ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংবাদ সম্মেলনে তিনি ভোটারদের টাকা নেয়ার অনুমতিও দেন

খালেদা বললেন এ ভোট বিএনপি টেস্ট কেস হিসেবে নিয়েছে

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২৭ এপ্রিল ২০১৫

খালেদা বললেন এ ভোট বিএনপি টেস্ট কেস হিসেবে নিয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২৮ এপ্রিল তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ভোটারদের ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে সরকারের কর্মকা-ের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিশোধ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, আপনাদের ভোট অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিরাট শক্তি। সঠিকভাবে সেই শক্তি প্রয়োগ করুন। নীরব বিপ্লব ঘটিয়ে প্রতিশোধ নিন। ভয় না পেয়ে সকাল সকাল ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার পর ফলাফল ঘোষণা না করা পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রে পাহারায় থাকুন। ভোটের ফল বুঝে নিন। রবিবার বেলা ২টায় গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে বিএনপি টেস্ট কেস হিসেবে নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটা সরকার, নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের জন্য টেস্ট কেস। এক প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, পেট্রোলবোমা আমরা মারিনি, আমাদের কর্মসূচী ভু-ুল করতে আওয়ামী লীগই পেট্রোলবোমা মেরে বিরোধী দলকে দোষারোপ করেছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা গরিব মানুষের ভোট কিনতে অবাধে টাকা ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করে ভোটারদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ওদের কাছ থেকে টাকা নেবেন কিন্তু ভোট দেবেন না। কারণ ভোট বিক্রি ও ইমান বিক্রি একই কথা। তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচারে নেমে জনগণের আবেগ ও উচ্ছ্বাস দেখে অভিভূত হয়েছি। কিন্তু আমাদের গণজোয়ার দেখে আওয়ামী লীগ দিশেহারা হয়ে গেছে। তাদের সব হিসাব পাল্টে গেছে। এটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এতে রাষ্ট্রায় ক্ষমতার পরিবর্তন হবে না। বিএনপির পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীকে ভয় না পাওয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন ভয় পাবেন না, আপনাকে নিরাপদে নামতে সাহায্য করব। সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে খালেদা জিয়া বলেন, কিছুদিন আগে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে হারিয়েছি। একমাত্র জীবিত ছেলেটি অমানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দূর দেশে চিকিৎসাধীন আছে। এখন আপনারাই আমার আত্মীয়। আমার সকল কর্মকা- আপনাদের ঘিরে। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তাই আমার ওপর সকল অত্যাচার-নির্যাতনের ভার আপনাদের কাছে দিলাম। সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, আসম হান্নান শাহ, নজরুল ইসলাম খান, আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ, সদস্য সচিব শওকত মাহমুদ, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ডাঃ রেদওয়ানউল্লাহ সাহেদী, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী, খেলাফত মজলিসের চেয়ারম্যান মাওলানা মোঃ ইসহাক, এলডিপি মহাসচিব রেদওয়ান আহমেদ প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে শেষে তারা আবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, নির্বাচনী প্রচারকালে হামলার ঘটনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অন্য মন্ত্রীদের উস্কানির ফল। আমাকে হত্যার উদ্দেশে গুলি করা হয়। তবে আল্লার রহমতে আমি বেঁচে গেছি। তিনি বলেন, জনগণ যাতে ভোট কেন্দ্রে যেতে না পারে সে জন্য আওয়ামী লীগ ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে। নজিরবিহীন সন্ত্রাস চালাচ্ছে। পোলিং এজেন্টদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। তিন সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যই আমরা নির্বাচনের দিন ও তার আগে-পরে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন দাবি করেছিলাম। আবারও আমরা এ দাবি করছি। কারণ, সেনাবাহিনীর প্রতি দেশের মানুষের আস্থা আছে। এক প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, পর্দার আড়ালে কোন সমঝোতা হয়নি। দেশী-বিদেশী কারো সঙ্গে সমঝোতা নয়, সকল দল মিলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যা কিছু হবে প্রকাশ্যেই হবে। