ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুহম্মদ শফিকুর রহমান

তিনি কেন ভোট চাওয়ার অধিকার হারালেন

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২৫ এপ্রিল ২০১৫

তিনি কেন ভোট চাওয়ার অধিকার হারালেন

ভোট মানুষের সাংবিধানিক অধিকার, পবিত্র আমানত। ভোটের মাধ্যমে মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্রের সেবা করার জন্য প্রতিনিধি নির্বাচিত করে, তারা জনপ্রতিনিধি। এ জন্য স্থানীয় হোক বা পার্লামেন্টে হোক, জনগণ তার প্রতিনিধি নির্বাচনে সতর্ক হবে, এটাই স্বাভাবিক। ভোট দিতে ভুল করলে বা ভুল মানুষকে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করলে, তার খেসারতও ভোটার জনগণকেই দিতে হয়। যে মানুষ জনপ্রতিনিধি সেজে বোমা-পেট্রোলবোমা হাতে তুলে দিয়ে সন্ত্রাসী ক্যাডারদের রাজপথে নামিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারে, চলন্ত বাস, ট্রেন, টেম্পো, রিকশা-অটোরিকশায় পেট্রোলবোমা ছুড়ে, যাত্রী-চালক হত্যা করে, মানুষ পঙ্গু করে, হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ পুড়িয়ে ছাই করে, ধ্বংস করে, সে মানুষ জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার বা ভোট পাবার অধিকার হারিয়ে ফেলে। তারপরও কেউ কেউ ভোট চাইতে নামে, খালেদাও ভোট চাইতে নেমেছেন এবং প্রথম দিনেই মানুষের রোষানলে পড়েছেন, কালো পতাকা, ইট-পাটকেলের মুখোমুখি হয়েছেন। আর তথাকথিত দুই বড় কাগজসহ কিছু কাগজ ও টিভি এ ঘটনাকে সরকারী দলের কাজ বলে চালাবার চেষ্টা করছে। এদের ব্যাপারে সেই কথা বলতে হয়, ছিঃ ছিঃ তোমরা এত খারাপ? যে মানুষ পেট্রোলবোমায় নিহত হয়েছে, দগ্ধ হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে, সে খালেদার জন্যে ফুলের তোড়া নিয়ে অপেক্ষা করবে না। এটি অনেকে বুঝেও না বোঝার ভান করে। এ বেহায়াপনাই জাতি লক্ষ্য করল হেজাবি নেত্রী (হেফাজত+ জামায়াত+বিএনপি) খালেদা জিয়ার মধ্যে। গত জানুয়ারি ২০১৫ থেকে এপ্রিলের প্রথম ক’দিন অর্থাৎ ৯২ দিনে অবরোধ+হরতালের কভারেজে তার লেলিয়ে দেয়া পেট্রোলবোমাবাজরা রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী দেড় শতাধিক মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, সহস্রাধিক মানুষকে পঙ্গু করেছে, খালেদা জিয়া এ জন্য ক্ষমা তো চানইনি (যদিও ক্ষমা চাইলেও মানুষ হত্যার অপরাধের দায়মুক্তি হয় না, হবে না), বরং ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেই বোমায় পোড়া মানুষের কাছে ভোট চাইতে পথে নেমেছেন গাড়ির বহর নিয়ে। পাকিস্তানী হানাদার মিলিটারি জান্তা যেমন একাত্তরে গণহত্যা চালিয়ে ৩০ লাখ মানুষ হত্যা করেছে, ৬ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম লুটে জীবনহানি ঘটিয়েছে, আজ পর্যন্ত তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চায়নি এবং যে মহাপাপ করেছে তার জন্য অনুতপ্তও নয় জঙ্গীরা। ঠিক খালেদা জিয়াও ৯২ দিনের হত্যাযজ্ঞ-ধ্বংসযজ্ঞের জন্য ক্ষমা চাননি, অনুতপ্তও নন। কারণ তিনি পাকিদেরই এজেন্ট, তাঁর মনোজগতও গড়ে উঠেছে সেভাবেই। তিনি এবং তাঁর পরিবার যে কারণে যে কোন অপকর্ম করতে পারে। তবে হ্যাঁ, অপকর্ম করার সময় দুঃখজনকভাবে তারা মুখে পবিত্র ইসলামের নাম ব্যবহার করে, যেমনটি করেছিল পাকিস্তানী মিলিটারি জান্তা ১৯৭১ সালে। ২০১৩ সালেও খালেদা জিয়া একই ঘটনা ঘটিয়েছিল। সেদিনও এমনিভাবে মানুষ হত্যা করেছিল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করেছিল। যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার