ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পুঁজিবাজারে ছয় মাসে সূচকের সর্বোচ্চ পতন

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২৭ এপ্রিল ২০১৫

পুঁজিবাজারে ছয় মাসে  সূচকের সর্বোচ্চ পতন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সপ্তাহের প্রথমদিনে বিগত ছয় মাসের মধ্যে পুঁজিবাজারে সূচকের সর্বোচ্চ পতন হয়েছে। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক কমেছে ৯৭.৭৩ পয়েন্ট। দিনটিতে সেখানে মোট ৮১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর হারিয়েছে। একইভাবে সেখানে সার্বিক লেনদেনও কমেছে। এর আগে ২০১৪ সালে ১৯ অক্টোবর ডিএসইতে সূচক কমে যায় ১০৯ পয়েন্ট। সেই হিসেবে রবিবারে গত ছয় মাসের সর্বোচ্চ ৯৭.৭৩ পয়েন্ট কমেছে। দিনটিতে ডিএসইতে সব ধরনের সূচকই কমেছে প্রায় ২ শতাংশের ওপরে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩০৭ কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ২৪৮টির বা ৮১ শতাংশ। দিনটিতে সেখানে মোট ৩৪২ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। গত বৃহস্পতিবারে সেখানে ৩৭৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না এমন গুজবে রাজনৈতিক অস্থিরতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বাজারে বড় ধরনের পতন ঘটেছে। যদিও দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া শেষ পর্যন্ত নির্বাচন থেকে সরে আসার ঘোষণা দেননি। কিন্তু দিনশেষে কোনভাবেই বাজারে ঠেকানো যায়নি। এ বিষয়ে ব্রোকারেজ এ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক আহসানুল ইসলাম টিটু সাংবাদিকদের বলেন, সিটি নির্বাচনের প্রথম দিকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলেও ক্রমান্বয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে। এমন অবস্থায় বাজারে গুজব রটেছে যে বিএনপি সিটি নির্বাচন বর্জন করতে যাচ্ছে। যার নেতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারের ওপর পড়েছে। এরই জের ধরে বাজারের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি। এখন সিটি নির্বাচনের ফলাফলের ওপরই নির্ভর করছে বাজার ভাল হবে কি মন্দ হবে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পাঁচ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচকটি ২৭৯.১৭ পয়েন্ট হারিয়েছে। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সাধারণ সূচক ৫৮৬.৬৮ পয়েন্ট হারিয়েছে। এর পাশাপাশি উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে পাল্লা দিয়ে লেনদেনও কমেছে। সকালে সূচকের নেতিবাচক প্রবণতা দিয়ে শুরুর পর ডিএসইর সার্বিক সূচকটি মোট ৯৭.৭২ পয়েন্ট কমে গিয়ে ৪ হাজার ৯৪.৪৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সারাদিনে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৪১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন ৩৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা কমেছে। এদিন ডিএসইতে মোট ৩০৭টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭টির, কমেছে ২৪৮টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টি কোম্পানির শেয়ার দর। রবিবারে ডিএসইতে মোট ৮টি খাতের শতভাগ দরপতন ঘটেছে। এ খাতগুলো হলো: আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিবিধ, পাট, কাগজ ও মুদ্রণ, সেবা ও আবাসন, ভ্রমণ ও অবকাশ এবং টেলিকমিউনিকেশন। ডিএসইতে লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, এসিআই, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, শাশা ডেনিমস, এসিআই ফর্মুলেশন, সাইফ পাওয়ার টেক, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, ইফাদ অটোস, শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি ও গ্রামীণ ফোন। ডিএসইর দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : এসিআই ফর্মুলেশন, অ্যাপেক্স ফুডস, এবিবি ১ম মিউচুয়াল ফান্ড, ডিবিএইচ ১ম মিউচুয়াল ফান্ড, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স, জেমিনি সী ফুড ও রেকিট বেনকিজার। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : পপুলার লাইফ, শাশা ডেনিমস, এবি ব্যাংক, মডার্ন ডাইং, রূপালী ব্যাংক, বিজিআইসি, এক্সিম ব্যাংক ১ম মিউচুয়াল ফান্ড, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড ও ফনিক্স ফাইন্যান্স। এদিকে ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও দিনভর সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। বেশিরভাগ কোম্পানির দর কমার কারণে দিনটিতে সিএসই সাধারণ সূচক ১৯৩.৩৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৭ হাজার ৬২১.৬৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। পাশাপাশি লেনদেন হয়েছে ৩২ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সেখানে আগের দিনের তুলনায় ৯ কোটি ১০ লাখ টাকা লেনদেন কমেছে। এদিন সিএসই-তে মোট ২২৩টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৭টির দর বেড়েছে, ১৮০টির দর কমেছে এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬ কোম্পানির। সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস লিমিটেড, ইফাদ অটোস, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, মবিল যমুনা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড, এসিআই ফর্মুলেশন, এসিআই, বেক্সিমকো ও ইউনাইটেড এয়ার।
×