ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বগুড়ায় আন্তর্জাতিক ওয়ার্কশপে আসাদুজ্জামান নূর

সার্কের কালচারাল সিটি হচ্ছে বগুড়ার মহাস্থানগড়

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ৭ মে ২০১৫

 সার্কের কালচারাল সিটি হচ্ছে বগুড়ার মহাস্থানগড়

সমুদ্র হক ॥ সাউথ এশিয়ান এ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কোঅপারেশনের (সার্ক) কালচারাল সিটি হতে যাচ্ছে বগুড়ার মহাস্থানগড়। আগামী বছর অর্থাৎ ২ হাজার ১৬ সালের পুরো সময়টা ধরে (এক বছর) বগুড়া হয়ে থাকবে সার্কের কালচারাল সিটি। ভর বছর নানা ধরনের আয়োজনে সমৃদ্ধ থাকবে বগুড়া। বাংলাদেশের কোন শহর এক বছর ধরে সার্কের কালচারাল সিটি হয়ে থাকা এই প্রথম। বুধবার সকালে বগুড়ায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর, বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কো ও কোরিয়ান ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কোর যৌথ আয়োজনে বিশ্ব ঐতিহ্য বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক ওয়ার্কশপের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এই বিষয়টি জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের এই প্রস্তাব দ্রুতই সার্ক গ্রহণ করে ঘোষণা দেবে। বগুড়ার মহাস্থানগড় ও নওগাঁর জগদ্দলবিহারকে ওয়ার্ল্ড কালচারাল হেরিটেজের তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়ায় বগুড়ায় আন্তর্জাতিক ওয়ার্কশপ করা হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বাংলার ঐতিহ্য মাটির গভীর থেকে ওপরে উঠে আসা। মাটির নিচে ও ওপরে যা লুকিয়ে আছে তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব নিয়েছে বর্তমান সরকার। নূর বলেন, সংস্কৃতি আমাদের নকশিকাঁথা সংস্কৃতি আমাদের যাত্রা... এভাবে সংস্কৃতির বহু ধারা নিয়ে আমাদের জীবন। সংস্কৃতি যখন জীবনের সঙ্গে মিশবে তখন নদীর স্রোতের মতো চলবে। সংস্কৃতিকে জীবনের সঙ্গে মিশে দিতে হবে আগে। যেখানে ধর্মের নামে রাজনীতির নামে থাকবে না কোন ধ্বংসের প্রক্রিয়া। সংস্কৃতি মন্ত্রী আজ (বৃহস্পতিবার) রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় দেশের ১৯তম প্রতœতত্ত্ব জাদুঘরের উদ্বোধন করবেন। এদিকে ইউনেস্কোর আয়োজনে বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে (আরডিএ) গেল চার দিনের বিশ্ব সংস্কৃতির ঐতিহ্য ওয়ার্কশপে কোরিয়া চীনসহ কয়েকটি দেশ ও বাংলাদেশের ১৫ জন প্রতœ বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করেন। তারা দেশের কয়েকটি প্রতœ স্থানকে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড কালচারাল হেরিটেজে অন্তর্ভুক্তির খসরা তৈরির কর্মপরিকল্পনা করেন। অংশগ্রহণকারী জাহাঙ্গিরনগর বিশ্বদ্যিালয়ের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের প্রধান সুফি মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বিশ্ব সংস্কৃতির ঐতিহ্যে তালিকাভুক্তির বিষয়টির পেপার তৈরি করতে অনেকটা সময় নেয়। ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশের সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড নেচারাল হেরিটেজ এবং বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ ও নওগাঁর পাহাড়পুর ওয়ার্ল্ড কালচারাল হেরিটেজে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এই বিষয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কোর সচিব মোঃ মঞ্জুর হোসেন বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান পেতে আরও অনেকটা পথ যেতে হবে। এর আগের কাজ কতটা এগিয়েছে তা বিশ্লেষণ করে আরও দ্রুত কতটা এগিয়ে যেতে হবে তার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গত বছর এই ধরনের একটি ওয়ার্কশপ ঢাকায় হয়েছে। তারই ফলোআপ বগুড়ার ওয়ার্কশপ। বাংলাদেশে ইউনেস্কোর কর্মকর্তা বিট্রিসি কালদুল, কোরিয়ার প্রতœ বিশারদ প্রফেসর হে উন রে, জে হিউয়ন চই, চীনের প্রতœ বিশেষজ্ঞ ড. গুয়াও ঝান এই কর্মশালায় তাদের মতামত দেন। ইউনেস্কোর কর্মকর্তাগণ বগুড়ার মহাস্থানগড়, নওগাঁর জগদ্দল বিহার, হলুদ বিহার, কুমিল্লার ময়নামতি, ঢাকার লালবাগের কেল্লা পরিদর্শন করেন। বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান পেতে উত্তরাঞ্চলে বগুড়ার মহাস্থানগড় যে অতি প্রাচীন পুন্ড্র নগরী তা বিশ্লেষণ করা হয়। নওগাঁর জগদ্দল বিহারকে আমলে নেয়া হয়েছে। জগদ্দল বিহারের অনেক ইতিহাস হালে উদঘাটিত হচ্ছে। প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা জানান, বিশ্ব ঐতিহ্যে তালিকাভুক্ত হতে দেশের চারটি সাইট দেখা হয়েছে। এর ওপর কাগজপত্র তৈরির কাজ চলছে। যা উপস্থাপন করা হবে ইউনেস্কোতে। আগামী প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্যকে ধরে রাখার কাজ শুরু হয়েছে ১৯৭২ সালে। বর্তমানে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ৩৩টি দেশের ১শ’ ৫৪টি আইটেম ওয়ার্ল্ড কারচারাল হেরিটেজে স্থান পেয়েছে।
×