সময় তিনি রীতিমতো জামায়াতের আমিরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। সেদিনও এমনিভাবে পবিত্র ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করেছেন। সবচেয়ে ন্যক্কারজনক ভূমিকায় নেমেছিল কিছু গণমাধ্যম। যেমন জামায়াতী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচারের রায় হলে খালেদারই দলীয় পত্রিকা আমার দেশ-এ সুপার ইমপোজ করে বলা হলো চাঁদে সাঈদীর মুখ দেখা গেছে অথচ এ সাঈদীকে সরকার ফাঁসি দিচ্ছে (যদিও ফাঁসি দিচ্ছে একাত্তরের হত্যা-ধর্ষণের অপরাধে যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনাল, সরকার নয়), বলে কিছু মানুষ দা-কুড়াল-শাবল নিয়ে রাজপথে নেমে পড়ল, বগুড়ায় তো রীতিমতো থানা আক্রমণ করে বসল। এমনকি ঐ পত্রিকাটিতে পবিত্র কাবা শরীফের গিলাপ হাতে সম্মানীয় খতিবদের ছবি ছেপে এটাও বলা হলো যে, খতিবগণ সাঈদীর ফাঁসি রোধে মানববন্ধন করেছেন (নাউজুবিল্লাহ)। মূলত বিষয়টি ছিল প্রথা অনুযায়ী কাবা শরীফের গিলাপ পরিবর্তনের ছবি। দ্বিতীয়ত, খালেদা তার ভয়ঙ্কর পেট্রোলবোমাবাজ শিবির-ছাত্রদল-যুবদল সন্ত্রাসীদের নামালেন নাশকতা সৃষ্টি করে, নারী নির্যাতন করে, আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট কর্মী সমর্থক এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষদের মেরে জ্বালিয়ে, বাড়িঘর থেকে তাড়িয়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পার্লামেন্ট নির্বাচন ঠেকাতে। তখন ৫৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পোড়ানো হয়, এমনকি প্রিসাইডিং অফিসারকে পর্যন্ত হত্যা করা হয়েছিল, কিন্তু নির্বাচন প্রতিরোধ করতে পারেনি, মুখে কালি মেখে ঘরে ফিরেছিলেন। নির্বাচন ঠেকাতে তো পারলেনই না, বরং গণতন্ত্র স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিশ্বাসী মানুষ তাকেই ঠেকিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছিল। সে সময় কওমী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের ঢাকায় আনিয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বরে বসিয়েছিল হেফাজত তেঁতুল হুজুরের নেতৃত্বে। আলেম নামধারী কিছু লোক ঢাকার বায়তুল মোকাররম, মতিঝিল, বিজয়নগর, বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ, এমনকি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও তার আশপাশের দোকানপাট জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছিল। বেলা ১১টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত তাদের অগ্নিসন্ত্রাস বায়তুল মোকাররম মার্কেটের পবিত্র কোরান ও হাদিসে রসুল (সা)-এর শত শত কপি পুড়িয়ে দিয়েছিল। এ ধ্বংসযজ্ঞে খালেদা জিয়া তার দলীয় নেতাকর্মীদের হেফাজতের জ্বালাও কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। টার্গেট ছিল রাতের মধ্যে ঢাকার সকল কাঠামো-অবকাঠামো কলাপ্্স করে পরদিন ভোরে বঙ্গভবন+গণভবন দখল করবে। ২০০৬-এ আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখে পতনের আগে সেনাবাহিনীকে ডেকে গলা ফাটিয়েও নিজের পক্ষে নামাতে পারেনি। এবার হেফাজত নামিয়ে স্বামী মিলিটারি জিয়ার মতো বঙ্গভবন দখল করবেন। তাও হলো না। শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপে উল্টো রাত তিনটার মধ্যেই শাপলা চত্বর পরিষ্কার হয়েছিল। খালেদার মুখে এবারও কালি পড়ল। অবশ্য সেদিনও কিছু গণমাধ্যম এবং বিদেশী সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তথাকথিত