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী শুরু করি কিন্তু সেই কর্মসূচী চলাকালে যানবাহনে রহস্যজনক পেট্রোলবোমা হামলা হয়েছে। এসব হামলায় অনেক নিরাপরাধ মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে। কিন্তু সশস্ত্র পাহারা চলাকালে কী ভাবে এসব হামলা হয়? হত্যা, নাশকতা, সন্ত্রাস ও লাশের রাজনীতি আমরা করি না। সন্ত্রাস নির্ভর নষ্ট রাজনীতিতে চ্যাম্পিয়ন আওয়ামী লীগ। মানুষ হত্যা করে তার দায় বার বার বিএনপির ওপর চাপানো হয়েছে। কিন্তু তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ পেট্রোলবোমা মারলেও মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে এর দোষ আমাদের ওপর চাপানো হয়েছে। পেট্রোলবোমা মারার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগকে ভোট না দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বলেছি জাতীয় নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকার লাগবে। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন এ সরকারের অধীনেই হতে পারে। তাই আমরা ৩ সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আগেও সব সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছি। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালিয়ে আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, আমার বহরে ছিল মাত্র কয়েকটি গাড়ি। বেশিরভাগ ছিল মিডিয়ার গাড়ি। তাই বহরে বেশি গাড়ি মনে হয়েছে। এই নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট তাই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেছে। অথচ আমার ওপর হামলার প্রতিবাদ করেনি নির্বাচন কমিশন। সরকারী দলের প্রার্থী ও মন্ত্রীরা নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে রাস্তা ব্লক করে ফেলেছে তারপরও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়নি। আর সবার আগে নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খালেদা জিয়া বলেন, আমি সিটি নির্বাচনের ভোটার নই তাই ভোট দিতে যাব না। আমি ক্যান্টনমেন্টের ভোটার। কিন্তু ক্যান্টনমেন্ট সিটি কর্পোরেশনে পড়েনি। সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেন, সিটি নির্বাচনে জনসংযোগে নেমে জনগণের যে আবেগ ও উচ্ছ্বাস দেখেছি, তাতে আমি অভিভূত। মানুষ উদ্বেলিত। তারা পরিবর্তন কামনায় অধীর। আমি যে দিকেই গিয়েছি, বাঁধভাঙ্গা স্রোতের মতো মানুষ নেমে এসেছে উচ্ছ্বসিত হয়ে, ভয়ভীতি উপেক্ষা করে। আমার হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নেই। কামান-বন্দুক নেই। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিপি, আনসার নেই। কোন বাহিনী নেই। সশস্ত্র সন্ত্রাসী নেই। আমার আছে শুধু আল্লাহ্র ওপর ভরসা আর দেশবাসীর সমর্থন ও দোয়া। এর উপর নির্ভর করেই আমি রাজপথে নেমেছি। জনগণের কাছে যাচ্ছি। এতে এত ভয় পাবার কী আছে? কিন্তু তারা ভয় পেয়েছে। এতদিন তারা প্রচার করত যে, আমি নাকি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছি। বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের কোন জনসমর্থন নেই। কিন্তু আমি জনসংযোগে নামতেই যে দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে, তাতে তাদের এত দিনকার সব প্রচার মিথ্যে হয়ে গেছে। তাই প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে আমার বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখেছেন। তাদের নেতাকর্মী, সমর্থক ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আমার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছেন। তারা প্রকাশ্যে হাজার হাজার মানুষের সামনে এবং সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে উত্তরা, কারওয়ান বাজার, ফকিরেরপুলের কাছে ও বাংলামোটরে আমার গাড়িবহরে পরপর চারদিন হামলা করেছে। বাংলামোটরে আমাকে বহনকারী গাড়ির ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়। গাড়িটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বহরের অন্যান্য যানবাহনও ভাংচুর করা হয়। হামলায় আমার অন্যতম উপদেষ্টা, প্রাক্তন সচিব ও পুলিশের সাবেক আইজি আব্দুল কাইয়ুম আহত হন। মারাত্মক জখম করা হয় আমার দুজন নিরাপত্তা রক্ষীসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ও নেতাকর্মীকে। হামলায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেয় এবং হামলাকারীদের পুলিশ পুরোপুরি সহযোগিতা করে। সবচেয়ে মারাত্মক হামলার ঘটনা ঘটেছে কারওয়ান বাজারে। সেখানে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে হামলা চালায়। বহরের অনেক গাড়ি ভেঙ্গে ফেলে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানসহ কয়েকজন নিরাপত্তা রক্ষী ও নেতাকর্মী আহত