ছায়ানটের শিল্পীদের একক গান, আবৃত্তি ও পাঠ। ছায়ানটের শিল্পীদের সম্মেলক গান দিয়ে শুরু হয় পরিবেশনা। এরপর নৃত্য-গীতের সমন্বিত পরিবেশনায় অংশ নেয় ভাবনা। মায়াবী কণ্ঠের সুরধ্বনি ছড়িয়ে একক কণ্ঠে গান শোনান মোস্তাফিজুর রহমান, সুস্মিতা আহমেদ, দিবাকর বিশ্বাস, লিলি ইসলাম, নীলোৎপল সাধ্য, অদিতি মহসিন, পাপিয়া সারোয়ার, শামা রহমান, রোকাইয়া হাসিনা ও সারোয়ার হোসেন। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে সুরতীর্থ। মুদ্রার সঙ্গে অভিব্যক্তির প্রকাশে সম্মেলক নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যম নৃত্যশীলন কেন্দ্র। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ছোটগল্পের সংকলন ‘জনকের মুখ’ ॥ এক বইয়ে ঠাঁই পেয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত ৫৫টি ছোটগল্প। আর গল্পগুলোয় উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধুর জেলজীবন থেকে শুরু করে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নিহত হওয়ার ঘটনা। শুরুটা হয়েছে আবুল ফজলের লেখা ‘ইতিহাসের কণ্ঠস্বর’ শীর্ষক গল্প দিয়ে। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণ থেকে নিহত হওয়ার ঘটনা পর্যায়ক্রমে এসেছে এই গল্পে। আর ‘মৃত্তিকার করতলে’ নামে শেষ গল্পটা লিখেছেন মোজাম্মেল হক নিয়োগী। যুক্ত হয়েছে শওকত ওসমানের ছোটগল্প ‘দুই সঙ্গী’। সবগুলোই জাতির জনককে নিয়ে লেখা। প্রকাশিত হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে এমন ৫৫ লেখক রচিত ছোটগল্প-সংকলন ‘জনকের মুখ’। শিশুসাহিত্যিক আখতার হুসেন সম্পাদিত গল্প-সংকলনটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা কথাপ্রকাশ। শনিবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে গ্রন্থটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদারের সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ইতিহাসবিদ ও প্রাবন্ধিক মুনতাসীর মামুন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এবং গবেষক ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ। আবৃত্তিশিল্পী ইকবাল খোরশেদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কথা প্রকাশের প্রকাশক জসিম উদ্দিন। একটি সম্মেলক নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে শুরু হয় প্রকাশনা অনুষ্ঠান। এরপর পাঠ করা হয় প্রকাশনা উৎসব উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেরিত অভিনন্দন বার্তা। এটি পাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পী মাহমুদা আখতার। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একে অন্যের পরিপূরক দুটি নাম। এটি থেকে পৃথক করার কোন অবকাশ নাই। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় কখনও তাকে ব্যাঘাত করার চেষ্টা হলেও সত্য এতই ইতিহাস বলিষ্ঠ যে তাকে কখনও মুছে দেয়া যায় না। গ্রন্থটি সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনের ব্যাপ্তি ও বিশাল এবং বিস্তৃত। বিচিত্র এ জীবনকে শিল্পের নানামাত্রিকতায় তুলে ধরা খুবই যুক্তিসংগত। আজকের এ গ্রন্থের প্রকাশ এরই ধারাবাহিকতা ছাড়া কিছু নয়। এ বইটি প্রকাশের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের মানুুষেরা সত্যতার সঙ্গে জানতে পারবে। বইটি যেমন গল্পে গল্পে জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তানের কথা তুলে ধরবে ঠিক তেমনি সমকালীন পরিবেশ ও প্রতিবেশ সম্পর্কেও অবহিত করবে। এই মাটি, এই দেশ, দেশের মানুষের জন্য জনকের ভালবাসা, আত্মত্যাগ, সংগ্রাম, স্বপ্নÑসব কিছুই প্রকাশ পেয়েছে কোন না কোনভাবে। তেমনি জনকের প্রতি জাতির বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসা, তাও ফুটে উঠেছে গল্পগুলোতে প্রকাশনা উৎসবে এ তথ্য জানালেন সংকলনটির সম্পাদক আখতার হুসেন। ‘হাত দিয়ে দেখা, চোখ দিয়ে আঁকা’ ॥ রাজধানীর অভিজাত শপিংমল বসুন্ধরা সিটির লেভেল সেভেনে শুরু হলো ‘হাত দিয়ে দেখা, চোখ দিয়ে আঁকা’ শীর্ষক তিন সপ্তাহব্যাপী বসুন্ধরা পেপার ড্রয়িং প্রদর্শনী। বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট ও বসুন্ধরা পেপারের ব্যবস্থাপনায় প্রদর্শনীটির আয়োজন করে আঁতুড়ঘর নামের একটি সংগঠন। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হলেন আব্দুল হালিম চঞ্চল, পার্থ প্রতীম কু-ু, আব্দেল্লা সাইদ, সাইফুল্লাহ বিন আসাদ ও অদ্বৈত অভিজ্ঞান। শনিবার বিকেলে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বরেণ্য শিল্পী রফিকুননবী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বসুন্ধরা গ্রুপ ও ইন্টার বসুন্ধরা সিটির উর্ধতন উপদেষ্টা (কারিগরি) চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক কালের কন্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। শিল্পের সুষমা ও শিল্পীর তুলির নান্দনিকতার এই প্রদর্শনী উপভোগে রাজধানীর দূর-দূরান্ত থেকেও প্রদর্শনীস্থলে ছুটে এসেছিলেন শিল্পানুরাগীরা। দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা স্মারক বক্তৃতা ॥ কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ও তাঁর ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা। মুক্তিযুদ্ধকালীন একাত্তরের ৭ মে রাতে তাঁদের দু’জনকে অপহরণ করেছে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা। এরপর থেকে আজ অবধি বাবা-ছেলের সন্ধান মেলেনি। মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী এই দুই শহীদের ৪৪তম অপহরণ দিবস উপলক্ষে স্মরণ করা হলো তাঁদের। শনিবার আয়োজন করা হয় দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা স্মারক বক্তৃতা ও স্মারক সম্মাননা। বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা দিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। আর স্মারক সম্মাননা প্রদান করা হয় এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও প্রয়াত চিকিৎসাবিদ জাতীয় অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে। মোহাম্মদ ইব্রাহিমের পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন তাঁর ছেলে অধ্যাপক ডাঃ এ কে আজাদ। শিল্পকলা একাডেমির রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ॥ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৪তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। একক সঙ্গীত, সমবেত সঙ্গীত, দলীয় নৃত্য, আবৃত্তি ও নৃত্যনাট্যের মাধ্যমে শনিবার শেষ হলো এই বর্ণিল আয়োজন। বৈশাখী সন্ধ্যা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সমাপনী অনুষ্ঠানে একক কণ্ঠে গান শোনান ফাহিম হোসেন চৌধুরী। সুরেলা কণ্ঠে এই শিল্পী গেয়ে শোনান ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী’। ‘আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে’ গানটি পরিবেশন করেন আছমা আজমেরী। শেখ শহীদ পারভেজের কণ্ঠে গীত হয় ‘আজি বিজন ঘরে নিশিথ রাতে’। ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’ গানটি পরিবেশন করেন ফাতেমা ইয়াসমীন তামিম। মিলন দেবের কণ্ঠে গীত হয় ‘আকাশ ভরা সূর্য তারা’। প্রাণ চায় চক্ষু না চায় গানটি শোনান আকিব বিন আক্তার। এছাড়াও শ্রোতাদের হৃদয়ে স্নিগ্ধতার পরশ ছড়িয়ে গাওয়া হয় ‘জগৎ জুড়ে উদার সুরে’, ‘তোমার ওই ঝরনা তলায় নির্জনে’, ‘তোমার নাম জানিনি সুর জানি’, ‘ভরা থাক স্মৃতি সুধায়’, ‘উঠ উঠরে বিফলে প্রভাত বহে যে’ ও ‘আমায় মুক্তি যদি দাও’। সুরললিত কণ্ঠে গানগুলো পরিবেশন করেন সালমা আকবর, সেমন্তী মঞ্জরী, মনসুরা বেগম, অনিন্দিতা রায়, মাকছুরা আক্তার অন্তরা, রতœা সরকার ও পূরবী রাণী সমদ্দার। সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক দল ও গীতাঞ্জলি সংগঠন। মুন্সীগঞ্জে একক সঙ্গীতসন্ধ্যা ॥ স্টাফ রিপোর্টার মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, মুন্সীগঞ্জে নুরুল ইসলাম সুজনের একক সঙ্গীতসন্ধ্যা হয়েছে। শনিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে লালন, মুর্শিদী, ভাটিয়ালিসহ নানা গানের সুরে মুখরিত করেন তিনি। ধলেশ্বরী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত এই সঙ্গীতসন্ধ্যায় নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেয়। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাগর হোসেন জানান, ধলেশ্বরী শিল্পীগোষ্ঠী সভাপতি নুরুল ইসলাম সুজনের গানে গানে ছিল সমাজকে সুন্দর এবং স্বাচ্ছন্দ্য করার বাণী। সুর আর কথায় দেশজ সংস্কৃতি বিকাশই ছিল আয়োজনের মূল লক্ষ্য। হারিয়ে যাওয়া গানও স্থান পায় এই আসরে। আর কালজয়ী গানের সুর আলোড়িত করে মিলনায়তন। এই আসরে গানের ফাঁকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ঢালী, মুন্সীগঞ্জ থিয়েটারের সভাপতি হুমায়ুন ফরিদ, এ্যাডভোকেট কাজী রোমেল ও শিল্পী সৈয়দ মোতালেব প্রমুখ।
×