মানবাধিকার ব্যবসায়ী একবার বলল হাজার হাজার, আবার বলল আড়াই হাজার লোক মারা গেছে। কয়েকজন লোক মারা গেছে সত্য এবং একজন মানুষের অস্বাভাবিক মৃত্যুও কাম্য নয়। তাই বলে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বলাটা অবশ্যই দেশদ্রোহিতা। পরে তারা বলল ৬১ জন মারা গেছে। অর্থাৎ হাজার হাজার বা আড়াই হাজার থেকে ৬১ জনে নেমে আসে। এই ৬১ জনের নাম ঠিকানা প্রকাশ করতে বলা হলো। একটি তথাকথিত মানবাধিকার সংগঠন নাম প্রকাশ করল। তদন্তে দেখা গেল, তাতে একজনের নাম একাধিকবার দেখানো হয়েছে, জীবিত মানুষকে মৃত বলা হয়েছে বা এমন নাম ঠিকানাও দেয়া হয়েছে যার কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার একজন রিপোর্টার সময় নিয়ে তদন্ত করে তা দেখিয়ে দিয়েছেন। এবারও তাদের শয়তানি ধরা পড়ে যায়। তারপর এলো ৯২ দিনের পেট্রোলবোমা, এবার খালেদা বাড়ি ছেড়ে বাক্স-পেটরা নিয়ে গুলশানে দলীয় কার্যালয়ে উঠলেন। পণ করলেন যায় যাক প্রাণ, বোমা, পেট্রোলবোমা, গানপাউডারের বীভৎসতা যাই হোক, মহাজোট সরকারের পতন ঘটিয়ে তবেই ঘরে ফিরবেন। এবারও সেই সব সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেল নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে খালেদার গুলশান কার্যালয়ের সামনে স্থায়ী আসন গেড়ে বসল। কেউ কেউ ইনিয়ে বিনিয়ে খালেদাকে চ্যাম্পিয়ন বানানোর সেকি প্রাণান্তকর চেষ্টা, খালেদা বঙ্গভবন-গণভবন দখল করবেন এবং এ ভবন দুটি যেহেতু বিশাল এবং অনেক কক্ষ অনেক স্পেস, কষ্টের বিনিময়ে ইস্ট মিললেও মিলতে পারে। কিন্তু তাও হলো না, অবশেষে তারাও খালি হাতে খালেদার সঙ্গে ঘরে ফিরলেন। আমি আইনজ্ঞ বা সংবিধান বিশেষজ্ঞ নই, তবু আমার সাধারণ জ্ঞান বলে খালেদা যা যা করেছেন তার সবই রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক অপরাধ। পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ পুড়িয়ে মারা রাষ্ট্রদ্রোহিতা ছাড়া আর কী? একদিন হয়ত জনতার আদালতে এর জবাবদিহি করতে হবে। যে কারণে এখন যেখানে যাচ্ছে সেখানেই কালোপতাকার সম্মুখীন হচ্ছেন। খালেদা এতদিন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের দাবি যতবার বলেছেন, কিছু হেজাবীপন্থী মিডিয়া তারচেয়ে দশগুণ বলেছে। টক-শো ওয়ালারা বলেছে আরও বেশি অথচ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যেখানে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীরা কেউ প্রচারে নামছেন না, সেখানে খালেদা লাল শিপন শাড়ি পরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, রাজপথে গাড়িবহর নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবস্থা সৃষ্টি করছেন, এটা কি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড? এটা নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে হচ্ছে? এবার বুয়েটের (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) সাম্প্রতিক একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করতে চাই। যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসির ঘটনাকে বুয়েট শিক্ষক ড. জাহাঙ্গীর আলম ‘অবিচার’ বলে মন্তব্য করায় ছাত্ররা তাকে গালমন্দ করে। একজন শিক্ষককে গালমন্দ করা বা দুর্ব্যবহার করা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়, কিন্তু যে শিক্ষক ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীর পক্ষে কথা বলে সে শিক্ষক নয়, কিংবা যে ছাত্র বা সন্তান (বুয়েট