ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঝড়ে বিধ্বস্ত স্কুলে পাঠদান ব্যাহত

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৮ মে ২০১৫

ঝড়ে বিধ্বস্ত স্কুলে পাঠদান ব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ একমাস আগে রাজশাহীর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর তা-বে ল-ভ- হয়ে যাওয়া বিভিন্ন উপজেলায় এখনও ক্ষতচিহ্ন রয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর নিজেদের উদ্যোগে অনেকে সারলেও অস্যংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনও উলটপালট হয়ে আছে। সরকারী বরাদ্দ না থাকায় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংস্কার করা যায়নি। ফলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমে গেছে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার। দুই দফা ঝড়ে রাজশাহী জেলায় অন্তত ১৯০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়। এরই মধ্যে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিকল্প ব্যবস্থায় পাঠদানের ব্যবস্থা করেছে। আর বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলছে খোলা আকাশের নিচে অথবা গাছের নিচে। বিভিন্ন উপজেলায় এখনও শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উল্টে আছে বলে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথম দফায় ৪ এপ্রিল কালবৈশাখীর তা-বে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার ১৭৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পরে আবারও ঝড়ের তা-বে আরও ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এগুলোর মধ্যে কোনটির টিনের চালা নেই, কোনটির দেয়াল ভেঙে পড়ে আছে। রাজশাহী জেলার ৯টি উপজেলায় এখনও শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উল্টেপাল্টে রয়েছে। ঝড়ের পর স্থানীয় প্রশাসন তাৎক্ষণিক ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা প্রকাশ করলেও মাস পেরিয়ে গেলেও সেগুলোতে পৌঁছেনি সরকারী কোন সহায়তা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার তানোর, গোদাগাড়ী, পুঠিয়া, দুর্গাপুর, বাগমারা, মোহনপুর, চারঘাট, বাঘা ও পবা উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিকল্প ব্যবস্থায় পাঠদান চললেও কমেছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। জেলার দুর্গাপুর উপজেলার নান্দিগ্রাম শেখপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪টি কক্ষসহ পুরো বিদ্যালয়ের টিনের চালা উড়ে যায়। এরপর থেকে ওই বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছিল পাশের চায়ের স্টল ও আমবাগানে। গোদাগাড়ী উপজেলার মোট ৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনও পর্যন্ত কোন ধরনের অনুদান পৌঁছেনি। তাই সংঙ্কারও করা হয়নি। এসব স্কুলের পাঠদান, পরীক্ষাÑ সবই চলছে চরম ঝুঁকি নিয়ে। কোন কোনটিতে আবার গ্রীষ্মের কাঠফাঁটা রোদের মধ্যেও ক্লাস বসছে খোলা আকাশের নিচে অথবা গাছতলায়। জেলার অন্য উপজেলাগুলোর একই অবস্থা। তানোর উপজেলার পাঁচন্দর মহিলা দাখিল মাদ্রসা, ডাঙ্গাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এখনও উল্টে আছে। এছাড়া চারঘাট, বাঘা, মোহনপুর ও পবার অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একই অবস্থা। এ সব স্কুলের শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটি চেয়ে আছে সরকারী অর্থ সহায়তার জন্য। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ সংস্কার করা হবে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের যাতে কষ্ট না হয় সেজন্য প্রয়োজনে শিফট ভাগ করে পাঠদান চালানোর জন্য বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে গাছের নিচে কিংবা খোলা আকাশের নিচে ক্লাস না নেয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকদের বলা হয়েছে।
×