ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সোনারগাঁও ও মাগুরায় বাম্পার ফলন ॥ রাজশাহীতে দাম বেশি

মধুমাসের আগেই বাজারে এসেছে লিচু

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ৯ মে ২০১৫

মধুমাসের আগেই বাজারে এসেছে লিচু

নিজস্ব সংবাদদাতা, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারাযণগঞ্জ, ৮ মে ॥ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে বাগানের গাছের ডালে ডালে থোকায় থোকায় ঝুলছে মৌসুমী ফল লিচু। লিচু চাষ সোনারগাঁয়ের ঐতিহ্য। লাল টসটসে। দেখলে জিভে পানি এসে যায়। সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় এবার অন্য বছরের তুলনায় লিচুর ফলন ভাল হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের মানুষ প্রতিদিন সোনারগাঁয়ে ছুটে আসছে লিচু কিনতে। শুক্রবার সোনারগাঁয়ে গিয়ে গাছে গাছে লিচু ঝুলতে ও বেচা-বিক্রি করতে দেখা গেছে। পাইকাররা লিচু বাগান কিনে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন শহরে। সর্বত্রই চলছে লিচু বিক্রি। বাগান মালিকরা জানান, এখানকার লিচু পাওয়া যাবে আরও ১২-১৫ দিন পর্যন্ত। জানা যায়, সোনারগাঁও উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় ৩ শতাধিক লিচু বাগান। এসব লিচু বাগানে গত ৩ বছরের তুলনায় এ বছর লিচুর আশানুরূপ ফলন হয়েছে। সোনারগাঁওয়ের কদমী, চায়না-৩, মোজাফফর পুরি, এলাচী, বাদামী (পাতি) এ পাঁচ ধরনের লিচুর চাষ হয়ে থাকে। লিচু ব্যবসায়ীরা বাজারে সাধারণত শুরুতে এক শ’ কদমী লিচু এক শ’ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে বিক্রি করে থাকেন। বোম্বাই লিচুর এক শ’ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, পাতি লিচুর এক শ’ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করে থাকেন। লিচু বিক্রেতা রিয়াজ হোসেন জানান, এখানের লিচু আল্লাহ দান। ফরমালিন মুক্ত থাকে বিধায় ঢাকা, কুমিল্লা, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ শহর ও মুন্সীগঞ্জ থেকেও ক্রেতারা লিচু কিনতে এখানে আসছে। সোনারগাঁও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশেক পারভেজ সাংবাদিকদের জানান, সোনারগাঁওয়ে সর্বসাকুল্যে এখন লিচু গাছের সংখ্যা প্রায় ৮/১০ হাজার। লিচু চাষের জন্য সোনারগাঁওয়ে মাটি ও আবহাওয়া বিশেষ উপযোগী। স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, রাজশাহীর বাজারে উঠেছে গ্রীষ্মের রসাল ফল লিচু। মধুমাস জ্যৈষ্ঠ না আসলেও এ মাসের রসাল ফল লিচু এখন বিক্রি হতে শুরু করেছে। রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন বাজারে এখন দেখা মিলছে লিচু। তবে বাজারে আমদানি কম থাকায় লিচুর দাম অনেকাংশে বেশি। নতুন ফল বাজারে দেখে কেনার আশায় যারা যাচ্ছেন তারা দাম শুনে হতাশ হলেও অনেকে বেশি দামেই কিনছেন রসাল এ ফল। বৃহস্পতিবার রাজশাহীর সাহেব বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েক ব্যবসায়ী লিচুর পসরা নিয়ে বসেছেন। তারা বলছেন, আমদানি কম হওয়ায় দাম বেশি। আমাদানি বেড়ে গেলে দাম কিছুটা কমতে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা আর অধিক দামের আশায় চাষীরা অপরিপক্ক লিচুও আগাম বাজারে তুলছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে খুচরা লিচু প্রতি এক শ’ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। টানা কয়েকদিন প্রচ- রোদের কারণে আগেই এসব লিচু এসেছে বলে জানান বিক্রেতারা। নিজস্ব সংবাদদাতা, মাগুরা থেকে জানান, মাগুরায় চলতি মৌসুমে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজরে নতুন লিচু উঠতে শুরু করেছে। এ মৌসুমে জেলায় ৫ কোটি টাকার লিচু উৎপন্ন হয়েছে । জানাগেছে, জেলার হাজরাপুর, ইছাখাদা, রাউতড়া, খালিমপুর, হাজীপুর, রাঘবদাইড়, নড়িহাটি, শীবরামপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লিচুর চাষ হয়েছে। এ সব এলাকায় এক হাজারেও বেশি বাগান রয়েছে। বাজারে দেশী জাতের লিচু উঠেছে। আমদানি ভাল হওয়ায় দামও অনেক কম। বর্তমানে দেশী লিচু প্রতিশত দেড় শত টাকা থেকে দুইশত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে চাষীরা লিচু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ৫ হাজার লোকের মৌসুমী কর্মসংস্থান হয়েছে। তারা লিচু গাছ প্রহারা ও গাছ থেকে লিচু পাড়া ইত্যাদি কাজ করছেন। তারা দৈনিক ৩শ’ ৪শ’ টাকা আয় করছেন। কৃষকরা জানান, লিচু পাকতে শুরু করেছে। এ বছর ফলন ভাল হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পাকা লিচু বাজারে আসতে শুরু করবে ।
×