ছাত্র) মুক্তিযুদ্ধে কামারুজ্জামান ও তার আলবদর বাহিনী বা তাদের প্রভু পাকি মিলিটারির হাতে স্বজন হারিয়েছে বা যে সন্তানের মা-বোন নির্যাতিত হয়েছে, সে সন্তানের পক্ষে ঐ মন্তব্যের পর শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ কি অস্বাভাবিক ঘটনা? যেমনটি ঘটেছে খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও। ৯২ দিন বোমা, পেট্রোলবোমা বা গানপাউডার দিয়ে পুড়িয়েছেন তাদের স্বজনরা তাকে দেখে ক্ষুব্ধ হবেন, কালোপতাকা দেখাবেন, এটি কি খুব অস্বাভাবিক ঘটনা? শত নির্যাতন হত্যা সত্ত্বেও জনগণ ক্ষুব্ধ হয়েছে যতখানি ততখানি প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। একজন জাতীয় নেতা-নেত্রী কালোপতাকা দেখবেন, এটা যেমন কাম্য নয়, তেমনি ঐ নেতা-নেত্রী যদি পেট্রোলবোমা দিয়ে মানুষ হত্যা-দগ্ধ করার জন্য দায়ী হয়, তখন তিনি আর জাতীয় নেতা বা নেত্রী থাকেন না, হয়ে যান খুনী নেতা বা নেত্রী, যেমন খালেদা জিয়ার নাম এখন বোমা ম্যাডাম। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে খালেদার কারণেই তার প্রার্থীদের ভোট পাবার কথা নয়। তিনি নির্যাতিত জনগণের কাছে ঘৃণিত ধিক্কৃত। তারপরও সতর্ক থাকতে হবে। বুয়েটে যেমন কামারুজ্জামানের ফাঁসি নিয়ে দেশদ্রোহী জাতিদ্রোহী মন্তব্য করার জন্য শিক্ষক ড. জাহাঙ্গীর আলমের কোন বিচার হয়নি, বিচার (?) হয়েছে ছাত্রলীগের নেতাদের-দু’জনকে আজীবনের জন্য এবং অপর দু’জনকে মেয়াদী বহিষ্কার করা হয়েছে। বুয়েট অপরাধীকে শাস্তি দেয়নি, দিয়েছে প্রতিবাদকারীকে। সতর্ক থাকার কথা এ জন্য বলছি যে, এখন সমাজ পাল্টে গেছে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কিংবা রাষ্ট্র নেতৃত্বদানে শেখ হাসিনার সাহস, প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা যেমন একটি নির্বাচনে জয়লাভের জন্য ইতিবাচক দিক, ঠিক তেমনি নির্বাচনে সম্পৃক্ত প্রশাসনের ভূমিকাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। বুয়েট প্রশাসন তার প্রমাণ। বুয়েটের মতো নির্বাচন প্রশাসনেরও রন্ধ্রে জামায়াত-শিবির-হেফাজত রয়েছে। তারা কিন্তু তাদের কাজ এক শ’ ভাগ করে, ভবিষ্যতেও করবে। কাজেই জামায়াত-হেফাজত-জঙ্গীবাদবিরোধীদের নিরপেক্ষ থাকার কোন সুযোগ নেই। এক কলামে পেট্রোলবোমায় মানুষ দগ্ধ করা শুরু হলে খালেদার উদ্দেশে বলেছিলামÑ ছিঃ ছিঃ তুমি এত খারাপ? খারাপ লোকরা এখনও খালেদাকে ঘিরে আছে। তারা নির্বাচনে হারলে বলবে কারচুপি হয়েছে, জিতলে ২০১৩-এর জুনে রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেট সিটি কর্পোরেশন এবং তার পরবর্তীতে গাজীপুর নির্বাচনের মতো অভিযোগ আনবে না (যদিও নির্বাচনের আগে আজকের মতো অভিযোগ উত্থাপন করেছিল) বরং বলবে জনগণ সরকারকে আর চায় না, অতএব পার্লামেন্ট নির্বাচন দাও। একটা কথা মনে রাখতে হবে, ব্যাভিচার, লুটপাট, চুরি-ডাকাতি, মিথ্যাচার (যা খালেদা ও তার পুত্র ফেরারি তারেকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য) রাষ্ট্র, সমাজ, ধর্মের কাছে যত বড় অধর্ম, ন্যায় নৈতিকতাবিরোধী বা অপরাধই হোক না কেন, ওদের কাছে তা ‘রাজনৈতিক কৌশল’। এ বিষয়টি এক মুহূর্তের জন্যও ভোলা যাবে না। মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্র যখন যুদ্ধাপরাধীর বিচার করছে, জাতিকে জাতির জীবনমান অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তখন নিরপেক্ষ থাকার কোন সুযোগ নেই। বরং জাতীয় অপরাধ। ঢাকা ॥ ২৪ এপ্রিল ২০১৫ লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
×