ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ-ভারত স্থল সীমান্ত চুক্তির পক্ষে ভোট দিলেন উপস্থিত সবাই;###;৬৮ বছরের ছিটমহল সমস্যার অবসান;###;সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য ॥ বললেন শেখ হাসিনা;###;প্রধানমন্ত্রীকে নরেন্দ্র মোদির ফোন

লোকসভায় পাস

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৮ মে ২০১৫

লোকসভায় পাস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বহু প্রতীক্ষিত স্থল সীমান্ত বিল ভারতের লোকসভায় পাস হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির লোকসভায় বিলটি উত্থাপনের পরে তা সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এই বিল পাসের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের সীমান্তের প্রায় ৬৮ বছরের ছিটমহল সমস্যার সমাধান হলো। লোকসভায় সীমান্ত বিল পাসের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শেখ হাসিনাও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের সরকার, জনগণ ও তাঁর নিজের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বিলটি পাস হওয়ায় তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, বিরোধীদলীয় নেতা সোনিয়া গান্ধী, ভারত সরকার, লোকসভা ও রাজ্যসভার সকল সদস্য, প্রশাসন এবং ভারতের জনগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। এদিকে সীমান্ত বিল পাস হওয়ার ঘটনাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে অভিহিত করেছেন। বিলটি পাসের বিষয়ে লোকসভার স্পীকার সুমিত্রা মহাজন বলেছেন, সীমান্ত চুক্তি বিল পাসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আরও গভীর সুসম্পর্ক তৈরি হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় পৌনে চারটায় বিলটি লোকসভায় অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা আলোচনা শেষে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ছয়টায় বিলটি পাস হয়। এ সময় লোকসভার ৩৩১ জন উপস্থিত সদস্যের সকলেই বিলের পক্ষে ভোট দেন। এর আগে বিলের ওপর রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর স্বাক্ষর নেয়া হয়। স্বাক্ষরের পরে বিলটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য লোকসভায় উত্থাপন করা হয়। লোকসভার স্পীকার সুমিত্রা মহাজন বিলটি পাসের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত এই বিল পাস করা হলো। এই বিল পাসের মধ্যে এই বিলের মধ্যে দুই দেশের সীমান্ত চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ সম্ভব হবে। এছাড়া এই বিল পাসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আরও গভীর সম্পর্ক তৈরি হবে। এদিকে ভারতে সীমান্ত বিল পাস হওয়ার ঘটনাকে সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া সীমান্ত বিল প্রক্রিয়ায় যুক্ত সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লোকসভায় বিলটি উত্থপানকালে বলেন, সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করা হলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অচিহ্নিত সীমানা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ বন্ধ করা সহজ হবে বলেও তিনি জানান। সুষমা স্বরাজ আরও বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশেরই আগ্রহ রয়েছে। এছাড়া দুই দেশ ইতিমধ্যেই সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হয়েছে বলেও তিনি জানান। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল লোকসভায় ওঠানোর আগে তা পাসের জন্য বুধবার রাজ্যসভায় উত্থাপন করেন। উপস্থিত সদস্যদের সকলেই বিলটির পক্ষে ভোট দেন। বিলটি পাসের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, এই বিল পাসের মাধ্যমে প্রতিবেশী দু’দেশের মধ্যকার দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হবে। একইসঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজন এর মাধ্যমে লাভবান হবে। বিলটি পাসের বিলম্বের কারণ ব্যাখ্যা করেন সুষমা স্বরাজ। এছাড়া অসমকে বাদ দিয়ে বিলটি কেন আনার চেষ্টা করা হয়েছিল সে বিষয়েও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভারতের লোকসভায় স্থল সীমান্ত চুক্তি পাস হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেছেন নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী টুইট করে ফোন কলের কথা উল্লেখ করেন। এতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করে বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে জানান। মোদি টুইটে বলেন, স্পোক টু বাংলাদেশ পিএম শেখ হাসিনা এ্যান্ড কনভেইড মাই গ্রিটিংস টু দ্য পিপল অব বাংলাদেশ অন দিস ল্যান্ডমার্ক ওকেশন। আজ শুক্রবার ভারতের লোকসভার চলতি অধিবেশন শেষ হবে। এই অধিবেশন শেষের একদিন আগেই বিলটি পাস হলো। দুই দেশের ছিটমহল সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে মঙ্গলবার ভারতের মন্ত্রিসভায় সীমান্ত বিল অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের ছিটমহলবাসীর ৬৮ বছরের দুঃখ-যন্ত্রণার অবসান হলো। অসমকে বাদ রেখে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। মঙ্গলবার অসমকে রেখেই সীমান্ত বিলের অনুমোদন দেয়া হয় ভারতের মন্ত্রিসভায়। প্রধানমন্ত্রী মোদির সভাপতিত্বে ভারতের মন্ত্রিসভায় সীমান্ত বিল অনুমোদনের লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনের খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। ১৯৭৪ সালে ঢাকা ও দিল্লী সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশ সেই বছরই চুক্তিটি অনুস্বাক্ষর করে। এরপর ২০১১ সালে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রটোকল স্বাক্ষর করা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ভারত কোনটিতেই অনুস্বাক্ষর করতে পারেনি। বিগত কংগ্রেস আমলে বিরোধীদল বিজেপি ও অসম গণপরিষদ এই বিলের বিরোধিতা করে বলেছিল, ছিটমহল বিনিময় হলে যে পরিমাণ জমি হাতবদল হবে, তাতে ভারত প্রায় দশ হাজার একর বেশি জমি হারাবে। এরপর নানা তৎপরতায় বিজেপি শেষ পর্যন্ত নরম হলেও অসম গণপরিষদের সঙ্গে যোগ দেয় পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন মমতা ব্যানার্জীর তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলাদেশের সঙ্গে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তি এবং ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত প্রটোকল বাস্তবায়নে ভারতের সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন। সে হিসেবে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ভারতের পার্লামেন্টে ওঠে স্থলসীমান্ত চুক্তি। বিলটি উত্থাপন করতে গিয়ে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশীদ বিরোধিতার মুখে পড়েন। এর আগে সে বছরের মে ও আগস্ট মাসে আরও দুই দফা এই বিলটি উত্থাপনের চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন তিনি। সে সময় তিনি বিরোধীদের তোপের মুখেও পড়েন। সূত্র জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ভারত সফরের সময় সেদেশের সরকারী দল বিজেপি এবং বিরোধী দল কংগ্রেসের একাধিক নেতার সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আলোচনা করেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদকে জানান, রাজ্যসভায় স্থায়ী কমিটির সাবেক মন্ত্রী শশী থারুরের নেতৃত্বে পুনর্গঠন করা হয়। কমিটিতে তিন মাস ধরে আলোচনার পর সীমান্ত বিল চূড়ান্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, বিলটি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে এক বৈঠকে কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা এবং বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম নবী আজাদও জানিয়েছিলেন, তার দল বিলটি পাসের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তারা বিলটি বিবেচনা করবে। সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় অসমকে বাদ রেখে বিলটি লোকসভায় অনুমোদনের উদ্যোগ নিয়েছিল ভারত। তবে শেষ পর্যন্ত অসমকে রেখেই স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবে সায় দেয় ভারতের মন্ত্রিসভা। অসম বিজেপির পক্ষ থেকে স্থল সীমান্ত চুক্তির বিরুদ্ধে তীব্র বিরোধিতার মুখে চুক্তি থেকে অসমের ছিটমহলগুলো বাদ দেয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিবেচনা করেছিলেন। তবে স্থল সীমান্ত চুক্তি থেকে অসমকে বাদ না দিতে মোদিকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। অসমকে বাদ দিলে রাজ্যসভায় এ বিল পাসে সমর্থন দেয়া হবে না বলে ইঙ্গিত দেয় প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। শেষ পর্যন্ত সোমবার রাতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের বাসভবনে এক বৈঠকে অসমকে রেখেই প্রস্তাবটি পাসের জন্য সিদ্ধান্ত হয়। অসম বিজেপির সভাপতি সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্যসহ দলের সাংসদরাও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী মোদির সভাপতিত্বে মঙ্গলবার ভারতের মন্ত্রিসভা সংবিধান সংশোধনের খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন করে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পরে বৃহত্তর রংপুর-দিনাজপুর ও কোচবিহারের সীমানা নিয়ে সমঝোতা না হওয়ায় ছিটমহলের উদ্ভব হয়। সমস্যা সমাধানে ১৯৫৮ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান নুনের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল। যেটা নেহরু-নুন চুক্তি হিসেবে পরিচিতি পায়। পরবর্তীতে এই চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এরপর ১৯৭৪ সালে ছিটমহল বিনিময়, অমীমাংসিত সীমান্ত ও অপদখলীয় জমি নিয়ে সমস্যা সমাধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যেটা মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি নামে পরিচিত। তখন এই চুক্তি বাংলাদেশের পার্লামেন্টে অনুমোদিত হলেও ভারতের সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দেয়ায় দেশটির পার্লামেন্টে চুক্তিটি অনুমোদন করা হয়নি। ফলে এই চুক্তি বাস্তবায়ন আটকা পড়ে যায়। এরপর কেটে গেছে আরও ৪০ বছর, তবে এই চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি। এদিকে সীমান্ত বিল পাসের বিরুদ্ধে প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বিরোধিতা করলেও মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তিনি তাঁর আগের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে সীমান্ত বিলের পক্ষে অবস্থান নেন। সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত আইনগতভাবে স্বীকৃতি পাবে। বর্তমানে দুই দেশ সীমান্ত রেখা মেনে নিলেও এর আইনগত স্বীকৃতি নেই। এ ছাড়া আইনের বাস্তবায়নের ফলে দুই দেশে অবস্থিত ছিটমহল বিনিময় এবং অপদখলীয় জমি হস্তান্তর করাও সম্ভব হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মোট ছিটমহলের সংখ্যা ১৬২টি। এর মধ্যে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতের ছিটমহলের সংখ্যা ১১১। আর ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের ছিটমহল ৫১টি। চুক্তি বাস্তবায়নের পর ভারতের ১১১টি ছিটমহল যার জমির পরিমাণ ১৭ হাজার একর বাংলাদেশের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। অনুরূপভাবে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ভারতে যুক্ত হবে। ৫১টি ছিটমহলে জমির পরিমাণ সাত হাজার একর। এই ছিটমহলগুলোতে প্রায় ৫১ হাজার লোক বাস করে, যারা দুই দেশ থেকে কোন নাগরিক সুবিধা পান না। ছিটমহলগুলো হস্তান্তরের সময় তাদের ইচ্ছার ভিত্তিতে তাদের নাগরিকত্ব নির্ধারিত হবে। সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ যে বাড়তি ১০ হাজার একর জমি পাবে তার জন্য ঢাকাকে কোন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তি ভারতের রাজ্যসভায় পাসের খবরে বিভিন্ন ছিটমহলে আনন্দের বন্যা বইছে বলে জানা গেছে। সীমান্ত চুক্তি ভারতের মন্ত্রিসভায় পাসের পর থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতের ছিটমহলগুলোতে চলছে উৎসব। ছিটমহলবাসী এখন স্বপ্ন দেখছে, এবারে তারা মুক্ত হয়ে যাবে। বৃহস্পতিবারও দুই দেশের বিভিন্ন ছিটমহলে আনন্দ মিছিল বের হয়। সীমান্ত চুক্তির প্রতিবাদে অসমে বন্ধ পালিত ॥ সীমান্ত চুক্তির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার অসমে ১০ ঘণ্টার বন্ধ পালিত হয়েছে। অসম গণপরিষদের ডাকে ভোর ৬টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে এই বন্ধ। ভারতের এনডিটিভির খবরে বলা হয়, অসম গণপরিষদ এ চুক্তি করার জন্য ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, এই চুক্তির মাধ্যমে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। অসম গণপরিষদের সাধারণ সম্পাদক কমলাকান্ত কালিতা এক বিবৃতিতে বলেছেন, এ চুক্তির মাধ্যমে অসম রাজ্যের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে বিজেপি। অন্যদিকে চুক্তি থেকে অসমকে বাদ রাখার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। এ কারণে রাজ্য বিজেপি তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করে গগৈর কুশপুতুল দাহ করেছে। শেষ মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকার অসমের বিজেপি নেতৃবৃন্দ ও মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর সঙ্গে আলোচনা করে চুক্তিতে অসমকে অন্তর্ভুক্ত করে। তারপরই তা রাজ্যসভায় তোলার পরে বৃহস্পতিবার লোকসভায় পাস হয়।
×