ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পরাজয় নিশ্চিত জেনেই খালেদা আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন ॥ আমু

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৮ এপ্রিল ২০১৫

পরাজয় নিশ্চিত জেনেই খালেদা আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন ॥ আমু

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ তিন সিটি নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনেই বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলটির অভিযোগ, তিন সিটি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীদের পরাজয় নিশ্চিত। তাদের জেতার কোন উপায় নেই। আন্দোলনের নামে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করায় জনগণের পাশাপাশি বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকরাও এখন আর খালেদা জিয়ার পাশে নেই। এটি বুঝতে পেরে নিজের পদ টিকিয়ে রাখার জন্যই খালেদা জিয়া মিথ্যাচারের আশ্রয় নিচ্ছেন। আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন। তবে এতে কোন কাজ হবে না। সোমবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। মূলত গত রবিবার সংবাদ সম্মেলনে দেয়া খালেদা জিয়ার বক্তব্যের জবাব দিতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। আমির হোসেন আমু বলেন, খালেদা জিয়ার ভ-ামির রাজনীতির মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচিত হয়ে গেছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানো ও আন্দোলন দুটোতেই উনি ব্যর্থ হয়েছেন। জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ভুল সিদ্ধান্ত আর হরতাল-অবরোধের নামে নির্বিচারে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার দায়ে আজ খালেদা জিয়ার পাশে জনগণ কেন, তাঁর দলের নেতাকর্মীরাও নেই। তাই ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম- এই তিন সিটি নির্বাচনে পরাজয় হবে তা বুঝতে পেরেই বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া মিথ্যাচার করে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন। তবে এতে কোন কাজ হবে না। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, আক্তারুজ্জামান, আবদুর রহমান, আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, হাবিবুর রহমান সিরাজ, আবদুল মান্নান খান, ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ডাঃ বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, অসীম কুমার উকিল, এনামুল হক শামীম, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আন্দোলনের নামে ৯২ দিন ধরে নাশকতা চালানোর পর আদালতে আত্মসমর্পণ করে খালেদা জিয়ার ঘরে ফিরে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে আমির হোসেন আমু বলেন, খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তিনি ঘরে ফিরে যাবেন না। কিন্তু ৯২ দিন কোন অর্জন ছাড়াই ঘরে ফিরে যাওয়ায় বিএনপির অনেক নেতাকর্মী অভিযোগ তুলেছেন যে, খালেদা জিয়া আঁতাত করেছেন। নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়ার ভয়ে উনি রবিবার সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যাচার করে আবারও আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। তবে এর মাধ্যমে খালেদা জিয়া নিজেই তাঁর ভ-ামির মুখোশ উন্মোচন করেছেন। ‘পুড়িয়ে মানুষ হত্যার পেছনে আওয়ামী লীগের হাত রয়েছে’ মর্মে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই নয়। খালেদা জিয়ার নির্দেশে বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা যে নাশকতা চালিয়ে, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে তা আজ জাতির সামনে স্পষ্ট। তিনি বলেন, দুর্নীতির যে মামলায় খালেদা জিয়ার বিচার চলছে তাতে তাঁর যে সাজা হবে, এটা তিনি নিশ্চিত হয়ে গেছেন। মামলা থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চরম মিথ্যাচার করছেন। আমির হোসেন আমু বলেন, তিন সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোট কারচুপির কোন রেকর্ড আওয়ামী লীগের নেই। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এটি প্রথম চালু করেছিল। নির্বাচনে বিজয়ী হলে সুষ্ঠু নির্বাচন আর পরাজিত হলে কারচুপির অভিযোগ তোলা বিএনপির পুরনো অভ্যাস। পেট্রোলবোমার আন্দোলনে বিফল হয়ে এখন উনি নির্বাচনে এসেছেন। খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, নিজেকে সংশোধন করুন। মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে রাজনীতি হয় না। মিথ্যাচার আর ভ-ামির কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরা যে আপনাকে পরিত্যাগ করেছে সেটি কি বুঝতে পারেন না? মিথ্যাচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারবেন না। কারণ মানুষ এখন অনেক সজাগ ও সচেতন। তিনি বলেন, সিটি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছিল না। চট্টগ্রামের আমির খসরু মাহমুদ, আবদুল্লাহ আল নোমানকে প্রস্তাব দেয়া হলেও তাঁরা প্রার্থী হতে রাজি হননি। আবদুল আউয়াল মিন্টু ছিল তাঁর দলের প্রার্থী। কিন্তু তিনি কোন কারণে প্রার্থী হতে পারেননি। অবশেষে তাঁর ছেলেকে বিএনপি প্রার্থী দিয়েছে, যাকে কেউ চেনে না। এটা বিএনপির ব্যর্থতা। তাবিথ আউয়াল এই ভোটের মধ্যদিয়ে রাজনীতিতে পা রেখেছেন। নির্বাচনে প্রার্থী দিতেও ব্যর্থতা আর দেউলিয়াত্বর পর নিজের পদ টিকিয়ে রাখার জন্য খালেদা জিয়া মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছেন।
×