ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দুই দুর্নীতি মামলায় আজ আদালতে যাচ্ছেন না খালেদা

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৫ মে ২০১৫

দুই দুর্নীতি মামলায় আজ আদালতে যাচ্ছেন না খালেদা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা দুই দুর্নীতি মামলার শুনানিতে আজ আদালতে যাচ্ছেন না বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। আজ মঙ্গলবার এ দুই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। সোমবার বিকেলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জানান, নিরাপত্তা-জনিত কারণ এবং আইনজীবীরা বার কাউন্সিলের নির্বাচনে ব্যস্ত থাকায় তিনি (খালেদা) হাজির হচ্ছেন না। এর আগে গত ৫ এপ্রিল গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পুরান ঢাকার কারা অধিদফতরের মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন খালেদা জিয়া। ওই দিন এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৫ মে মঙ্গলবার দিন ঠিক করেন ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার। এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) নিরাপত্তাজনিত কারণে আদালতে হাজির হবেন না। তিনি আদালতে হাজিরা দেয়ার সময় চারবার হামলার শিকার হয়েছেন। তা ছাড়া আমরা আইনজীবীরা বার কাউন্সিল নির্বাচন নিয়ে ঢাকার বাইরে ব্যস্ত রয়েছি। এসব কারণে তিনি মঙ্গলবার আদালতে হাজির হবেন না। এর আগে টানা কয়েকটি ধার্য তারিখে হাজির না হওয়ায় এ বিচারকই গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। পরে গত ৪ মার্চ পরোয়ানা প্রত্যাহারে আবেদন করলেও আদালত তাও খারিজ করে দেন। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্যদিয়ে এ দুই মামলার আসামিদের বিচার শুরু হয়। কিন্তু দফায় দফায় আসামিপক্ষের সময়ের আবেদেন গত এক বছরে কেবল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার বাদী হারুন অর রশীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। মামলার আগামী ধার্য দিনে আসামিপক্ষ বাদীকে জেরা করবেন বলে দুদকের আইনজীবী জানান। সোয়া পাঁচ কোটি টাকা দুর্নীতির এ দুই মামলার বিচার কাজ চলছে বকশীবাজারে কারা অধিদফতর মাঠের বিশেষ এজলাসে। চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ॥ ২০১১ সালের ৮ অগাস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন এর রশিদ। তেজগাঁও থানার এ মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চার জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ মামলার অপর আসামিরা হলেনÑ খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিয়ের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু হতেই পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও রয়েছে। খালেদাসহ বাকি দুই আসামি জামিনে রয়েছেন। অরফানেজ ট্রাস্ট ॥ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অন্য মামলাটি দায়ের করে। এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশী ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়। দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ ২০১০ সালের ৫ অগাস্ট বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। তারেক রহমান উচ্চ আদালতের জামিনে গত ছয় বছর ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন। রবিবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদও জামিন পান। বাকি দুজন পলাতক।
×