ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্টিভকে মেরেই ফেলতে চেয়েছিলেন এ্যামব্রোস!

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ৮ মে ২০১৫

স্টিভকে মেরেই ফেলতে চেয়েছিলেন এ্যামব্রোস!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সাল ১৯৯৫। ভেন্যু-পোর্ট অব স্পেন, ট্রিনিদাদ। ফিল্ডিং করছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাট করছে অস্ট্রেলিয়া। বল হাতে কার্টলি এ্যামব্রোস একের পর এক উইকেট নিতে থাকলেও, কোনভাবেই স্টিভ ওয়াহকে আউট করতে পারছেন না। মেজাজ এতটাই খারাপ হয়েছিল, বাউন্সের পর বাউন্স দিচ্ছেন এ্যামব্রোস। একের পর এক বল স্টিভের শরীরে আঘাত হানছে। কিন্তু কোনভাবেই স্টিভ আউট হওয়ার পাত্র নন। একটা সময় স্টিভকে বলেই ফেললেন এ্যামব্রোস, ‘জানে মেরে ফেলব!’ একটু ‘কড়া’ ক্রিকেট সমর্থকদের কার্টলি এ্যামব্রোস আর স্টিভ ওয়াহ’র মুখোমুখি লড়াইয়ের কথা মনে থাকার কথা। স্লেজিং পারদর্শী অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি রাগিয়ে দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসারকে। সে ব্যাপারে গত ২০ বছরে মুখ খুলেননি এ্যামব্রোস। অবশেষে ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে জানালেন ভয়াবহ এক তথ্য। এতটাই রেগে গিয়েছিলেন যে, স্টিভ ওয়াহকে প্রাণে মারতে চেয়েছিলেন উইন্ডিজ এই কিংবদন্তি। বললেন, ‘আমি মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলাম। চেষ্টা করছিলাম বোলিং শেষ করেই দ্রুত রান-আপ এন্ডে ফিরে আসার জন্য। কিন্তু পারছিলাম না। আমার মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল। ওর কাছে গিয়ে গিয়ে বলেছিলাম, আমি তোমাকে জানে মেরে ফেলব! এবং এখানেই! সেটা করতে গিয়ে আমি নিজের ক্যারিয়ারের তোয়াক্কা করব না।’ এ্যামব্রোস জানান, ‘এর পরই সমঝোতা করতে আসেন অধিনায়ক রিচি রিচার্ডসন। বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বোলিং করতে পাঠিয়ে দেন, ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে যাই।’ এ্যামব্রোস শান্ত হয়ে গেলেও সেদিন স্টিভ কিন্তু শান্ত হননি। স্টিভ যেন প্রতিজ্ঞা করেই নেমেছিলেন, কোনভাবেই আউট হবেন না। প্রথম ইনিংসে ১২৮ রানেই অলআউট হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু স্টিভ ঠিকই অপরাজিত ছিলেন। ১০১ বল খেলে ৬ চারে অপরাজিত ৬৩ রান করেছিলেন স্টিভ। এ্যামব্রোস নিয়েছিলেন প্রথম ইনিংসে ৫টি উইকেট। কোনভাবেই স্টিভকে আউট করতে পারেননি এ্যামব্রোস। বল করতে আসলেই যে পেসার উইকেট পাচ্ছেন, স্টিভের কাছে এসেই আর উইকেট নিতে পারেননি। তাই মেজাজ ঠিক ছিল না এ্যামব্রোসের। একটা সময় দুজনই তর্কে জড়িত হয়ে যান। বার বার স্টিভ বিরক্ত করছিলেন এ্যামব্রোসকে। এ্যামব্রোসও একটা সময় বিরক্ত হয়ে বলেই ফেলেন, ‘মেরে ফেলব।’ এরপর থেকে যে এ্যামব্রোস বাউন্সের পর বাউন্স দিতে থাকেন, স্টিভের শরীরে বল লাগাতে থাকেন। তা চলতেই থাকে। কিন্তু স্টিভও এ্যামব্রোসের বলগুলো ভালভাবেই নিয়ন্ত্রণ করেন। কখনও বসে গিয়ে। কখনও ব্যাট দিয়ে ঠেকিয়ে। কখনও আবার শরীর দিয়েই বল ঠেকান। এ জন্য স্টিভকে আউটই করতে পারেননি এ্যামব্রোস। দ্বিতীয় সেশনে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ১০৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। ৯ উইকেটে হারে। স্টিভ ওয়াহ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন। এবারও এ্যামব্রোস নেন ৪ উইকেট। ম্যাচ সেরা হন। কিন্তু স্টিভের উইকেট এবারও নিতে পারেননি এ্যামব্রোস। দুজনের লড়াইয়ে জয়ী হন স্টিভই। তবে ২০ বছর পর যে এ্যামব্রোস এমন কথা বলছেন, তাতেই বোঝা যাচ্ছে তখনকার সময়ে কতটা বিধ্বংসী বোলিং করতেন এ পেসার। আর কতটা মেজাজী বোলারও ছিলেন। তাই তো ব্যাটসম্যানকে ‘মেরে ফেলব’ বলেও হুমকি দিয়েছিলেন।
×