ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবাসীদের জন্য পেনশন স্ক্রিম চালু হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ২৬ এপ্রিল ২০১৫

প্রবাসীদের জন্য পেনশন স্ক্রিম চালু হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সরকারী চাকরিজীবীদের ন্যায় প্রবাসীদের জন্য পেনশন স্কিম চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান। পেনশন স্কিম চালুর জন্য সরকারকে পৃথক একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়ে গবর্নর বলেন, রেগুলেটরি সংস্থা গড়ে তোলা একটা সময়ের ব্যাপার। এজন্য যতদিন রেগুলেটরি সংস্থা গড়ে তোলা না যাচ্ছে, ততদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালনে আগ্রহী আছে। তিনি বলেন, পেনশন স্কিম চালুর বিষয়ে অর্থমন্ত্রীকে খুব তাড়াতাড়ি চিঠি পাঠানো হবে। শনিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বেসরকারী সংগঠন সেন্টার ফর নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশীজ (এনআরবি) ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সিরিজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গবর্নর এসব কথা বলেন। ‘বিনিয়োগ, রেমিট্যান্স ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্র্যান্ডিং’ এই সেøাগান সামনে রেখে সংগঠনটি এ বছর ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিয়ে সম্মেলন করবে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ও পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বক্তব্য রাখেন। সেন্টার ফর এনআরবির চেয়ারম্যান এমএস সেকিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার, আমেরিকান দূতাবাসের ইকোনমিক কাউন্সিলর ডেনিয়েল কিন, সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান, ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইশতিয়াক আহমদ চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। ড. আতিউর রহমান বলেন, অধিকাংশ প্রবাসী যা আয় করেন, তার পুরোটাই দেশে পাঠিয়ে থাকেন। এতে দেখা যায়, তিনি যখন দেশে ফিরে আসেন, তখন তার হাতে কোন টাকা থাকে না। এজন্য প্রবাসীরা যে রেমিট্যান্স পাঠান এর থেকে কিছু অংশ কেটে রেখে যদি পেনশন স্কিম চালু করা যায়, তাহলে প্রবাসীরাও যেমন লাভবান হবেন, তেমনি তাদের পেনশনের অর্থ দিয়ে বড় তহবিল তৈরি হবে, যা অবকাঠামো খাতের বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। দক্ষ জনশক্তি রফতানির ওপর গুরুত্বারোপ করে আতিউর রহমান বলেন, অভিবাসী গমনেচ্ছু শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি তহবিল গঠন করবে। বিভিন্ন বেসরকারী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটকে এই তহবিল থেকে অর্থায়ন করা হবে বলে তিনি জানান। বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ উল্লেখ করে গবর্নর বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির গড় হার ২ শতাংশ হলেও আমাদের ৪ শতাংশের উপরে। এই রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২৩ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। এর ৬৬ শতাংশ রেমিট্যান্সের অবদান। প্রবাসীদের বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে নগদ সহায়তা প্রদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণে সরাসরি নগদ সহায়তা না দিলেও অন্যভাবে তাদের সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ না করলে সাম্প্রতিক সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকা আরও বেশি শক্তিশালী হতো। এতে প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে তারা ৪-৫ টাকা কম পেত। এছাড়া দ্রুততার সঙ্গে রেমিট্যান্স পৌঁছে দেয়ার জন্য মোবাইল ও এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করা হয়েছে। প্রবাসীরা এর বড় সুবিধা পাচ্ছেন। অনুষ্ঠানে অর্থনীতিতে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ব্যাংকিং খাতের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গবর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ও বীমা খাতে গ্রীন ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান নাসির এ চৌধুরীকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়া গত বছর রেমিট্যান্স আহরণকারী সেরা দশ ব্যাংককে পুরস্কৃত করা হয়।
×