ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আমানত ও ঋণের সুদহার ৫ শতাংশের নিচে

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৭ মে ২০১৫

আমানত ও ঋণের সুদহার ৫ শতাংশের নিচে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি অর্থবছরের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতের আমানত ও ঋণের সুদের গড় ব্যবধান (স্প্রেড) ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এ মাসে ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশীয় পয়েন্ট। যা আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৫ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশীয় পয়েন্ট। বাংলাদেশ ব্যাংকের স্প্রেড সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মার্চ শেষে ঋণ ও আমানত উভয় ক্ষেত্রেই কিছুটা সুদহার কমিয়েছে ব্যাংকগুলো। ফলে দেশের ৫৬টি ব্যাংকের ঋণের গড় সুদহার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশীয় পয়েন্টে, যা আগের মাসে ছিল ১২ দশমিক ২৩ শতাংশ। আমানতের গড় সুদহারও কিছুটা কমে ৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আগের মাসে ছিল ৭ দশমিক ১৯ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, বিদেশী ব্যাংকগুলোর স্প্রেড হার সবচেয়ে বেশি থাকলেও বেসরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এটি অনেকটাই কমেছে। যার প্রভাবেই মূলত গড় স্প্রেড ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, বিদেশী ব্যাংকগুলোর স্প্রেড সবচেয়ে বেশি। এদের গড় স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশীয় পয়েন্ট। ব্যাংকগুলো মাত্র ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ হারে আমানত সংগ্রহ করে ১১ দশমিক ২৪ শতাংশ সুদের ঋণ বিতরণ করেছে। এদের মধ্যে ৬টি ব্যাংকেরই স্প্রেড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অমান্য করেছে। এখানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের স্প্রেড ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ, সিটি ব্যাংক এন এ ৭ দশমিক ৯২ শতাংশ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন ৬ দশমিক ৬৭, উরি ব্যাংক ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং দ্য হংকং এ্যান্ড সাংহাই ব্যাংক কর্পোরেশন লিমিটেডের (এইচএসবিসি) স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৮৩ শতাংশীয় পয়েন্টে। বেসরকারী ব্যাংকগুলোর স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশীয় পয়েন্টে, যা আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। ব্যাংকগুলো ৭ দশমিক ৩৩ শতাংশে আমানত সংগ্রহ করে ১২ দশমিক ৫৮ শতাংশে ঋণ বিতরণ করেছে। আর ১৫টি ব্যাংক তাদের স্প্রেড সীমা অতিক্রম করেছে। যার মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংকের স্প্রেড ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ, যা সবচেয়ে বেশি। এরপরই রয়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংক। যার স্প্রেড ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ হারে আমানত সংগ্রহ করে ১১ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে ঋণ বিতরণ করেছে। ফলে স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ১৫ শতাংশীয় পয়েন্টে। অন্যদিকে, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ৮ দশমিক ১৭ শতাংশে আমানত সংগ্রহ করে বিতরণ করেছে ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ হারে। ফলে তাদের স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ২৬ শতাংশীয় পয়েন্টে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ঋণের সুদহার যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ এবং স্প্রেড ৪ শতাংশের কাছাকাছি নামিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। বর্তমানে বিচার বিবেচনাপূর্বক প্রকৃত ঋণগ্রহীতা নির্বাচন করে ঋণ সম্প্রসারণের মতো পর্যাপ্ত তারল্যও ব্যাংকগুলোর হাতে রয়েছে।
×