হন। পুলিশ ছিল নীরব দর্শক। সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আমি তখন সবেমাত্র গাড়িতে উঠে বসেছি। আমি যে পাশে বসা ছিলাম, সেই পাশেই গাড়ির জানালার কাচে গুলি লাগে। এতে গ্লাস ভেদ না করলেও তা ফেটে যায়। আল্লাহর রহ্মতে অল্পের জন্য আমার জীবন রক্ষা পায়। কতটা মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি করলে বুলেটপ্রুফ গাড়ির কাচ ফেটে যায়, তা সবাই বোঝে। হামলাকারীদের কাউকে কাউকে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পুলিশের বিতর্কিত কর্মকর্তাদের পাশে ছবিতে দেখা গেছে। তাই এটা যে আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত সুপরিকল্পিত হামলা ছিল, তাতে কোন সন্দেহ নেই। খালেদা জিয়া বলেন, আমাকে হত্যার উদ্দেশে হামলা চালানোতে আমি ভয় পাই না। জীবন-মৃত্যুর মালিক আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন। তিনি রক্ষা করলে আমাকে কেউ হত্যা করতে পারবে না। আমি এ কথাও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আল্লাহ্ একদিন এই অন্যায়-অবিচার, এই সন্ত্রাস, এই মিথ্যাচার এবং এই হত্যা চেষ্টার ন্যায্য বিচার করবেন। আমি আমার প্রিয় দেশবাসী, বিশেষ করে ঢাকাবাসীকে বলব, আপনারা দেখছেন, ক্ষমতার দম্ভে আমার সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করা হচ্ছে! আমার স্বামী প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশকে ভালবেসে এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। আমার ওপর ধারাবাহিক হামলা ও নির্বাচনী প্রচার কাজে বাধা দেয়ার বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট ও ঠুঁটো জগন্নাথ নির্বাচন কমিশন কোন পদক্ষেপ নেয়া দূরে থাকুক টুঁ-শব্দটি পর্যন্ত করেনি। খালেদা জিয়া বলেন, গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অধিকার হরণের প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন চলাকালে আকস্মিকভাবে ঢাকা ও চট্টগ্রামে তিনটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের ঘোষণা দেয়া হয়। নির্বাচনটি নির্দলীয় ভিত্তিতে হওয়ার কথা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ৩টি সিটিতে তার মনোনীত মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করেন। তারা হয়ত ভেবেছিলেন, তাদের সর্বব্যাপী আক্রমণে পর্যুদস্ত বিএনপি সিটি নির্বাচন থেকে দূরে থাকবে। কিন্তু আমরা সিনিয়র সিটিজেন ও পেশাজীবীদের মনোনীত প্রার্থীদের ৩টি সিটি কর্পোরেশনে সমর্থন দিয়ে এই নির্বাচনে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেই সরকারের অধীনে, যারা ভোটারবিহীন নির্বাচনী প্রহসনে রাষ্ট্রক্ষমতা কব্জা করেছে। এই নির্বাচন হচ্ছে, চরম পক্ষপাতদুষ্ট ঠুঁটো জগন্নাথ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায়। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে রয়েছে চরমভাবে দলীয়করণ করা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কাজেই এ নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে সে সন্দেহ দেশবাসীর মতো আমাদেরও ছিল এবং আছে। তা সত্ত্বেও আমরা কয়েকটি কারণে এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিই। সভা-সমাবেশসহ সকল গণতান্ত্রিক অধিকার ও জনগণের কাছে যাবার সুযোগ আমাদের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে সীমিত আকারে হলেও সে সুযোগ আমরা নিতে চেয়েছি। একটি গণতান্ত্রিক ও নির্বাচনমুখী একটি দল হিসেবে প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক কর্তৃত্বের জায়গায় জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনের এ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করেছি। জনগণের সরাসরি ভোটে সিটি কর্পোরেশনে মেয়র নির্বাচনের ব্যবস্থাও আমরাই করি। যে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি, সেই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকাটাই বিএনপি যুক্তিসঙ্গত মনে করেছে। সর্বোপরি, জনগণের ওপর আমাদের রয়েছে অটুট আস্থা। আমরা মনে করি, দেশের মানুষ সুযোগ পেলেই আমাদের সমর্থন করবে এবং আমাদের সমর্থিত প্রার্থীদের বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে। এমন একটি নির্বাচনেও যদি তারা যথাযথ আচরণ না করে, যদি সকল পক্ষের জন্য সুযোগের সমতা সৃষ্টি না করে, নিরাপদ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারে এবং যদি সন্ত্রাস, ডাকাতি, কারচুপির মাধ্যমে তারা জনগণের রায়কে বদলে ফেলে, তাহলে সকলের কাছে আবারও স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হবে যে, এদের অধীনে সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের চিন্তা সম্পূর্ণ অবাস্তব ও অবান্তর।
×