ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ পরিবারের ছয়জনসহ ৭ জনকে হত্যা করে তাহের ও ননী

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২৪ এপ্রিল ২০১৫

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ পরিবারের ছয়জনসহ ৭ জনকে হত্যা করে  তাহের ও ননী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেত্রকোনার দুই রাজাকার কমান্ডার ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের তৃতীয় সাক্ষী মোঃ মতিউর রহমান জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দীতে সাক্ষী জানান, তাহের ও ননী আমার পরিবারের ৬ জনসহ মোট ৭ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে। জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জবানবন্দীর জন্য ২৯ এপ্রিল দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে আদালত অবমাননার দায়ে ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানকে ট্রাইব্যুনালের দেয়া জরিমানা ও এজলাস কক্ষে দাঁড়িয়ে থাকার সাজার রায়ে উদ্বেগ প্রকাশ ও বিবৃতিদাতাদের মধ্যে ২৩ জনকে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য ২৯ এপ্রিল পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার আন্তর্জার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২ এ আদেশগুলো প্রদান করেছেন। নেত্রকোনার দুই রাজাকার কমান্ডার ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননীর বিরুদ্ধে তৃতীয় সাক্ষীর জবানবন্দীর পর জেরাও শেষ হয়েছে। ২৯ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষীর জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বৃহস্পতিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। সাক্ষীকে জবানবন্দী প্রদানে সহাযতা করেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল। প্রসিকিউটরের সাক্ষী মোঃ মতিউর রহমান তার জবানবন্দীতে বলেছেন, আমার নাম মোঃ মতিউর রহমান। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৫৭ বছর। আমার ঠিকানা গ্রাম-লাউফা, থানা-বারহাট্টা, জেলা-নেত্রকোনা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল আনুমানিক ১৩-১৪ বছর। তখন আমি চতুর্থ শ্র্রেণীর ছাত্র। ১৯৭১ সালের ১৯ অক্টোবর দুটা আড়াইটার দিকে রাজাকার কমান্ডার আসামি ওবায়দুল হক তাহের এবং রাজাকার আতাউর রহমান ননী প্রায় ১০০-১৫০ জন পাকিস্তানী আর্মি ও রাজাকার নিয়ে আমাদের গ্রাম আক্রমণ করে। রাজাকাররা আমাদের গ্রামে ঢুকে মশরব আলীকে আটক করে। আটক করার পর তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। এর পর আমার চাচা জাফর আলী, চাচাত ভাই আলাউদ্দিন, ভগ্নিপতি আব্দুল জব্বার ওরফে মন্টু মিয়া, অপর চাচা জাহেদ আলীকে আটক করে সবাইকে নির্যাতন করা হয়। আটককৃতদের নিয়ে যাওয়ার সময় সাঁকো পাড় হওয়ার সময় চাচা রুজু আলী ও জাফর আলী পালানোর চেষ্টা করলে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। এর পর অবশিষ্টদের নিয়ে ঠাকুরন রাজাকার ক্যাম্পে চলে যায়। সেখানে নেয়ার পর তাদের ওপর নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায়ে আটককৃতদের ঠাকুরকোণা ব্রিজের সামনে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। আদালত অবমাননা ॥ আদালত অবমাননার দায়ে ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানকে ট্রাইব্যুনালের দেয়া জরিমানা ও এজলাস কক্ষে দাঁড়িয়ে থাকার সাজার রায়ে উদ্বেগ প্রকাশ ও বিবৃতিদাতাদের মধ্যে ২৩ নাগরিককে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য ২৯ এপ্রিল পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেছে ট্রাইব্যুনাল। চেযারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ বৃহস্পতিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মোঃ মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলাম।
×